BN/Prabhupada 1064 - পরমেশ্বর ভগবান সকল জীবের হৃদ্দেশে অবস্থান করেন: Difference between revisions

(Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 1064 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1966 Category:BN-Quotes - L...")
 
No edit summary
 
Line 10: Line 10:
[[Category:Bengali Language]]
[[Category:Bengali Language]]
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
{{1080 videos navigation - All Languages|Bengali|BN/Prabhupada 1063 - পূর্বকৃত কর্মের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া থেকে আমাদের মুক্তি দাও|1063|BN/Prabhupada 1065 - সর্ব প্রথম জানতে হবে যে সে এই জড় দেহ নয়|1065}}
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
<div class="center">
<div class="center">
Line 18: Line 21:


<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
{{youtube_right|DeeccJeN26Y|The Lord Lives Within the Core of Heart in Every Living Being - Prabhupāda 1064}}
{{youtube_right|DeeccJeN26Y|পরমেশ্বর ভগবান সকল জীবের হৃদ্দেশে অবস্থান করেন<br/> - Prabhupāda 1064}}
<!-- END VIDEO LINK -->
<!-- END VIDEO LINK -->


<!-- BEGIN AUDIO LINK -->
<!-- BEGIN AUDIO LINK -->
<mp3player>File:660219BG-NEW_YORK_clip08.mp3</mp3player>
<mp3player>https://s3.amazonaws.com/vanipedia/clip/660219BG-NEW_YORK_clip08.mp3</mp3player>
<!-- END AUDIO LINK -->
<!-- END AUDIO LINK -->


Line 30: Line 33:


<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT -->
<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT -->
'''Hindi'''
পরমেশ্বর ভগবান সকল জীবের হৃদ্দেশে অবস্থান করেন পরম চেতনা, যা ভগবদ্গীতায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যে অধ্যায়ে ঈশ্বর ও জীবের পার্থক্য ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ক্ষেত্র-ক্ষেত্রজ্ঞ। ক্ষেত্রজ্ঞের ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে ভগবানও ক্ষেত্রজ্ঞ অর্থাৎ চেতন, এবং জীবসমূহ, বা জীব তারাও চেতন। কিন্তু পার্থক্য এই যে জীব কেবল তার নিজের দেহটি সম্পর্কে সচেতন, কিন্তু ভগবান সমস্ত দেহ সম্বন্ধেই সচেতন। ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি। ([[Vanisource:BG 18.61 (1972)|ভ. গী. ১৮/৬১]])  
परम चेतना, यह भगवद्- गीता में उल्लेख किया जाएगा उस अध्याय में, जहॉ जीव और ईश्वर क बीच का अंतर समझाया गया है । क्षेत्र -क्षेत्र-ज्ञ । यह क्षेत्र-ज्ञ समझाया गया है, कि भगवान भी क्षेत्र-ज्ञ या चेतन हैं, और जीव, वे भी चेतन हैं । लेकिन अंतर यह है कि जीव अपने सीमित शरीर के प्रति सचेत रहता है, लेकिन भगवान समस्त शरीरों के प्रति सचेत रहते हैं । ईश्वर: सर्व भूतानाम् ह्द देशे अर्जुन तिष्‌थटि ([[Vanisource:BG 18.61|भ गी १८।६१]])


