বাণীপিডিয়া হচ্ছে শ্রীল প্রভুপাদের বাণীসমূহের এক চলমান বিশ্বকোষ। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাবলীকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ এবং সংকলন করে সেগুলো সুলভ ও সহজবোধ্যরূপে উপস্থাপন করি। সকলের কল্যাণের লক্ষ্যে আমরা শ্রীল প্রভুপাদের ডিজিটাল শিক্ষাসমূহের এক অতুলনীয় সংগ্রহভান্ডার নির্মাণ করছি যার দ্বারা তিনি (শ্রীল প্রভুপাদ) কৃষ্ণভাবনামৃতের বিজ্ঞান প্রচার ও শিক্ষা দেয়ার জন্য এক নিরবচ্ছিন্ন ও বৈশ্বিক প্রচারমাধ্যম পাবেন।
এই বাণীপিডিয়া কর্মসূচী বিশ্বব্যাপী এক বহুভাষিক ও পারস্পরিক সহযোগিতামূলক উদ্যোগ যা শ্রীল প্রভুপাদের অসংখ্য আগ্রহী ভক্তদের অংশগ্রহণের কারণে সফলতা লাভ করছে। প্রতিটি ভাষা এই সেবাকার্যের অগ্রগতির এক একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে রয়েছে। আমরা ২০২৭ সালের নভেম্বর মাসে শ্রীল প্রভুপাদের ৫০তম তিরোভাব তিথিতে শ্রীল প্রভুপাদের সমস্ত ধারণকৃত প্রবচন, কথোপকথন এবং পত্রসমূহ কমপক্ষে ১৬টি এবং ৩২টি ভাষায় অন্ততপক্ষে শতকরা ২৫ ভাগ সম্পূর্ণ অবস্থায় অর্পণ করতে চাই। এর মধ্যে একটি ভাষা কি বাংলাও হবে?
মাতৃভাষারূপে ব্যবহৃত জনসংখ্যার ভিত্তিতে বাংলা বিশ্বের ৫ম স্থানীয় এবং সর্বাধিক সংখ্যক লোকের ব্যবহৃত ভাষার ভিত্তিতে বাংলা বিশ্বের ৭ম শীর্ষ ভাষা। বাংলা সারা বিশ্বে প্রায় ২৮ কোটি লোকের প্রথম ব্যবহৃত ভাষা বা মাতৃভাষা এবং প্রায় ৪ কোটি লোকের দ্বিতীয় ব্যবহৃত ভাষা। ভারতবর্ষে ২২টি আনুষ্ঠানিক ভাষার মধ্যে সবচাইতে অধিক সংখ্যক লোকের মুখে ব্যবহৃত ভাষার বিচারে হিন্দীর পরই বাংলার অবস্থান। বাংলা কেবল মাত্র পশ্চিম বাংলা এবং বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বের সর্বত্র (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের অনেক দেশে বাংলা ভাষাভাষী লোকের স্থায়ী ও অস্থায়ী অবস্থান এই ভাষাকে নিঃসন্দেহে এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভাষার মর্যাদা দিয়েছে। এই ভাষার ইতিহাস হাজারো বছরের পুরনো। ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এবং তাঁর সবচাইতে অন্তরঙ্গ পার্ষদদের অধিকাংশই বাংলা ভাষায় কথা বলতেন। শ্রীমন্মহাপ্রভুর অপূর্ব, দিব্য লীলাচরিত ও তাঁর প্রেমনাম সংকীর্তন আন্দোলনের বর্ণনা যেই তিনটি প্রখ্যাত গ্রন্থ (শ্রীচৈতন্য ভাগবত, শ্রীচৈতন্য মঙ্গল এবং শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত) -এর মাধ্যমে জগতবাসীর কাছে উপহার হিসেবে তুলে দেয়া হয়েছে, তার সবগুলোই বাংলা ভাষায় রচিত। শ্রীচৈতন্যদেবের পরবর্তীকালে আমাদের ব্রহ্ম-মাধ্ব গৌড়ীয় পরম্পরা ধারার প্রখ্যাত আচার্যগণের মধ্যে নিত্যানন্দশক্তি শ্রীমতি জাহ্নবা মাতা, শ্রীশ্রীরূপ ও সনাতন গোস্বামী, শ্রীল জীব গোস্বামী, বীরচন্দ্র প্রভু, শ্রীনিবাস আচার্য, শ্রীল নরোত্তম দাস ঠাকুর মহাশয়, শ্রীল রামচন্দ্র কবিরাজ, শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর, শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর এবং ইস্কন প্রতিষ্ঠাতা আচার্য শ্রীল প্রভুপাদ স্বয়ং বাঙ্গালী পরিবারে আবির্ভূত হয়ে গৌড়ীয় বৈষ্ণব সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে যুগযুগ ধরে আমাদের পূজনীয় ও বরণীয় হয়ে এসেছেন। শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন যে একদিন শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত গ্রন্থের অপ্রাকৃত ও অপূর্ব স্বাদ আস্বাদন করার জন্য সারা বিশ্বের ভক্তবৃন্দ বাংলা ভাষা শিখবেন। শ্রীমন্মহাপ্রভুর দিব্য বাণী যদি শ্রীল প্রভুপাদের মাধ্যমে সারা বিশ্বের সমস্ত ভাষায় ছড়িয়ে পড়ে তাহলে নিঃসন্দেহে বাংলা সেই অমিয়বাণীর ধারাপ্রবাহের এক অন্যতম প্রধান ধারা হিসেবে বাহিত হবে তাতে আর আশ্চর্যের কি রয়েছে?
বাংলা ভাষার বিষয়বস্তুসমূহের লিংক
এখানে আপনি পাবেন বাংলায় উপলব্ধ সমস্ত বাণীপিডিয়া সামগ্রীগুলোর লিংক
অমৃতবিন্দু হচ্ছে শ্রীল প্রভুপাদের প্রবচন, প্রাতঃভ্রমণ এবং কথোপকথন থেকে নেওয়া সংক্ষিপ্ত উদ্ধৃতাংশ। এই ক্ষুদ্র (৯০ সেকেন্ডেরও কম সময়) অডিওগুলো এতোই শক্তিশালী যে এগুলো আপনার আত্মাকে পারমার্থিক আলোর দ্বারা আলোকিত করবে এবং শান্তি ও আনন্দে ভরে তুলবে!
