BN/Prabhupada 0454 - যদি আমরা আমাদের দিব্য জ্ঞানের বিকাশ না করি, তাহলে আমাদের অনেক ঝুঁকিতে আছি

Revision as of 10:07, 23 December 2021 by Soham (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0454 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1977 Category:BN-Quotes - L...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture -- Bombay, April 1, 1977

প্রভুপাদ: তো সেই শ্লোকটি কী? দিব্যজ্ঞান হৃদে প্রকাশিত। পাঠ করুন। ( ভারতীয়রা পুনরাবৃত্তি করুন ) তার আগে।

ভারতীয় অতিথিরা: প্রেম-ভক্তি যাঁহা হৈতে, অবিদ্যা-বিনাশ যাতে, দিব্য-জ্ঞান হৃদে প্রকাশিত।

প্রভুপাদ: সুতরাং প্রয়োজনীয়তা হল প্রেম-ভক্তি। প্রেম-ভক্তি যাঁহা হৈতে, অবিদ্যা-বিনাশ যাতে, দিব্য-জ্ঞান। সুতরাং সেই দিব্য-জ্ঞান কী? দিব্য অর্থাৎ অলৌকিক, ভৌতিক নয়। তপো দিব্যম (শ্রীমদ্ভাগবতম ৫।৫।১)। দিব্যম অর্থাৎ, আমরা পদার্থ এবং আত্মার সংমিশ্রণ। সেই চেতনা দিব্য, অলৌকিক। অপরেয়মিতস্ত্ব বিদ্ধি মে প্রকৃতিং পরা (শ্রীমগভাগবতগীতা ৭।৫)। তা হল পরা প্রকৃতি, উচ্চতর। যদি সেই উচ্চতর ব্যক্তিত্ব থাকেন... এবং সেই উচ্চতর ব্যক্তিত্বকে বোঝার জন্য আমাদের সাধারণ জ্ঞানের নয়, উন্নত জ্ঞানের প্রয়োজন। দিব্যজ্ঞান হৃদে প্রকাশিত। সুতরাং গুরুর দায়িত্ব, সেই দিব্য-জ্ঞানকে জাগ্রত করা। দিব্য-জ্ঞান। এবং কারণ গুরু দিব্য-জ্ঞানকে আলোকিত করেন, তাই তাঁর উপাসনা করা হয়। এটাই প্রয়োজন। এই আধুনিক... আধুনিক বা চিরকাল; এই হল মায়া। সেই দিব্য-জ্ঞান কখনই হয় না, আমি বলতে চাইছি, প্রতিভাসিত । তাঁদের অদিব্য-জ্ঞানের অন্ধকারে রাখা হয়ে। অদিব্য জ্ঞান অর্থাৎ "আমি এই দেহ"। "আমি ভারতীয়," "আমি আমেরিকান," "আমি হিন্দু," "আমি মুসলমান," এটি অদিব্য জ্ঞান। দেহাত্ম-বুদ্ধিঃ। যস্য়াত্মবুদ্ধিঃ কুণপে ত্রি (শ্রীমদ্ভাগবতম ১০।৮৪।১৩) আমি এই শরীর নই।