भगवान प्रत्येक जीव के ह्दय में वास करने वाले हैं, अतएव वे जीवविशेष की मानसिक गतिशीलता से परिचित रहते हैं । हमें यह नहीं भूलना चाहिए । यह भी बताया गया है कि परमात्मा, या भगवान ईश्वर के रूप में प्रत्येक ह्रदय में वास कर रहे हैं, नियन्ता के रूप में वे निर्देशित करते रहते हैं । वे निर्देशित कर रहे हैं । सर्वस्य चाहं ह्द संन्निविष्ठ: ([[Vanisource:BG 15.15|भ गी १५।१५]]) हर किसी के ह्दय में वे वास करते हैं, और वे निर्देशित करते रहते हैं जैसा जीव चाहता है जीव भूल जाता है कि उसे क्या करना है । पहले तो वह किसी एक विधि से कर्म करने का संकल्प करता है, लेकिन फिर वह अपने ही कर्म के पाप-पुण्य में फॅस जाता है । लेकिन जब वह एक शरीर को त्याग कर दूसरा शरीर ग्रहण करता है...जिस प्रकार हम वस्त्र उतारते तथा पहनते रहते हैं इसी प्रकार, यह उल्लेख किया गया है भगवद्- गीता में कि वासाम्सि जीर्णानि यथा विहाय ([[Vanisource:BG 2.22|भ गी २।२२]]) । जैसे हम वस्त्र बदलते रहते हैं, इसी प्रकार जीव, वे भी शरीर बदलते रहते हैं, आत्मा का देहान्तरण, उसके विगत (पूर्वकृत) कर्मों का फल भोगना पडता है । ये कार्यकलाप तभी बदल सकते हैं जब जीव सतोगुण में स्थित हो, स्थिर बुद्धि, और वह समझे कि उसे कौन से कर्म करने चाहिए, अौर अगर वह ऐसा करता है, तो उसके विगत (पूर्वकृत) कर्मों के सारे फल बदले जा सकते हैं । फलस्वरूप कर्म शाश्वत नहीं है ।
পরমেশ্বর ভগবান সকল জীবের হৃদয়াভ্যন্তরে অবস্থান করেন, যেহেতু তিনি সকলের হৃদয়ে অবস্থান করেন, তাই তিনি সকলের অন্তরতম প্রদেশের কথা জানেন। এই কথা আমাদের ভুললে চলবে না। এই সম্বন্ধে আরও ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, পরম পুরুষোত্তম ভগবান পরমাত্মারূপে সর্বজীবের অন্তরে অধিষ্ঠিত, নিয়ন্তা হিসাবে তিনিই তাদের পরিচালনা করেন। তিনি ‍পরিচালনা করেন। সর্বস্য চাহং হৃদি সন্নিবিষ্টো ([[Vanisource:BG 15.15 (1972)|ভ. গী. ১৫/১৫]]) । সকলের হৃদয়ে অবস্থান করে জীবের বাসনা অনুযায়ী তিনি পরিচালনা করেন। মোহাচ্ছন্ন হয়ে জীব তার কর্তব্যকর্ম ভুলে যায়। প্রথমত তার স্বাধীন ইচ্ছার বশবর্তী হয়ে সে কোন কিছু করার সংকল্প করে, এবং তারপর সে নিজের কর্মের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার দ্বারা আবদ্ধ হয়ে পড়ে। সে এক দেহ পরিত্যাগ করে আর এক দেহ ধারণ করে- যেমন আমরা পুরাতন কাপড় ফেলে দিয়ে নতুন কাপড় পরিধান করি। অনুরূপভাবে, ভগবদ্গীতায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে- বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায় ([[Vanisource:BG 2.22 (1972)|ভ. গী. ২/২২]])। যেমন আমরা পুরাতন কাপড় ফেলে দিয়ে নতুন কাপড় পরি। অনুরূপ ভাবে জীবও ভিন্ন ভিন্ন দেহ পরিবর্তন করে, এভাবে পূর্বকৃত কর্ম ফলস্বরূপ আত্মা এক দেহ থেকে আর এক দেহে দেহান্তরিত হয়। জীব যখন সত্ত্বগুণে অধিষ্ঠিত হয় তখনই এই কার্যকলাপ পরিবর্তন করা যায়, স্থীর বুদ্ধি, এবং তার কর্ত্তব্য কর্ম সম্পর্কে সচেতন হয়। এবং সেই অনুযায়ী কর্ম করে, তখনই সে তার পূর্বকৃত কর্ম বন্ধন থেকে মুক্ত হয়। এভাবে আমরা দেখতে পাই যে কর্ম নিত্য নয়। চারটির মধ্যে পাঁচটি তত্ত্ব -ঈশ্বর, জীব, প্রকৃতি, কাল এবং কর্ম- চারটি তত্ত্ব নিত্য, কিন্তু কর্ম অনিত্য।