এই কার্যসূচীতে সম্পূর্ণ বাণীপিডিয়ার লক্ষ্য বর্ণনা করা হয়েছে।
আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করুন
কলিযুগের পাপক্লিষ্ট, মন্দভাগ্য ও অধঃপতিত জীবেদের কল্যাণের উদ্দেশ্যে আজ থেকে ৫৩৪ বছর পূর্বে ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এই ধরাধামে আবির্ভূত হয়ে যুগধর্ম হরিনাম সংকীর্তনের প্রবর্তন করেছিলেন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁর অন্তরঙ্গ পার্ষদবর্গ বাংলা থেকে এই আন্দোলনের সূচনা করে ক্রমান্বয়ে তা উড়িষ্যা, উত্তর ভারত, দক্ষিণ ভারত তথা সারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে দেন। তাঁরই দিব্য নির্দেশে শ্রীমন্নিত্যানন্দ প্রভু সারা বাংলার প্রচারকার্যের মূল ভূমিকা পালন করেন। তাই এই বঙ্গভূমি বিশেষ করে শ্রীমন্নিত্যানন্দ প্রভুর আশীর্বাদপুষ্ট। পরবর্তীকালে ব্রহ্ম-মাধ্ব গৌড়ীয় বৈষ্ণব পরম্পরার আচার্যগণ একে একে তাঁদের অনবদ্য অবদানের দ্বারা এই আন্দোলনকে আরও পুষ্ট করেছেন। উল্লেখ্য বিষয় হল যে, সমগ্র জীবের কল্যাণের লক্ষ্যে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর এই সর্বোৎকৃষ্ট দান 'গোলোকের প্রেমধন হরিনাম সংকীর্তন' বহুকাল ধরে কেবল ভারতবর্ষের অভ্যন্তরেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এই আন্দোলনকে বিশ্বমাপের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যপারে যিনি বাস্তবিক পরিকল্পনা করেন তিনি হলেন ভগবান শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর বিশেষশক্তিপ্রাপ্ত পরমহংস মহাত্মা ঠাকুর শ্রীল ভক্তিবিনোদ। ১৮৯৬ সালে তিনি প্রথম পাশ্চাত্যদেশে তাঁর গ্রন্থ 'শ্রীগৌরাঙ্গলীলা স্মরণমঙ্গল' প্রেরণ করেন। এই গ্রন্থের Caitanya Mahaprabhu: His Life and Precepts (শ্রীচৈতন্যদেবের জীবনী ও শিক্ষা) শীর্ষক ৪৭ পৃষ্ঠার ভূমিকায় তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন, খুব শীঘ্রই এমন একজন মহান ব্যক্তিত্বের আবির্ভাব ঘটবে যিনি সারা বিশ্বজুড়ে পরিভ্রমণ করবেন এবং ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বাণী প্রচার করবেন। তিনি আরও বলেন সেই দিন সমাগত যখন আমেরিকান, ইংরেজ, জার্মান, ফরাসীরা মৃদঙ্গ করতাল সহযোগে তাদের নিজ নিজ নগরে-দেশে হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র সংকীর্তন করবে এবং সেই সব শ্বেতাঙ্গ বৈষ্ণবেরা তাদের ভারতীয় আর্যভ্রাতাদের সাথে 'জয় শচীনন্দন, জয় শচীনন্দন' বলে কীর্তন করবে।
শ্রীল ভক্তিবিনোদের ঠাকুরের সেই ভবিষ্যদ্বাণীকে সার্থক রূপদান করতে ভারতের পশ্চিমবাংলার কলকাতা শহরে অভয়চরণ দে'র আবির্ভাব যিনি পরবর্তীতে শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরের বিশেষ কৃপাধন্য শিষ্য হন ও শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ-নামে পরিচিত হন। তিনি তাঁর শ্রীগুরুদেবের নির্দেশে মাত্র ১১ বছরে সমগ্র পৃথিবীজুড়ে ভারতীয় বৈদিক সভ্যতা তথা এই হরেকৃষ্ণ আন্দোলনের অভূতপূর্ব প্রচার ও প্রসার ঘটান। শ্রীল প্রভুপাদের যেই শিক্ষা সারা বিশ্বকে আজ গভীর অন্ধকার থেকে এক দিব্য আলোকের সন্ধান দিয়েছে তাঁর সূত্রপাত ইংরেজী ভাষাভাষী দেশে হলেও তিনি সর্বদাই চাইতেন কৃষ্ণভাবনামৃতের এই অপূর্ব উপহারটি বাংলা ভাষা তথা তাঁর আপন মাতৃভাষায় যেন প্রচারিত হয় এবং বাঙ্গালী লোকেদের কাছে যেন তা পৌঁছে যায়। এই লক্ষ্যে পরবর্তীতে শ্রীল প্রভুপাদের গ্রন্থসমূহ বাংলা ভাষায় অনুবাদ হলেও তাঁর হাজারো অমূল্য রত্ন আজও বাংলা ভাষায় অনুবাদের অপেক্ষায় রয়েছে। তন্মধ্যে শ্রীল প্রভুপাদ প্রদত্ত প্রবচন, প্রাতঃভ্রমণকালীন কথোপকথন, কক্ষ আলোচনা, পত্র বিনিময়, আগমনী বক্তৃতা, ব্যক্তিগত নির্দেশ-উপদেশ ইত্যাদি বহু কিছু রয়েছে। শ্রীল প্রভুপাদের সেই জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় আজকে সারা পৃথিবী তাঁর বাণীরূপ কৃপা আশীর্বাদ প্রাপ্ত হচ্ছে, আমরা চাই সেই একইভাবে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সহ আপামর বাংলাভাষাভাষীরাও যেন সেই সুযোগ লাভ করেন এবং কৃষ্ণভাবনামৃতের স্পর্শ পেয়ে তাদের দুর্লভ মানবজীবনকে সার্থক করতে পারেন।
বাংলা ভাষা সর্বদাই সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন কারণে সম্মানের দাবী রেখেছে। বাংলার বহু কবি, সাহিত্যিক, গায়ক, ধর্মতাত্ত্বিক, ডাক্তার, ঔপন্যাসিক, বৈজ্ঞানিকদের বিশ্বব্যাপী অবদানের জন্য বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি জগৎজুড়ে বিখ্যাত। বিশ্বের অনেক স্থানেই বাঙ্গালী সংস্কৃতি বহুল পরিচিত ও আদৃত। এতো জাগতিক অবদানের পরও পারমার্থিক জ্ঞানে আজও আমরা অনেক অনেক পিছিয়ে। বিশেষ করে, অনেক ধরণের ছলনা, কুসংস্কার, সহজিয়াবাদ আর ধর্মীয় অপসিদ্ধান্তের বেড়াজালে এই বঙ্গভূমি এবং কোটি কোটি বাঙ্গালী জনগণ আজও প্রকৃত সত্যের থেকে বঞ্চিত। অথচ এই বাংলার মাটিতেই প্রেমাবতার স্বয়ং ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু আবির্ভূত হয়েছিলেন। আর শ্রীল প্রভুপাদই সেই মহান ব্যক্তিত্ব যিনি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর ভবিষ্যদ্বাণী 'পৃথিবীতে যত আছে নগরাদি গ্রাম, সর্বত্র প্রচার হইবে মোর নাম' এর একমাত্র সার্থক রূপকার। শ্রীল প্রভুপাদ প্রদত্ত শিক্ষাবলীই কেবল পারে আমাদের সমস্ত অন্ধকার থেকে মুক্ত করে প্রকৃত চিন্ময় জ্ঞানের আলোতে উদ্ভাসিত করতে, আমাদের নিত্যপ্রভু ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সাথে আমাদের হারিয়ে যাওয়া সম্পর্ককে পুনঃস্থাপন করতে এবং চরমে আমাদের শুদ্ধ প্রেমভক্তি লাভ করে ভগবানের চিন্ময় ধামে প্রত্যাবর্তন করতে। আর বাণীপিডিয়া সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে শ্রীল প্রভুপাদের সমস্ত শিক্ষাবলী পৃথিবীতে বিদ্যমান ভাষাসমূহের মধ্যে যত বেশি সম্ভব ভাষায় অনুবাদের মহান কার্যক্রম শুরু করেছে। তাই আমরা আপনাদের আমন্ত্রণ জানাই শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাবলীর ইন্টারনেটভিত্তিক প্রচারের এই যুগান্তকারী এবং সর্বোত্তম সেবায় নিজেকে যুক্ত করার। চলুন আমরা সকলে মিলে শ্রীল প্রভুপাদের করুণাবারিকে ত্রিতাপক্লিষ্ট জগতবাসীর কাছে নির্মল বর্ষাধারার ন্যায় ঝরে পড়তে সাহায্য করি, কমপক্ষে যেন বাংলাভাষাভাষী লোকেরা শ্রীল প্রভুপাদের এই আযাচিত কৃপা থেকে বঞ্চিত না হয়।
আমাদের এই মুহূর্তে ১০৮০টি ভিডিও রয়েছে যার মধ্যে প্রায় অর্ধেক বাংলায় অনূদিত হয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে বিষয়ভিত্তিক ও দলগত বাণীউক্তি (vaniquotes), অমৃতবিন্দু (nectar drops), অনুলিপিকৃত প্রবচন, পত্রবিনিময়, এক থেকে দেড় মিনিটের শ্রীল প্রভুপাদের সংক্ষেপিত প্রবচন ইত্যাদি অনেক কিছু।
আমি কিভাবে অংশ নিতে পারব???
