BN/Prabhupada 1003 - ভগবানের কাছে এসে কেউ জাগতিক বস্তু চাইছে, ভগবান তো চিন্ময়

Revision as of 08:04, 1 January 2022 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


750713 - Conversation B - Philadelphia

স্যন্ডি নিক্সনঃ ভগবানকে জানার জন্য কি বিভিন্ন পন্থা রয়েছে?

প্রভুপাদঃ না। এর থেকে ভিন্ন কিছু নেই।

স্যন্ডি নিক্সনঃ আমি বলতে চাচ্ছি আরও কোন আধ্যাত্মিক পথ... সমস্ত আধ্যাত্মিক পথ কি একই পরিসমাপ্তির দিকে পরিচালিত করে?

প্রভুপাদঃ আধ্যাত্মিক পথকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। আধ্যাত্মিক নয়, প্রকৃত আধ্যাত্মিক, মিশ্রিত আধ্যাত্মিক। ঠিক যেমন, "ভগবান, আমাদের প্রতিদিনের রুটি প্রদান করুন।" এটি মিশ্রিত আধ্যাত্মিক। ভগবান হচ্ছেন চিন্ময়, কিন্তু একজন ভগবানের কাছে গিয়ে জাগতিক লাভ চাচ্ছে। তাই এটি মিশ্রিত, জড় এবং চিন্ময়। সুতরাং চারটি শ্রেণী রয়েছে। সাধারণভাবে বলা যায় যেমন কর্মী, সকাম কর্মী, তারা জাগতিক সুফল লাভের আশায় কর্ম করে। তাদের বলে হয় কর্মী। ঠিক যেমন আপনি দেখবেন, সব মানুষ, তারা সারা দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করছে, গাড়ি চালাচ্ছে (গাড়ির শব্দ করে) এই রাস্তায়, ঐ রাস্তায়। উদ্দেশ্য হচ্ছে কিভাবে কিছু অর্থ পাওয়া যায়। এটিকে বলে কর্মী। এরপর জ্ঞানী। জ্ঞানী মানে সে জানে যে "আমি কঠোর পরিশ্রম করছি। কেন? পশু, পাখি, হাতী, বিশাল বিশাল প্রাণী- আট লক্ষ প্রজাতির বিভিন্ন প্রাণী- তারা তো করছে না। তাদের কোন কাজ নেই। তাদের কোন পেশা নেই। তারা কিভাবে খাচ্ছে? তাই অপ্রয়োজনে কেন আমি এতো পরিশ্রম করব? এখন আমাকে জানতে হবে জীবনের প্রকৃত সমস্যা কি।" এভাবে তারা বুঝতে পারে যে জীবনের প্রকৃত সমস্যা হচ্ছে জন্ম, মৃত্যু, জরা, ব্যাধি। আর তারা তা সমাধানের চেষ্টা করে, কিভাবে অমর হওয়া যায়। তখন তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে "যদি আমি ভগবানের অস্তিত্বের সাথে মিশে যেতে পারি, তাহলে আমি অমর হতে পারব অথবা জন্ম, মৃত্যু, জরা, ব্যাধির হাত থেকে মুক্তি লাভ করব।" এটিকে বলে জ্ঞানী। আর কিছু রয়েছে যোগী। তাঁরা কিছু আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জন করতে চায় সে কিভাবে আশ্চর্যজনক কিছু খেলা দেখাতে পারে সেটা প্রদর্শন করার জন্য। একজন যোগী খুব ছোট হতে পারে। আপনি যদি তাঁকে একটি ঘরে আটকে রাখেন, সে বেরিয়ে যেতে পারবে। আপনি তালা মেরে রাখুন, সে বেরিয়ে আসতে পারবে। যদি ছোট্ট একটু জায়গা থাকে, সে বেরিয়ে আসতে পারবে। এটিকে বলে অণিমা। সে আকাশে উড়তে পারে,আকাশে ভাসতে পারে। এটিকে বলে লঘিমা। এইভাবে কেউ যদি যাদু দেখাতে পারে, তাহলে তৎক্ষণাৎ সে বিস্ময়কর মানুষ রূপে গৃহীত হবে। তাই যোগী, তাঁরা... আধুনিক যোগীরা, তারা শুধু কিছু শারীরিক কসরত দেখায়, কিন্তু তাদের আসলে কোন ক্ষমতা নেই। আমি এই ধরণের তৃতীয় শ্রেণীর যোগীর কথা বলছি না। প্রকৃত যোগী মানে তাঁর কিছু শক্তি আছে। এটি জাগতিক শক্তি। তাই যোগীরাও এই ক্ষমতা চায়। আর জ্ঞানীরাও কর্মীদের ন্যায় গাধার মতো অপ্রয়োজনীয় পরিশ্রম করা থেকে মুক্তি চায়। আর কর্মীরা চায় জাগতিক লাভ। তাই তারা চায়, প্রত্যেকেই। কিন্তু ভক্তরা, বৈষ্ণবরা, তাঁরা কোন কিছু চান না। তাঁরা ভগবানকে ভালবেসে সেবা করতে চান। ঠিক যেমন একজন মা তার সন্তানকে ভালোবাসেন। এখানে লাভের কোন প্রশ্ন নেই। স্নেহের বশে তিনি ভালোবাসেন। আপনি যখন ভগবানকে ভালোবাসার সেই স্তরে পৌঁছাবেন, এটিই সিদ্ধি। সুতরাং এই চারটি প্রক্রিয়া, কর্মী, জ্ঞানী, যোগী আর ভক্ত, এই চারটি উপায়ের মধ্যে, যদি আপনি ভগবানকে জানতে চান, তাহলে আপনাকে ভক্তিযোগ অবলম্বন করতে হবে। শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় এটি বলা হয়েছে, ভক্ত্যা মামভিজানাতি (ভগবদ্গীতা ১৮.৫৫)। "শুধুমাত্র ভক্তিযোগের মাধ্যমে কেউ আমাকে ভগবানরূপে জানতে পারে।" তিনি কখনোই অন্য কোন উপায়ের কথা বলেননি, না। শুধু ভক্তির কথা। সুতরাং আপনি যদি ভগবানকে জানতে এবং তাঁকে ভালবাসতে আগ্রহী হন, তাহলে আপনাকে এই ভক্তিযোগের পন্থা অবলম্বন করতে হবে। আর অন্য কোন উপায়ই আপনাকে সাহায্য করতে পারবে না।