चार में से पांच तत्व - ईश्वर, जीव, प्रकृति, काल, और कर्म - ये चार शाश्वत हैं, लकिन कर्म, कर्म शाश्वत नहीं है । अब परम चेतन ईश्वर, अंतर परम चेतन ईश्वर अौर और जीव के, इस मामले में, इस तरह से है । चेतना, भगवान और जीव की, दोनों की चेतनाऍ दिव्य है । एसा नहीं है कि यह चेतना पदार्थ के संयोग से उत्पन्न नहीं होती है । एसा सोचना भ्रान्तिमूलक है । यह सिद्धांत कि चेतना भौतिक संयोग की किन्हीं परिस्थितियों से उत्पन्न होती है भगवद्- गीता स्वीकार नहीं करता है । वे एसा नहीं कर सकते । यह चेतना भौतिक परिस्थितयों के अावरण के कारण विकृत रूप से प्रतिबिम्बित हो सकती है, जैसे रंगीन कॉच से परावर्तित प्रकाश उसी रंग का प्रतीत होता है । इसी तरह, भगवान की चेतना, भौतिक्ता से प्रभावित नहीं होती है । भगवान श्री कृष्ण कहते हैं, मयाध्यक्षेण प्रकृति: ([[Vanisource:BG 9.10|भ गी ९।१०]]) । जब वे इस भौतिक विश्व में अवतरित होते हैं तो उनकी चेतना पर भौतिक प्रभाव नहीं पडता । अगर उनकी चेतना भौतिक्ता से प्रभावित होती, तो वे दिव्य विषयों के सम्बन्ध में बोलने के अधिकारी न होते भगवद्-गीता में । कोई दिव्य जगत के विषय में कुछ नहीं कह सकता भौतिक कलमष ग्रस्त चेतना से मुक्त हुए बिना । तो भगवान भौतिक दृष्टि से कलुषित नहीं हैं । लेकिन हमारी चेतना, अभी, भौतिक कलमष ग्रस्त है । तो, भगवद्- गीता शिक्षा देती है, हमें इस कलुषित चेतना को शुद्ध करना है, और उस शुद्ध चेतना में, कर्म किए जाने चाहिए । तभी हम सुखी हो सकेंगे । हम बन्द नहीं कर सकते हैं । हम अपने कार्यों को बन्द नहीं कर सकते हैं । कार्यों को शुद्ध करना है । और यह शुद्ध कर्म भक्ति कहलाते हैं । भक्ति में कर्म, सामान्य कर्म प्रतीत होते हैं, किन्तु वे कलुषित नहीं होते हैं । वे शुद्ध कर्म हैं । तो एक अज्ञानी व्यक्ति भक्त को सामान्य व्यक्ति की भॉति कर्म करते देखता है, लेकिन एसा मुर्ख, वह नहीं जानता है कि भक्त या भगवान के कर्म, वे अशुद्ध चेतना या पदार्थ से कलुषित नहीं होते, तीन गुणों की अशुद्धता, प्रकृति के गुण, लेकिन दिव्य चेतना । तो हमारी चेतना भौतिक कल्मष ग्रस्त है, यह हमें पता होना चाहिए।
এখন চেতন ঈশ্বর, পরম চেতন ঈশ্বর, পরম চেতন ঈশ্বর বা পরমেশ্বর, এবং জীব এর মধ্যে পার্থক্য এমতাবস্থায় এই রকম। চেতনা, ভগবান এবং জীবের, উভয়ই অপ্রাকৃত। এমন নয় যে জড় বস্তুর সংস্পর্শে আসার ফলে জীবের চেতনার বিকাশ হয়। এই ধারণাটি ভ্রান্ত। কোন বিশেষ প্রাকৃতিক পরিবেশে জড়ের মধ্য থেকে চেতনের উদ্ভব হয়। সেই কথা গীতায় স্বীকার করা হয়নি। তারা এইরকম করতে পারে না। জড়া প্রকৃতির প্রভাবে চেতনার বিকৃত প্রতিফলন হতে পারে, এবং তা হচ্ছে রঙিন কাঁচের মাধ্যমে প্রতিফলিত রঙিন আলোকের মতো। কিন্তু পরমেশ্বরের চেতনা জড়া প্রকৃতির দ্বারা প্রভাবিত বা কলুষিত হয় না। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, ময়াধ্যক্ষেণ প্রকৃতিঃ ([[Vanisource:BG 9.10 (1972)|ভ. গী. ৯/১০]]) তিনি যখন এই জড় জগতে অবতরণ করেন, তখন তাঁর চেতনা জড়া প্রকৃতির দ্বারা প্রভাবান্বিত হয় না। তাই যদি হত, তবে তিনি পরম তত্ত্বজ্ঞান সমন্বিত ভগবদ্গীতার জ্ঞান দান করতে পারতেন না। কেউ অপ্রাকৃত জগৎ সম্বন্ধে কিছু ব্যাক্ত করতে পারেন না, জড়া প্রকৃতির কলুষতা থেকে মুক্ত না হয়ে। সুতরাং পরমেশ্বর ভগবান জড়া প্রকৃতির দ্বারা কলুষিত ছিলেন না। কিন্তু আমাদের চেতনা এখন জড়া প্রকৃতির দ্বারা কলুষিত। তাই ভগবদ্গীতার মাধ্যমে ভগবান আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, আমাদের এই কলুষিত চেতনাকে পবিত্র করতে হবে। সেই কলুষ মুক্ত চেতনা নিয়ে কর্ম করতে হবে। তাহাই আমাদেরকে সুখী করবে। আমরা বন্ধ করতে পারি না। আমরা কর্ম করা বন্ধ করতে পারি না। কর্মকে পবিত্র করতে হবে। এবং এই পবিত্র কর্মেরই নাম ভক্তি। আপাতদৃষ্টিতে ভক্তিকে সাধারণ কর্মের মতো মনে হতে পারে, কিন্তু এগুলো কলুষিত কর্ম নয়, এগুলো পবিত্র কর্ম। ভগবানের ভক্তকে দেখে একজন মূর্খ লোক মনে করতে পারে যে, তিনি সাধারণ মানুষের মতই কাজ করে চলেছেন, কিন্তু সেটি তার নির্বুদ্ধিতা। সে ভগবদ্ভক্ত এবং পরমেশ্বর ভগবানের কার্য কলাপ বুঝতে পারে না, সে গুলো জড় চেতনাময় বস্তু দ্বারা কলুষিত নয়, সেই সমস্তই ত্রিগুণাতীত। সুতরাং আমাদের জানা উচিত, আমাদের চেতনা এখন জড় কলুষিত।  
 