যদি আপনি ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ পারদর্শী হন, তবে আমাদের ইমেইল করুন [email protected]
আমি অনুবাদ বা কম্পিউটারসংক্রান্ত কাজে দক্ষ নই কিংবা প্রয়োজনীয় সময় দিতে সক্ষম হব না, কিন্তু আর্থিকভাবে এই মহান উদ্যোগকে সাহায্য করতে পারি...
বাণীপিডিয়া এক বিশাল সেবাযজ্ঞ যার প্রতিটি বিন্দু বিন্দু কেবল শ্রীল প্রভুপাদ, পূর্বতন আচার্যবর্গ এবং ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সন্তুষ্টি বিধানের জন্য উৎসর্গীকৃত। এই সুবিশাল সেবার অনেক কিছুতেই আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে যেমন সার্ভার পরিচালনা এবং ব্যবস্থাপনা খরচ, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয়ের খরচ এবং যারা তাদের সম্পূর্ণ জীবন এই সেবায় উৎসর্গ করেছেন তাদের সাহায্য করা ইত্যাদি। তাই আপনিও আপনার উপার্জনের কিছু অংশ দিয়ে এই মহান সেবায় অংশ নিয়ে শ্রীল প্রভুপাদ ও ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর অশেষ আশীর্বাদ প্রাপ্ত হতে পারেন। আর্থিক সহায়তার জন্য এই লিংকে. অনুদান করুন।
He for whom no one is put into difficulty and who is not dirturbed by anxiety, who is steady in happiness and distress, is very dear to Me.
PURPORT
A few of a devotee's qualifications are further being described. No one is put into difficulty, anxiety, fearfulness, or dissatisfaction by such a devotee. Since a devotee is kind to everyone, he does not act in such a way to put others into anxiety. At the same time, if others try to put a devotee into anxiety, he is not disturbed. It is by the grace of the Lord that he is so practiced that he is not disturbed by any outward disturbance. Actually because a devotee is always engrossed in Kṛṣṇa consciousness and engaged in devotional service, all such material circumstances cannot woo him. Generally a materialistic person becomes very happy when there is something for his sense gratification and his body, but when he sees that others have something for their sense gratification and he hasn't, he is sorry and envious. When he is expecting some retaliation from an enemy, he is in a state of fear, and when he cannot successfully execute something he becomes dejected. But a devotee is always transcendental to all these disturbances; therefore he is very dear to Kṛṣṇa.
শ্রীল প্রভুপাদের দৈবচয়নকৃত কিছু সংক্ষিপ্ত ভিডিও
শ্রীল প্রভুপাদের দৈবচয়নকৃত কিছু সংক্ষিপ্ত অডিও (কেবল শোনা যায় এমন)
"কেউই শ্রীকৃষ্ণের মতো বিখ্যাত হতে পারবে না। সারা বিশ্বজুড়ে তিনি বিখ্যাত, ভারতবর্ষের কথা আর কিই-বা বলার আছে? সম্পূর্ণ খ্যাতি। তেমনই সমস্ত শক্তি, সমস্ত ঐশ্বর্য, সমস্ত সৌন্দর্য, সমস্ত জ্ঞান... কেবল ভগবদ্গীতাটিই দেখুন না। এটি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত বাণী। এর সমকক্ষ আর কিছুই নেই, আর ভগবদ্গীতার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার মতোও কিছু নেই। এটি এমনই এক মহান বিজ্ঞান। সম্পূর্ণ বিজ্ঞান। সুতরাং, যাঁর মধ্যে এই ছয়টি গুণ পূর্ণরূপে বিরাজমান তিনিই কেবল ভগবান। এটি হচ্ছে ভগবানের সংজ্ঞা। পূর্ণ শক্তি, পূর্ণ সৌন্দর্য, পূর্ণ জ্ঞান, পূর্ণ ঐশ্বর্য এবং পূর্ণ বৈরাগ্য।"
শ্রীল প্রভুপাদ তার নির্দেশাবলীর ওপর অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন, তাই বাণীপিডিয়া হচ্ছে, বিশেষ করে, তার সমস্ত কার্যাবলীর ওপর উৎসর্গকৃত যা কিনা তার গ্রন্থ, ধারণকৃত বক্তৃতা, কথোপকথন, এবং চিঠির সমন্বয়। এই কার্য সুসম্পন্ন হওয়ার পর, বাণীপিডিয়া হবে একটি মহিমান্বিত স্থান প্রদানকারী বিশ্বের সর্বপ্রথম বাণীমন্দির যেখানে অকৃত্রিম পারমার্থিক দিকনির্দেশনার অনুসন্ধানকারী লক্ষ লক্ষ মানুষ শ্রীল প্রভুপাদের বিশ্বখ্যাত উপদেশাবলীর ভিত্তিতে সকল প্রশ্নের উত্তর ও অনুপ্রেরণা পাবে, বাণীপিডিয়ার পবিত্র পটভূমি তা একটি বিশ্বকোষ রূপে বহুভাষায় উপস্থাপন করবে।
বাণীপিডিয়ার লক্ষ্য বিবৃতি
শ্রীল প্রভুপাদের বাণীময় উপস্থিতিকে বহু ভাষায় নিয়ে আসা ও পূর্ণরূপে তা প্রকাশ করতে সাহায্য করা আর এইভাবে লক্ষ কোটি মানুষকে কৃষ্ণভাবনামৃতের বিজ্ঞানময় জীবনে বাঁচতে সুযোগ করে দেওয়া এবং মানব সমাজকে পুনরায় পারমার্থিক চেতনাসম্পন্ন করে ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সংকীর্তন আন্দোলনে সহযোগিতা করা।
সহযোগিতা
স্পষ্টতভাবেই দৃশ্যমান বাণীপিডিয়ার এই বিশাল মাত্রার বিশ্বকোষ সম্ভব কেবলমাত্র হাজারো ভক্তের দ্বারা শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাবলীর সম্মিলিত প্রচেষ্টার সংঘবদ্ধ সংকলন ও সযত্ন ভাষান্তরের দ্বারা।