সুতরাং দিব্য-জ্ঞানের সূচনা তখন হয় যখন আমরা বোঝার চেষ্টা করি, যে "আমি এই দেহ নই। আমি উন্নত উপাদান, আমি আত্মা। এটি নিকৃষ্টমানের। তাহলে কেন আমি এই নিকৃষ্ট জ্ঞানে থাকব? " আমাদের নিকৃষ্টমানের...মধ্যে থাকা উচিত নয় নিকৃষ্ট জ্ঞান মানে অন্ধকার। তমসি মা। বৈদিক নির্দেশ হল "নিকৃষ্ট জ্ঞানে থাকবেন না।" জ্যোতির গমঃ " উন্নত জ্ঞানে আসুন।" সুতরাং গুরুর উপাসনা মানে কারণ তিনি আমাদেরকে উচ্চতর জ্ঞান দান করেন। এই জ্ঞান নয় - কীভাবে খাবেন, কীভাবে ঘুমবেন, যৌন জীবন কীভাবে নির্বাহ করবেন এবং কীভাবে সুরক্ষা করবেন। সাধারণত, রাজনৈতিক নেতারা, সামাজিক নেতারা, তারা এই জ্ঞান দিয়ে থাকেন - কীভাবে খাবেন, কীভাবে ঘুমবেন, কীভাবে যৌনসহবাস করবেন, কীভাবে সুরক্ষা করবেন। একজন গুরুর এই সমস্ত বিষয়ের কোনও প্রয়োজন নেই। তিনি দিব্য-জ্ঞান, উচ্চতর জ্ঞান। সেটা প্রয়োজন। জীবনের এই মানব রূপটি সেই দিব্য-জ্ঞান হৃদে প্রকাশিতকে জাগ্রত করার একটি সুযোগ। এবং যদি তাকে সেই দিব্য জ্ঞান সম্পর্কে অন্ধকারে রাখা হয়, যদি তাকে কেবল প্রশিক্ষিত করা হয়, কীভাবে খাবেন, কীভাবে ঘুমাবেন, কীভাবে যৌন সহবাস করবেন এবং সুরক্ষা করবেন, তাহলে তার জীবন অপব্যয়িত যাবে। সেটি একটি বড় ক্ষতি। মৃত্যুসংসার বর্ত্মনি। অপ্রাপ্য মাম্‌ নিবর্তন্তে মৃত্যু-সংসার-বর্ত্মনি (শ্রীমদ্ভগবতগীতা ৯।৩)। আমাদের দিব্য-জ্ঞান জাগ্রত না করা হলে জীবন খুব ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের সর্বদা এটি মনে রাখা উচিত। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ জীবন - আবারও জন্ম এবং মৃত্যুর ঢেউয়ে নিক্ষিপ্ত, আমরা জানি না আমি কোথায় যাচ্ছি। খুব মারাত্মক। এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত হল দিব্য-জ্ঞান। এটি সাধারণ জ্ঞান নয়। প্রত্যেকের এই দিব্য জ্ঞান বোঝার চেষ্টা করা উচিত। দাইবিম প্রাকৃতিম আশ্রিতম। সুতরাং যে এই দিব্য-জন্নে আগ্রহী, তাকে দৈবীম্‌ প্রকৃতিম্‌ আশ্রিতম্‌ বলা হয়। দৈবী থেকে, দিব্য আসে, সংস্কৃত শব্দ। সংস্কৃত শব্দ, দৈবী থেকে, দিব্য বিশেষণ।

স মহাত্মনস্তু মাম্‌ পার্থ দৈবীম্‌ প্রকৃতিম্‌ আশ্রিতাঃ। (শ্রীমদ্ভগবগীতা ৯।১৩)। যিনি এই দিব্য-জ্ঞান প্রক্রিয়ায় নিয়ে গেছেন, তিনি মহাত্মা। কীভাবে খাবেন, কীভাবে ঘুমাবেন, কীভাবে যৌন মিলন করবেন সে সম্পর্কে জ্ঞান পাওয়ার জন্য মহাত্মা মুদ্রাঙ্কণ দিয়ে তৈরি করা হয় না। শাস্ত্রে সেই সংজ্ঞাটি নেই। স মহাত্মা সুদুর্লভঃ।

বহুনাম্‌ জন্মনাম্‌ অন্তে
জ্ঞানবান মাম্‌ প্রপদ্যন্তে
বাসুদেবঃ সর্বম্ ইতি
স মহাত্মা ...
(শ্রীমদ্ভগবগীতা ৭।১৯)

যিনি এই দিব্য-জ্ঞান পেয়েছেন, বাসুদেবঃ সর্বম্ ইতি সা মহাত্মা, তিনি মহাত্মা। তবে এটি খুব, খুব বিরল। নইলে এ জাতীয় মহাত্মা রাস্তায় তারা ঘুরে বেড়াছেন। এটাই তাদের কাজ। সুতরাং আপনার সর্বদা এই শব্দটি মনে রাখা উচিত, দিব্য-জ্ঞান হৃদে প্রকাশিত। এবং যেহেতু আধ্যাত্মিক গুরু দিব্য-জ্ঞানকে আলোকিত করেন, একজন তার প্রতি বাধ্যতা অনুভব করে। যস্য প্রসাদাদ্‌ ভগবৎ প্রসাদো যস্য প্রসাদান্‌ ন গতি কুতোহপি। তাই এই গুরু-পূজা অপরিহার্য। ভগবানের উপাসনা যেমন অপরিহার্য ... এটি তুচ্ছ উপাসনা নয়। এটি দিব্য-জ্ঞান আলোকিত করার প্রক্রিয়া।

অনেক ধন্যবাদ।

ভক্তগণ: জয় প্রভুপাদ।