'''Bengali'''
পরম চৈতন্য, যা ভগবদ্গীতায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যে অধ্যায়ে ঈশ্বর ও জীবের পার্থক্য ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ক্ষেত্র-ক্ষেত্রজ্ঞ। ক্ষেত্রজ্ঞের ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে ভগবানও ক্ষেত্রজ্ঞ অর্থাৎ চেতন, এবং জীবসমূহ, বা জীব তারাও চেতন। কিন্তু পার্থক্য এই যে জীব কেবল তার নিজের দেহটি সম্পর্কে সচেতন, কিন্তু ভগবান সমস্ত দেহ সম্বন্ধেই সচেতন। ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি।(ভ. গী. ১৮/৬১) পরমেশ্বর ভগবান সকল জীবের হৃদয়াভ্যন্তরে অবস্থান করেন, যেহেতু তিনি সকলের হৃদয়ে অবস্থান করেন, তাই তিনি সকলের অন্তরতম প্রদেশের কথা জানেন। এই কথা আমাদের ভুললে চলবেনা। এই সম্বন্ধে আরও ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, পরম পুরুষোত্তম ভগবান পরমাত্মারূপে সর্বজীবের অন্তরে অধিষ্ঠিত, নিয়ন্তা হিসাবে তিনিই তাদের পরিচালনা করেন। তিনি ‍পরিচালনা করেন। সর্বস্য চাহং হৃদি সন্নিবিষ্টো(ভ. গী. ১৫/১৫) । সকলের হৃদয়ে অবস্থান করে জীবের বাসনা অনুযায়ী তিনি পরিচালনা করেন। মোহাচ্ছন্ন হয়ে জীব তার কর্তব্যকর্ম ভুলে যায়। প্রথমত তার স্বাধীন ইচ্ছার বশবর্তী হয়ে সে কোন কিছু করার সংকল্প করে, এবং তারপর সে নিজের কর্মের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার দ্বারা আবদ্ধ হয়ে পড়ে। সে এক দেহ পরিত্যাগ করে আর এক দেহ ধারণ করে- যেমন আমরা পুরাতন কাপড় ফেলে দিয়ে নতুন কাপড় পরিধান করি। অনুরূপভাবে, ভগবদ্গীতায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে- বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায়(ভ. গী. ২/২২)। যেমন আমরা পুরাতন কাপড় ফেলে দিয়ে নতুন কাপড় পরি। অনুরূপ ভাবে জীবও ভিন্ন ভিন্ন দেহ পরিবর্তন করে, এভাবে পূর্বকৃত কর্ম ফলস্বরূপ আত্মা এক দেহ থেকে আর এক দেহে দেহান্তরিত হয়। জীব যখন সত্ত্বগুণে অধিষ্ঠিত হয়ে প্রকৃতিস্থ হয়, সদ্বিবেচনা স্তরে থাকে। এবং তার কর্ত্তব্য কর্ম সম্পর্কে সচেতন হয়। এবং সেই অনুযায়ী কর্ম করে, তখনই সে তার পূর্বকৃত কর্ম বন্ধন থেকে মুক্ত হয়। এভাবে আমরা দেখতে পাই যে কর্ম নিত্য নয়। অন্য বিষয়, পাঁচটি( ঈশ্বর, জীব, প্রকৃতি, কাল