আমরা নভেম্বর ২০২৭ সালের মধ্যে শ্রীল প্রভুপাদের সমস্ত গ্রন্থ, ভাষণ, কথোপকথন এবং চিঠির অনুবাদ কমপক্ষে ১৬ টি ভাষায় সম্পূর্ণ এবং বাণীপিডিয়াতে ১০৮ টি ভাষায় আংশিক উপস্থাপনার কাজ সম্পন্ন করতে চাই।
অক্টোবর ২০১৭ পর্যন্ত সম্পূর্ণ বাইবেল গ্রন্থটি ৬৭০ টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে, নিউ টেস্টামেন্ট বা নব্য বিধানগুলো ১৫২১ টি ভাষায় এবং বাইবেলের কিছু অংশ বা গল্পগুলো ১১২১ টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। এই পরিসংখ্যান এটিই প্রমাণ করে যে শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাকে উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি করার যে লক্ষ্য আমাদের রয়েছে, তা বিশ্বব্যাপী খ্রিস্টানরা তাদের শিক্ষাগুলোকে ছড়িয়ে দেয়ার প্রচেষ্টার তুলনায় কোনভাবেই কোনওভাবেই উচ্চাকাঙ্ক্ষী নয়।
সমগ্র মানবতার পরম কল্যাণের লক্ষ্যে, বহু ভাষায় উপস্থাপনার মাধ্যমে শ্রীল প্রভুপাদের দিব্য বাণীসমূহকে অনলাইন জগতে আনতে ও সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করতে আমরা সকল ভক্তবৃন্দকে এই মহান প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
আবাহন
১৯৬৫ সালে শ্রীল প্রভুপাদ একজন অনাহূত ব্যক্তি হিসেবে মার্কিন দেশে পৌঁছান। যদিও ১৯৭৭ সালেই তাঁর মহিমান্বিত ব্যক্তিগত দৈহিক উপস্থিতির দিনগুলোর পরিসমাপ্তি ঘটেছে, কিন্তু তিনি আজও তাঁর বাণীর মাধ্যমে আমাদের মাঝেই রয়েছেন এবং তাই আমাদের অবশ্যই উচিৎ তাঁর এই বাণীময় উপস্থিতির সৌভাগ্যকে পূর্ণরূপে গ্রহণ করা। শ্রীল প্রভুপাদকে আবাহন এবং ভিক্ষা প্রার্থনার দ্বারাই কেবল তিনি আমাদের সমক্ষে আবির্ভূত হবেন। আমাদের মাঝে তাঁকে পাওয়ার তীব্র বাসনাই তাঁর আবির্ভাবের মূল চাবিকাঠি।
সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ
শ্রীল প্রভুপাদের আংশিক উপস্থিতি আমরা চাই না। আমরা তাঁর পূর্ণ বাণী-উপস্থিতি চাই। তাঁর ধারণকৃত সমস্ত শিক্ষাবলী সম্পূর্ণরূপে সংকলিত এবং বহু ভাষায় অনূদিত হওয়া উচিত। এই গ্রহের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এইটিই হবে আমাদের প্রদত্ত অর্পণ - শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষার সম্পূর্ণ আশ্রয়।
বাণী-উপস্থিতি
শ্রীল প্রভুপাদের সম্পূর্ণ বাণী-উপস্থিতি দুইটি ধাপে আবির্ভূত হবে। প্রথম - এবং সহজ ধাপ - শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাবলী সব ভাষায় সংকলন ও অনুবাদ করা। দ্বিতীয় - এবং আরও কঠিন পর্যায় - লক্ষ লক্ষ মানুষকে তাঁর শিক্ষার আলোকে আধারিত হয়ে জীবনযাপন করা।
অধ্যয়নের বিভিন্ন পন্থা
এখনও পর্যন্ত, আমরা আমাদের গবেষণায় দেখতে পেয়েছি যে, ৬০ টি ভিন্ন ভিন্ন পন্থায় শ্রীল প্রভুপাদ তাঁর ভক্তদের যেভাবে তাঁর গ্রন্থ অধ্যয়নের কথা বলেছেন।
শ্রীল প্রভুপাদের গ্রন্থসমূহ এইভাবে অধ্যয়নের ফলে আমরা খুব সহজেই সেগুলো বুঝতে এবং আত্মস্থ করতে পারি। অধ্যয়নের বিষয়ভিত্তিক পদ্ধতি অনুসরণ এবং পরে সেগুলো সঙ্কলনের মাধ্যমে যে কোন ব্যক্তি শ্রীল প্রভুপাদ কর্তৃক উপস্থাপিত প্রতিটি শব্দ, বাক্যাংশ, বিষয়বস্তু অথবা ব্যক্তিত্বের গভীর তাৎপর্য সহজেই হৃদয়ঙ্গম করতে পারবেন। তাঁর শিক্ষাবলী নিঃসন্দেহে আমাদের জীবন ও আত্মা, এবং যখন আমরা পরিপূর্ণভাবে অধ্যয়ন করব আমরা অত্যন্ত গভীরভাবে শ্রীল প্রভুপাদের উপস্থিতির অনুভব এবং অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারব।
এক কোটি আচার্য
ধরে নাও, তোমরা এখন দশ হাজার জন রয়েছ। আমাদের এক লক্ষে বিস্তৃত হওয়া উচিৎ। সেইটিই দরকার। এবং এক লক্ষ থেকে দশ লক্ষ আর দশ লক্ষ থেকে এক কোটি। সুতরাং এইভাবে আচার্যের কোন অভাব হবে না। আর তখন লোকেরা খুব সহজেই কৃষ্ণভাবনামৃত যে কি তা বুঝতে পারবে।সুতরাং সেইরকম সংস্থা গড়ে তোল। মিথ্যা অহঙ্কারে গর্বিত হইও না। আচার্যের নির্দেশ অনুসরণ কর এবং তোমার নিজেকে আদর্শ, পরিপক্ক বানাতে চেষ্টা কর। তাহলে মায়াকে যুদ্ধে পরাস্ত করা অত্যন্ত সহজ হবে। হ্যাঁ। আচার্যেরা মায়ার কার্যকলাপের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। – Srila Prabhupada Lecture on Sri Caitanya-caritamrta, 6 April 1975
মন্তব্য
শ্রীল প্রভুপাদের এই লক্ষ্য সংক্রান্ত বার্তাটিই স্বতঃসিদ্ধ এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ - লোকেদের জন্য খুব সহজেই কৃষ্ণভাবনামৃত বোঝার এক আদর্শ পরিকল্পনা। শ্রীল প্রভুপাদ কর্তৃক শক্তিপ্রাপ্ত তাঁর এক কোটি শিক্ষাশিষ্যগণ আমাদের প্রতিষ্ঠাতা আচার্যের দিব্য বাণীর ওপরে আধার করে জীবনধারণ করছেন এবং সর্বদা নিখুঁত ও পরিপক্ক হয়ে ওঠার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। শ্রীল প্রভুপাদ পরিষ্কার বলেছেন, "সেই সংস্থা গড়ে তোল।" বাণিপিডিয়া সোৎসাহে সেই লক্ষ্য অর্জনের পথে সাহায্য করে যাচ্ছে।
কৃষ্ণভাবনামৃতের বিজ্ঞান
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার নবম অধ্যায়ে এই কৃষ্ণভাবনামৃতের বিজ্ঞানকে সমস্ত জ্ঞানের রাজা, সমস্ত গোপনীয় বস্তুর শ্রেষ্ঠ এবং চিন্ময় উপলব্ধির সর্বোচ্চ বিজ্ঞান বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কৃষ্ণভাবনামৃত এক চিন্ময় বিজ্ঞান যা কেবল পরমেশ্বর ভগবানের সেবা করতে প্রস্তুত এমন ঐকান্তিক ভক্তের কাছেই প্রকাশ করা যায়। কৃষ্ণভাবনামৃত কোন শুষ্ক তর্ক বা প্রাতিষ্ঠানিক জড়বিদ্যার যোগ্যতা দ্বারা অর্জন করা সম্ভব নয়। কৃষ্ণভাবনামৃত কোন বিশ্বাস নয়, যেমন হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ বা ইসলাম ইত্যাদি। বরং এইটি একটি বিজ্ঞান। যদি কেউ শ্রীল প্রভুপাদের গ্রন্থাবলী খুব মনোযোগ সহকারে অধ্যয়ন করেন, তারা কৃষ্ণভাবনামৃতের সর্বোচ্চ বিজ্ঞানটি উপলব্ধি করতে পারবেন এবং সেইটি প্রত্যেক ব্যক্তির নিকট তাদের প্রকৃত কল্যাণ বলে ছড়িয়ে দিতে অনুপ্রাণিত হবেন।
ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সংকীর্তন আন্দোলন
ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু হলেন সংকীর্তন আন্দোলনের জনক এবং উদ্বোধক। যে ব্যক্তি তার জীবন, অর্থ, বুদ্ধি এবং বাক্য উৎসর্গ করার দ্বারা তাঁর আরাধনা করেন তিনি ভগবানের দ্বারা স্বীকৃত হবেন ও তাঁর আশীর্বাদ লাভ করবেন। বাকি সবকিছুকে কেবল মূর্খই বলা চলে, মানুষ যত ধরণের উৎসর্গে তার শক্তি ব্যবহার করতে পারে, তার মধ্যে কেবল সংকীর্তন আন্দোলনের উদ্দেশ্যে করা উৎসর্গই সবচাইতে মহিমান্বিত। সম্পূর্ণ কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনটিই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সংকীর্তন আন্দোলনের নীতির ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে। এই জন্য যিনি এই সংকীর্তন আন্দোলনের মাধ্যমে পরমেশ্বর ভগবানকে জানার চেষ্টা করেন, তিনি সবকিছুই পরিপূর্ণরূপে জানতে পারেন। তিনিই সুমেধাসম্পন্ন এবং যথার্থ বুদ্ধিমান।
মানব সমাজকে পুনরায় আধ্যাত্মিকীকরণ
বর্তমান সময়ে মানব সমাজ আর বিস্মৃতির অন্ধকারে ডুবে নেই। সারা বিশ্বজুড়ে জাগতিক সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, শিক্ষা-দীক্ষা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের দ্রুত অগ্রসর ঘটেছে। কিন্তু সমাজব্যবস্থার কোনও না কোন অংশে একটি সূক্ষ্ম ছিদ্র বা গলদ রয়েই গিয়েছে। আর সেই জন্যই এমন কি ছোটোখাটো বিষয়েও বিরাট আকারে কলহ দেখা যায়। মানবতা কিভাবে শান্তি, বন্ধুত্ব এবং সমৃদ্ধিতে একত্র হতে পারে সেই ব্যপারে একটি সাধারণ সমাধানসূত্র খুঁজে বের করার যথেষ্ট প্রয়োজন রয়েছে। শ্রীমদ্ভাগবত সেই প্রয়োজনটি পূরণ করছেন। কারণ সমগ্র মানব সভ্যতার পুনরায় আধ্যাত্মিকীকরণের লক্ষ্যে এই গ্রন্থটি হচ্ছে এক অপূর্ব সাংস্কৃতিক উপস্থাপনা। সাধারণভাবে বলতে গেলে, সমগ্র জনসাধারণেরাই হচ্ছে আধুনিক রাজনীতিবিদ এবং জননেতাদের হাতের ক্রীড়নক। যদি কেবল মাত্র নেতাদের হৃদয়ের পরিবর্তন হয়, তাহলে নিশ্চিতভাবেই সারা বিশ্বের সামগ্রিক আবহে এক মৌলিক পরিবর্তন আসবে।
প্রকৃত শিক্ষার উদ্দেশ্য হওয়া উচিৎ আত্ম-উপলব্ধি, আত্মার পারমার্থিক মূল্যবোধের উপলব্ধি। প্রত্যেকেরই উচিৎ সারা বিশ্বের সমস্ত কার্যকলাপকে পারমার্থিকীকরণের কাজে সাহায্য করা। এই ধরণের মহান কার্যের দ্বারা কার্যসম্পাদনকারী এবং সম্পাদিত কার্য উভয়েই আধ্যাত্মিকতায় পরিপূর্ণ হবে এবং জড়া প্রকৃতির গুণসমূহকে অতিক্রম করে যেতে পারবে।
বাণীপিডিয়ার উদ্দেশ্য বিবৃতি
শ্রীল প্রভুপাদকে বিশ্বের সমস্ত দেশের ভাষায় জনসাধারণদের মাঝে কৃষ্ণভাবনামৃতের প্রচার, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো বিশ্বব্যাপী একটি নিরবচ্ছিন্ন প্রচারমঞ্চ তৈরি করে দেওয়া।
বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাসমূহকে পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে গবেষণা, আবিষ্কার এবং পূর্ণাঙ্গরূপে সংকলন করা।
শ্রীল প্রভুপাদের বাণীসমূহকে সুলভ ও সহজে বোধগম্য করে উপস্থাপন করা।
শ্রীল প্রভুপাদের বাণীর ওপর আধারিত বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক গ্রন্থ রচনাকে সহজতর করে তুলতে একটি পূর্ণাঙ্গ বিষয়বস্তুভিত্তিক গবেষণার ভাণ্ডার উপহার দেওয়া।
শ্রীল প্রভুপাদের বাণীর ওপর আধার করে বিভিন্ন শিক্ষামূলক উদ্যোগের জন্য পাঠ্যক্রমের উৎস উপহার দেওয়া।
ব্যক্তিগত দিকনির্দেশনার জন্য শ্রীল প্রভুপাদের বাণীর সাহায্য নেওয়া ও সর্বস্তরে তাঁর প্রতিনিধিত্ব করতে যথেষ্ট পরিমাণ শিক্ষিত হওয়ার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে শ্রীল প্রভুপাদের একনিষ্ঠ অনুসারীদের মাঝে একটি স্পষ্ট জ্ঞান প্রতিষ্ঠা করা।
উপরোক্ত সমস্ত লক্ষ্যসমূহ পূরণার্থে সারা বিশ্বের সমস্ত জাতি থেকে শ্রীল প্রভুপাদের সকল অনুসারীদের বৈশ্বিকভাবে একত্রিত হতে অনুপ্রাণিত করা।
বাণীপিডিয়া নির্মাণে কি আমাদেরকে উদ্বুদ্ধ করছে?