ও কর্ম) বিষয়বস্তুর মধ্যে চারটি চারটি তত্ত্ব নিত্য, কর্ম অনিত্য। এখন চেতন ঈশ্বর, পরম চৈতন্য ঈশ্বর, পরম চৈতন্য ঈশ্বর বা পরমেশ্বর, এবং জীব এর মধ্যে পার্থক্য এমতাবস্থায় এই রকম। ঈশ্বরের পরম চৈতন্য এবং জীবের অনু চৈতন্য, উভয়ই অপ্রাকৃত। এমন নয় যে জড় বস্তুর সংস্পর্শে আসার ফলে জীবের চেতনার বিকাশ হয়। এই ধারণাটি ভ্রান্ত। কোন বিশেষ প্রাকৃতিক পরিবেশে জড়ের মধ্য থেকে চেতনের উদ্ভব হয়। সেই কথা গীতায় স্বীকার করা হয়নি। তারা পারে না। জড়া প্রকৃতির প্রভাবে চেতনার বিকৃত প্রতিফলন হতে পারে, এবং তা হচ্ছে রঙিন কাঁচের মাধ্যমে প্রতিফলিত রঙিন আলোকের মতো। কিন্তু পরমেশ্বরের চেতনা জড়া প্রকৃতির দ্বারা প্রভাবিত বা কলুষিত হয় না। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, ময়াধ্যক্ষেণ প্রকৃতিঃ(ভ. গী. ৯/১০) তিনি যখন এই জড় জগতে অবতরণ করেন, তখন তাঁর চেতনা জড়া প্রকৃতির দ্বারা প্রভাবান্বিত হয় না। তাই যদি হত, তবে তিনি পরম তত্ত্বজ্ঞান সমন্বিত ভগবদ্গীতার জ্ঞান দান করতে পারতেন না। অপ্রাকৃত জগৎ সম্বন্ধে কোন জ্ঞান ব্যাক্ত করা যায় না, চেতনা জড়া প্রকৃতির কলুষতা থেকে মুক্ত না হয়ে। সুতরাং পরমেশ্বর ভগবান জড়া প্রকৃতির দ্বারা কলুষিত ছিলেন না। কিন্তু আমাদের চেতনা এখন জড়া প্রকৃতির দ্বারা কলুষিত। তাই ভগবদ্গীতার মাধ্যমে ভগবান আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, কিভাবে আমাদের চেতনা কলুষ মুক্ত হয়ে পবিত্র হলে সেই কলুষ মুক্ত চেতনা নিয়ে কর্ম করতে হবে। তাহাই আমাদেরকে সুখী করবে। আমরা বন্ধ করতে পারি না। আমরা কর্ম করা বন্ধ করতে পারি না। কর্মকে পবিত্র করতে হবে। এবং এই পবিত্র কর্মেরই নাম ভক্তি। আপাতদৃষ্টিতে ভক্তিকে সাধারণ কর্মের মতো মনে হতে পারে, কিন্তু এগুলো কলুষিত কর্ম নয়, এগুলো পবিত্র কর্ম। ভগবানের ভক্তকে দেখে একজন মূর্খ লোক মনে করতে পারে যে, তিনি সাধারণ মানুষের মতই কাজ করে চলেছেন, কিন্তু সেটি তার নির্বুদ্ধিতা। সে ভগবদ্ভক্ত এবং পরমেশ্বর ভগবানের কার্য কলাপ বুঝতে পারে না, সে গুলো জড় চেতনাময় বস্তু দ্বারা কলুষিত নয়, সেই সমস্তই ত্রিগুণাতীত। সুতরাং আমাদের জানা উচিত, আমাদের চেতনা এখন জড় কলুষিত।
<!-- END TRANSLATED TEXT -->
<!-- END TRANSLATED TEXT -->