আমরা স্বীকার করি যে
শ্রীল প্রভুপাদ একজন শুদ্ধভক্ত, বদ্ধজীবেদের ভগবানের প্রেমময়ী সেবায় নিযুক্ত করতে তিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দ্বারা সরাসরিভাবে শক্তিপ্রাপ্ত। ভগবান কর্তৃক তাঁর এই শক্তিপ্রাপ্তির বিষয়টি প্রমাণিত হয় তাঁরই প্রদত্ত শিক্ষাবলীর মধ্যে পাওয়া পরম সত্যের সম্পর্কে তাঁর অতুলনীয় ব্যাখ্যার দ্বারা।
সমসাময়িক বিশ্ব পরিস্থিতিকে একদম নিখুঁতভাবে ব্যাখ্যা করতে আধুনিক কালে বৈষ্ণব দর্শনের দিক্পালবর্গ এবং সমাজ-সমালোচকদের মধ্যে শ্রীল প্রভুপাদের চেয়ে মহান আর কাউকেই পাওয়া যায় না।
লক্ষ লক্ষ অনুসারী সমন্বিত সমস্ত ভাবী বংশধরদের জন্য শ্রীল প্রভুপাদ প্রদত্ত শিক্ষাসমূহই হবে সর্বপ্রধান আশ্রয়।
শ্রীল প্রভুপাদ চেয়েছিলেন যেন তাঁর প্রদত্ত শিক্ষাবলীর ব্যাপকভাবে প্রচার হয় এবং সকলেই যেন যথার্থভাবে হৃদয়ঙ্গম করেন।
শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাবলীর বিষয়ভিত্তিক অনুধাবন, তাঁর প্রদত্ত শিক্ষাবলীর অন্তর্নিহিত সত্যকে উপলব্ধি করার পন্থার ব্যাপক বিস্তার ঘটায়। আর, প্রতিটি দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁর শিক্ষাবলীর গবেষণা, উদ্ঘাটন ও সম্পূর্ণরূপে তা সংকলন করা এক বিশাল মূল্য রয়েছে।
শ্রীল প্রভুপাদের প্রদত্ত সমস্ত শিক্ষাকে এক একটি নির্দিষ্ট ভাষায় অনুবাদ করা এবং সেই ভাষাসমূহ যেখানে যেখানে ব্যবহার হয় সেই সেই স্থানে শ্রীল প্রভুপাদকে চিরন্তনরূপে অবস্থান করার আমন্ত্রণ জানানোরই সমতুল্য।
তাঁর ব্যক্তিগত দৈহিক অনুপস্থিতির সময় এই আন্দোলনকে সাহায্য করার মানসে শ্রীল প্রভুপাদের বহু বাণীসেবকের প্রয়োজন।
এইভাবে, আমরা শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাবলীর মাঝে প্রাপ্ত সঠিক জ্ঞান ও উপলব্ধির ব্যাপক বিতরণ ও যথাযথভাবে তা বোঝার জন্য একটি সত্যিকারের গতিশীল মঞ্চ তৈরি করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যাতে করে সেইগুলো আনন্দজনকভাবে চর্চা করা যায়। এইটি ঠিক তেমনটাই সরল। কেবল একটি বস্তুই আমাদেরকে বাণীপিডিয়া সেবার সম্পন্নতার থেকে আলাদা করে রেখেছে, যেটি হল এই সেবা সম্পাদনের লক্ষ্যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ভক্তদের থেকে এখনও পর্যন্ত না দেওয়া সময় এবং বাণীসেবার জন্য ব্যবহার হবে এমন অনেক দিব্য বহু ঘণ্টা।
আমার এই সামান্য সেবাটুকুকে প্রশংসা করার জন্য আমি তোমাদের সকলকে অত্যন্ত ধন্যবাদ জানাই, যেইটি আমি আমার গুরুমহারাজের দেওয়া আদেশ পালনের জন্য আমার কর্তব্য হিসেবে পালন করছি। আমি আমার সমস্ত শিষ্যদের অনুরোধ করি তারা যেন সবাই মিলেমিশে কাজ করে এবং আমি নিশ্চিত আমাদের এই আন্দোলন নিঃসন্দেহে এগিয়ে যাবে।– তমাল কৃষ্ণ দাস (জিবিসি)-কে লেখা শ্রীল প্রভুপাদের পত্র - ১৪ আগস্ট, ১৯৭১
শ্রীল প্রভুপাদের তিনটি স্বাভাবিক পদমর্যাদা
শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাবলীর শ্রীপাদপদ্মে আশ্রয় গ্রহণ করার সংস্কৃতি তখনই কেবল উপলব্ধ হবে যখন তাঁর অনুসারীদের হৃদয়ে শ্রীল প্রভুপাদের এই তিনটি পদমর্যাদা জাগ্রত হবে।
শ্রীল প্রভুপাদ আমাদের প্রধানতম শিক্ষাগুরু
আমরা এটি স্বীকার করি যে সমস্ত অনুসারীরা শ্রীল প্রভুপাদের প্রদত্ত শিক্ষাবলীর মাঝেই তাঁর উপস্থিতি অনুভব করতে পারে - ব্যক্তিগত ভাবে এবং পরস্পরের মাঝে আলোচনা করার দ্বারা।
শ্রীল প্রভুপাদকে আমাদের 'পরিচালনাকারী বিবেক' হিসেবে গ্রহণ করে তাঁর সঙ্গে জীবন ধারণ করার মাধ্যমে আমরা আমাদেরকে পবিত্র করতে এবং শ্রীল প্রভুপাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে পারি।
শ্রীল প্রভুপাদের বিরহ অনুভব করার জন্য এবং তাঁর বাণীর মাঝেই তাঁর উপস্থিতি ও সেই বিরহের সান্ত্বনা পেতে আমরা ভক্তদের অনুপ্রাণিত করি।
আমরা শ্রীল প্রভুপাদের অনুকম্পা তাঁর সকল অনুসারীদের সঙ্গে- যারা তাঁর থেকে দীক্ষা গ্রহণ করেছেন এবং আর যারা বিভিন্ন উপায়ে তাঁকে অনুসরণ করছেন- সকলের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিই।
আমরা ভক্তদের শ্রীল প্রভুপাদের পদমর্যাদা ও অবস্থান এবং আমাদের প্রধানতম শিক্ষাগুরু ও বিরহের মধ্য দিয়ে তাঁর সঙ্গে আমাদের শিষ্যত্বের সম্পর্কের কথা শিক্ষা দিই।
পরবর্তী প্রজন্মের মধ্য দিয়ে শ্রীল প্রভুপাদের উত্তরাধিকারকে উত্তরোত্তর প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে আমরা এক শিক্ষা পরম্পরা স্থাপন করি।
শ্রীল প্রভুপাদ হলেন ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা আচার্য
শ্রীল প্রভুপাদের বাণীই হচ্ছে ইসকনের সদস্যদের যুক্ত ও তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত রাখতে এবং এইভাবে তাঁর এই সংস্থাকে তিনি যেমনটা দেখতে চেয়েছিলেন, বর্তমানে ও ভবিষ্যতেও ঠিক তেমনভাবে গড়ে তোলার প্রধানতম চালিকা শক্তি।
শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাবলী ও তাঁর প্রচার কৌশলগুলোকে কেন্দ্র করে বৈষ্ণব ও ব্রাহ্মণোচিত আদর্শের টেকসই উন্নয়ন বা বাণী সংস্কৃতির সঙ্গে আমরাও সহমত পোষণ করি।
ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা আচার্যরূপে শ্রীল প্রভুপাদের পদমর্যাদা এবং তাঁর ও তাঁর আন্দলনের প্রতি আমাদের সেবা করার সত্যটি আমরা ভক্তদের শিক্ষা দিয়ে থাকি।
শ্রীল প্রভুপাদ হলেন বিশ্ব আচার্য
বিশ্বের সমস্ত দেশের সর্বত্র শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাবলীর বর্তমান প্রাসঙ্গিকতা স্থাপন করার মাধ্যমে আমরা বিশ্ব আচার্য হিসেবে শ্রীল প্রভুপাদের পারমার্থিক মর্যাদার বৈশ্বিক সচেতনতা বৃদ্ধি করি।
শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষার প্রশংসা ও সম্মান করার এক সংস্কৃতিকে আমরা উৎসাহ দিয়ে থাকি যা কি না চরমে কৃষ্ণভাবনামৃতে সারা বিশ্বের জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণে পর্যবসিত হবে।
আমরা উপলব্ধি করি যে, যে পরিসরে শ্রীল প্রভুপাদ একটি গৃহ নির্মাণ করেছেন যেখানে সারা বিশ্ব যুগপৎভাবে ভিত্তি ও ছাদ হিসেবে তাঁর বাণীর মাধ্যমে জীবন ধারণ করতে পারবে – আশ্রয় – যেটি এই গৃহকে সুরক্ষা দেবে।
শ্রীল প্রভুপাদের স্বাভাবিক পদমর্যাদা স্থাপন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
এই আন্দোলন ও তাঁর ভক্তদের সঙ্গে শ্রীল প্রভুপাদের স্বাভাবিক পদমর্যাদার সঞ্চালন ও চর্চার জন্য আমাদের ইসকন সংস্থায় শিক্ষামূলক পদক্ষেপ, রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা এবং সামাজিক সংস্কৃতির প্রয়োজন রয়েছে। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বা কেবল ইচ্ছাময় চিন্তার দ্বারাই সম্পন্ন হবে না। এটি কেবল শুদ্ধহৃদয় ভক্তদের বুদ্ধিদীপ্ত, সামঞ্জস্যপূর্ণ ও পারস্পরিক সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার দ্বারাই সম্ভব।
শ্রীল প্রভুপাদের স্বাভাবিক অবস্থান গোপন করা নিয়ে এই আন্দোলনের মধ্যে পাঁচটি মূল প্রতিবন্ধকতাঃ
১. অজ্ঞানতা শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষার প্রতি - তিনি উপদেশ-নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন কিন্তু আমরা জানি না যে সেইগুলি বাস্তবে রয়েছে।
২. উদাসীনতা শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষার প্রতি - আমরা জানি যে শিক্ষাগুলি রয়েছে কিন্তু আমরা সেইগুলির পরোয়া করি না, আমরা তা উপেক্ষা করি।
৩. ভুল বোঝা শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষার প্রতি - আমরা সেইগুলি ঐকান্তিকভাবে প্রয়োগ করি কিন্তু আমাদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস বা অপরিপক্কতার কারণে সেইগুলি ভুল প্রয়োগ হয়।
৪. বিশ্বাসের অভাব শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষার প্রতি – আমাদের হৃদয়ের গভীরে আমরা এই শিক্ষায় পুরোপুরি দৃঢ়বিশ্বাসী নই এবং সেগুলিকে 'আকাশকুসুম' ভাবি, আমরা ভাবি আধুনিক বিশ্বের জন্য এগুলো বাস্তবিক নয় আবার ব্যবহারিকও নয়।
৬. প্রতিযোগিতা শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষার সাথে - পূর্ণ বিশ্বাস ও উৎসাহের সাথে আমরা শ্রীল প্রভুপাদের নির্দেশের থেকে একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন দিকে চলে যাই এবং তা করতে গিয়ে আমরা অন্যদেরকেও আমাদের সাথে সেই দিকে যেতে প্রভাবিত করি।
মন্তব্য
আমরা বিশ্বাস করি যে এই সমস্ত প্রতিবন্ধকতাগুলি শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষা সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান বৃদ্ধি ও তার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে যত্ন করতে পারে এমন এক অবিচ্ছেদ্য ও সুসংবদ্ধ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে জয় করা সম্ভব। এটি কেবল তখনই সফল হবে যখন শ্রীল প্রভুপাদের বাণীকে ভিত্তি করে গড়ে ওঠা একটি সংস্কৃতি তৈরি করার জন্য এক ঐকান্তিক নেতৃত্বের দ্বারা তা পরিচালিত হবে। এইভাবে শ্রীল প্রভুপাদের স্বাভাবিক পদমর্যাদা সমস্ত প্রজন্মের ভক্তদের কাছে আপনা থেকেই স্পষ্ট হবে ও তা রয়ে যাবে।
ভক্তরা হলেন শ্রীল প্রভুপাদের অঙ্গসমূহ, ইসকন তাঁর শরীর এবং তাঁর বাণী হল তাঁর আত্মা
তোমরা সকলেই হলে আমার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গসমূহ। তোমরা যদি সহযোগিতা না কর, আমার জীবন ব্যর্থ হয়ে যাবে। দেহের অঙ্গ ও জীবন পরস্পরের সাথে সম্পর্কিত। প্রাণ ছাড়া অঙ্গগুলি কাজ করতে পারে না আর অঙ্গগুলি ছাড়াও প্রাণ নিষ্ক্রিয়।– ব্রহ্মানন্দকে লেখা শ্রীল প্রভুপাদের পত্র, ১৭ জুলাই ১৯৬৮
আমার খুব ইচ্ছে করে যদি এমন হতো যে ইতিহাসে এই কথাটি লেখা থাকতো যে একমাত্র এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনই সারা বিশ্বকে উদ্ধার করার কৃতিত্বের দাবীদার। বাস্তবিকভাবেই আমাদের এই আন্দোলনটিই কেবল সারা বিশ্বকে মহাধ্বংসের হাত থেকে উদ্ধার করার একমাত্র আশা।– বোম্বে থেকে সুচন্দ্রকে লেখা শ্রীল প্রভুপাদের পত্র ১ জানুয়ারী ১৯৭২
তোমাকে এটি সবসময়ই মনে রাখা উচিত যে আমরা যাই করছি না কেন এইটি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ থেকে পরম্পরা ধারায় নেমে আসা পন্থা। সেই জন্য আমাদের উচিত কিভাবে দৈহিক উপস্থাপনার চেয়ে চিন্ময় বার্তার ওপর অধিক প্রীতিপূর্ণ মনোভাব থাকা। যখন আমরা এই বার্তটিকে ভালোবাসবো ও তাঁর সেবা করব, তখন তাঁর দৈহিক রূপের প্রতি ভক্তিমূলক প্রেম আপনা থেকে হয়ে যাবে।– লস এঞ্জেলেস থেকে গোবিন্দ দাসীকে লেখা শ্রীল প্রভুপাদের পত্র, ৭ এপ্রিল ১৯৭০