Latest revision as of 14:36, 4 December 2021



660219-20 - Lecture BG Introduction - New York

পরমেশ্বর ভগবান সকল জীবের হৃদ্দেশে অবস্থান করেন পরম চেতনা, যা ভগবদ্গীতায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যে অধ্যায়ে ঈশ্বর ও জীবের পার্থক্য ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ক্ষেত্র-ক্ষেত্রজ্ঞ। ক্ষেত্রজ্ঞের ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে ভগবানও ক্ষেত্রজ্ঞ অর্থাৎ চেতন, এবং জীবসমূহ, বা জীব তারাও চেতন। কিন্তু পার্থক্য এই যে জীব কেবল তার নিজের দেহটি সম্পর্কে সচেতন, কিন্তু ভগবান সমস্ত দেহ সম্বন্ধেই সচেতন। ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি। (ভ. গী. ১৮/৬১)

পরমেশ্বর ভগবান সকল জীবের হৃদয়াভ্যন্তরে অবস্থান করেন, যেহেতু তিনি সকলের হৃদয়ে অবস্থান করেন, তাই তিনি সকলের অন্তরতম প্রদেশের কথা জানেন। এই কথা আমাদের ভুললে চলবে না। এই সম্বন্ধে আরও ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, পরম পুরুষোত্তম ভগবান পরমাত্মারূপে সর্বজীবের অন্তরে অধিষ্ঠিত, নিয়ন্তা হিসাবে তিনিই তাদের পরিচালনা করেন। তিনি ‍পরিচালনা করেন। সর্বস্য চাহং হৃদি সন্নিবিষ্টো (ভ. গী. ১৫/১৫) । সকলের হৃদয়ে অবস্থান করে জীবের বাসনা অনুযায়ী তিনি পরিচালনা করেন। মোহাচ্ছন্ন হয়ে জীব তার কর্তব্যকর্ম ভুলে যায়। প্রথমত তার স্বাধীন ইচ্ছার বশবর্তী হয়ে সে কোন কিছু করার সংকল্প করে, এবং তারপর সে নিজের কর্মের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার দ্বারা আবদ্ধ হয়ে পড়ে। সে এক দেহ পরিত্যাগ করে আর এক দেহ ধারণ করে- যেমন আমরা পুরাতন কাপড় ফেলে দিয়ে নতুন কাপড় পরিধান করি। অনুরূপভাবে, ভগবদ্গীতায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে- বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায় (ভ. গী. ২/২২)। যেমন আমরা পুরাতন কাপড় ফেলে দিয়ে নতুন কাপড় পরি। অনুরূপ ভাবে জীবও ভিন্ন ভিন্ন দেহ পরিবর্তন করে, এভাবে পূর্বকৃত কর্ম ফলস্বরূপ আত্মা এক দেহ থেকে আর এক দেহে দেহান্তরিত হয়। জীব যখন সত্ত্বগুণে অধিষ্ঠিত হয় তখনই এই কার্যকলাপ পরিবর্তন করা যায়, স্থীর বুদ্ধি, এবং তার কর্ত্তব্য কর্ম সম্পর্কে সচেতন হয়। এবং সেই অনুযায়ী কর্ম করে, তখনই সে তার পূর্বকৃত কর্ম বন্ধন থেকে মুক্ত হয়। এভাবে আমরা দেখতে পাই যে কর্ম নিত্য নয়। চারটির মধ্যে পাঁচটি তত্ত্ব -ঈশ্বর, জীব, প্রকৃতি, কাল এবং কর্ম- চারটি তত্ত্ব নিত্য, কিন্তু কর্ম অনিত্য।

এখন চেতন ঈশ্বর, পরম চেতন ঈশ্বর, পরম চেতন ঈশ্বর বা পরমেশ্বর, এবং জীব এর মধ্যে পার্থক্য এমতাবস্থায় এই রকম। চেতনা, ভগবান এবং জীবের, উভয়ই অপ্রাকৃত। এমন নয় যে জড় বস্তুর সংস্পর্শে আসার ফলে জীবের চেতনার বিকাশ হয়। এই ধারণাটি ভ্রান্ত। কোন বিশেষ প্রাকৃতিক পরিবেশে জড়ের মধ্য থেকে চেতনের উদ্ভব হয়। সেই কথা গীতায় স্বীকার করা হয়নি। তারা এইরকম করতে পারে না। জড়া প্রকৃতির প্রভাবে চেতনার বিকৃত প্রতিফলন হতে পারে, এবং তা হচ্ছে রঙিন কাঁচের মাধ্যমে প্রতিফলিত রঙিন আলোকের মতো। কিন্তু পরমেশ্বরের চেতনা জড়া প্রকৃতির দ্বারা প্রভাবিত বা কলুষিত হয় না। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, ময়াধ্যক্ষেণ প্রকৃতিঃ (ভ. গী. ৯/১০) তিনি যখন এই জড় জগতে অবতরণ করেন, তখন তাঁর চেতনা জড়া প্রকৃতির দ্বারা প্রভাবান্বিত হয় না। তাই যদি হত, তবে তিনি পরম তত্ত্বজ্ঞান সমন্বিত ভগবদ্গীতার জ্ঞান দান করতে পারতেন না। কেউ অপ্রাকৃত জগৎ সম্বন্ধে কিছু ব্যাক্ত করতে পারেন না, জড়া প্রকৃতির কলুষতা থেকে মুক্ত না হয়ে। সুতরাং পরমেশ্বর ভগবান জড়া প্রকৃতির দ্বারা কলুষিত ছিলেন না। কিন্তু আমাদের চেতনা এখন জড়া প্রকৃতির দ্বারা কলুষিত। তাই ভগবদ্গীতার মাধ্যমে ভগবান আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, আমাদের এই কলুষিত চেতনাকে পবিত্র করতে হবে। সেই কলুষ মুক্ত চেতনা নিয়ে কর্ম করতে হবে। তাহাই আমাদেরকে সুখী করবে। আমরা বন্ধ করতে পারি না। আমরা কর্ম করা বন্ধ করতে পারি না। কর্মকে পবিত্র করতে হবে। এবং এই পবিত্র কর্মেরই নাম ভক্তি। আপাতদৃষ্টিতে ভক্তিকে সাধারণ কর্মের মতো মনে হতে পারে, কিন্তু এগুলো কলুষিত কর্ম নয়, এগুলো পবিত্র কর্ম। ভগবানের ভক্তকে দেখে একজন মূর্খ লোক মনে করতে পারে যে, তিনি সাধারণ মানুষের মতই কাজ করে চলেছেন, কিন্তু সেটি তার নির্বুদ্ধিতা। সে ভগবদ্ভক্ত এবং পরমেশ্বর ভগবানের কার্য কলাপ বুঝতে পারে না, সে গুলো জড় চেতনাময় বস্তু দ্বারা কলুষিত নয়, সেই সমস্তই ত্রিগুণাতীত। সুতরাং আমাদের জানা উচিত, আমাদের চেতনা এখন জড় কলুষিত।