মন্তব্য
আমরা শ্রীল প্রভুপাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। তাঁর সর্বোচ্চ সন্তুষ্টির লক্ষ্যে তাঁর সঙ্গে সার্থকভাবে সহযোগিতা করতে তাঁর মতো চেতনাতেই আমাদের সকলকে এক হতে হবে। শ্রীল প্রভুপাদের বাণীতে আমাদের পূর্ণরূপে নিমগ্ন হয়ে, তাঁর বাণীর প্রতি দৃঢ়বিশ্বাসী ও সেই বাণীর ব্যক্তিগত অনুশীলনের মধ্য দিয়ে এই প্রীতিপূর্ণ ঐক্য গড়ে উঠবে। আমাদের সকলের সার্বিক সাফল্যের কৌশল হচ্ছে শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাবলীকে আত্তীকরণ করা এবং এই কৃষ্ণভাবনামৃতে আমরা যা কিছুই করছি না কেন, তার একেবারে কেন্দ্রস্থলে সেই শিক্ষাকে স্থাপন করা। এইভাবে শ্রীল প্রভুপাদের ভক্তগণ ব্যক্তিগতভাবে আরও সমৃদ্ধ হবে এবং সারা বিশ্বকে মহা ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার শ্রীল প্রভুপাদের বাসনা পূরণার্থে শক্তিশালী ইসকন নির্মাণ করার প্রতি সেবা প্রদান করতে অনুপ্রাণিত করবে। ভক্তদের জয়, জিবিসিদের জয়, ইসকনের জয়, শ্রীল প্রভুপাদের জয় এবং শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জয়। সেখানে পরাজিত বলে কেউ নেই।
পরম্পরা ধারার শিক্ষা বিতরণ
১৪৮৬ এই পৃথিবীকে কৃষ্ণভাবনামৃত শিক্ষা দেয়ার লক্ষ্যে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর আবির্ভাব - ৫৩৩ বছর পূর্বে
১৪৮৮ কৃষ্ণভাবনাময় সাহিত্য রচনার উদ্দেশ্যে শ্রীল সনাতন গোস্বামীর আবির্ভাব - ৫৩১ বছর পূর্বে
১৪৮৯ কৃষ্ণভাবনাময় সাহিত্য রচনার উদ্দেশ্যে শ্রীল রূপ গোস্বামীর আবির্ভাব - ৫৩০ বছর পূর্বে
১৪৮৯ কৃষ্ণভাবনাময় সাহিত্য রচনার উদ্দেশ্যে শ্রীল রঘুনাথ দাস গোস্বামীর আবির্ভাব - ৫২৪ বছর পূর্বে
১৫০০ সারা ইউরোপ জুড়ে বই বিতরণে বিপ্লব আনতে যান্ত্রিক ছাপাখানার সূচনা - ৫২০ বছর পূর্বে
১৫১৩ কৃষ্ণভাবনাময় সাহিত্য রচনার উদ্দেশ্যে শ্রীল জীব গোস্বামীর আবির্ভাব - ৫০৬ বছর পূর্বে
১৮৩৪ কৃষ্ণভাবনাময় সাহিত্য রচনার উদ্দেশ্যে শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুরের আবির্ভাব - ১৮৫ বছর পূর্বে
১৮৭৪ কৃষ্ণভাবনাময় সাহিত্য রচনার উদ্দেশ্যে শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুরের আবির্ভাব - ১৪৫ বছর পূর্বে
১৮৯৬ কৃষ্ণভাবনাময় সাহিত্য রচনার উদ্দেশ্যে শ্রীল প্রভুপাদের আবির্ভাব - ১২৩ বছর পূর্বে
১৯১৪ শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর "বৃহৎ মৃদঙ্গ" শব্দটি উদ্ভাবন করলে - ১০৫ বছর পূর্বে
১৯২২ প্রথম বারের মত শ্রীল প্রভুপাদ শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরের সাক্ষাৎ লাভ করেন এবং তৎক্ষণাৎ ইংরেজি ভাষায় প্রচার করার অনুরোধ প্রাপ্ত হন - ৯৭ বছর পূর্বে
১৯৩৫ শ্রীল প্রভুপাদ কৃষ্ণভাবনাময় সাহিত্য রচনার আদেশ লাভ করলেন - ৮৪ বছর পূর্বে
১৯৪৪ শ্রীল প্রভুপাদ ভগবৎ দর্শন পত্রিকা ছাপাতে শুরু করেন - ৭৫ বছর পূর্বে
১৯৫৬ শ্রীল প্রভুপাদ গ্রন্থ লেখার উদ্দেশ্যে শ্রীবৃন্দাবন ধামে এলেন - ৬৩ বছর পূর্বে
১৯৬২ শ্রীল প্রভুপাদ শ্রীমদ্ভাগবতের প্রথম খণ্ড ছাপালেন - ৫৭ বছর পূর্বে
১৯৬৫ পারমার্থিক গ্রন্থ বিতরণের লক্ষ্যে শ্রীল প্রভুপাদের পাশ্চাত্যে আগমন - ৫৪ বছর পূর্বে
১৯৬৮ শ্রীল প্রভুপাদ তাঁর ভগবদ্গীতা যথাযথ-এর সংক্ষিপ্ত সংস্করণ প্রকাশ করলেন - ৫২ বছর পূর্বে
১৯৭২ শ্রীল প্রভুপাদ তাঁর ভগবদ্গীতা যথাযথ-এর পূর্ণ সংস্করণ প্রকাশ করলেন - ৪৭ বছর পূর্বে
১৯৭২ শ্রীল প্রভুপাদ তাঁর গ্রন্থসমূহ ছাপানোর জন্য ভক্তিবেদান্ত বুক ট্রাস্ট বা বিবিটি স্থাপন করলেন - ৪৭ বছর পূর্বে
১৯৭৪ শ্রীল প্রভুপাদের শিষ্যবৃন্দ অত্যন্ত ঐকান্তিক ও ব্যাপকভাবে গ্রন্থ বিতরণ শুরু করলেন - ৪৫ বছর পূর্বে
১৯৭৫ শ্রীল প্রভুপাদ শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত সম্পন্ন করলেন - ৪৪ বছর পূর্বে
১৯৭৭শ্রীল প্রভুপাদ কথা বলা বন্ধ করলেন এবং আমাদের দায়িত্বে তাঁর বাণীসমূহ রেখে গেলেন- ৪২ বছর পূর্বে
১৯৭৮ ভক্তিবেদান্ত আর্কাইভস প্রতিষ্ঠা হল – ৪১ বছর পূর্বে
১৯৮৬ সমস্ত কিছু ডিজিটালভাবে প্রতি একজনের জন্য একটি করে CD-ROM এ রূপ পেল – ৩৩ বছর পূর্বে
১৯৯১ বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাল বা ইন্টারনেট (World Wide Web) বা বৃহৎ বৃহৎ বৃহৎ মৃদঙ্গ-এর প্রতিষ্ঠা হল – ২৮ বছর পূর্বে
১৯৯২ ভক্তিবেদান্ত বেদবেইস (Bhaktivedanta VedaBase) এর প্রথম সংস্করণ নির্মাণ হল – ২৭ বছর আগে
২০০২ ডিজিটাল যুগের সূচনা - বিশ্বব্যাপী পুরনো এনালগ পদ্ধতির জায়গা করে নিল ডিজিটাল সংরক্ষণ ব্যবস্থা - ১৭ বছর পূর্বে
২০০৭ ডিজিটালভাবে সংরক্ষিত বিষয়সমূহ প্রতি একজনের জন্য ৬১ টি করে CD-ROM এ রূপ পেল, সর্বমোট ৪২৭ বিলিয়ন CD-ROM (পরিপূর্ণ) - ১২ বছর পূর্বে
২০০৭ ইন্টারনেটে শ্রীল প্রভুপাদের বাণীমন্দির অর্থাৎ বাণীপিডিয়ার নির্মাণকাজের সূচনা - ১২ বছর পূর্বে
২০১০ শ্রীধাম মায়াপুরে শ্রীল প্রভুপাদের বপু-মন্দির বা বৈদিক তারকামন্ডল মন্দিরের নির্মাণকাজের সূচনা - ৯ বছর পূর্বে
২০১২ বাণীপিডিয়া ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৭৫৩-টি উদ্ধৃতি, ১ লক্ষ ৮ হাজার ৯৭১-টি পৃষ্ঠা এবং ১৩ হাজার ৯৪৬-টি বিভিন্ন ভাগে পৌঁছল - ৭ বছর পূর্বে
২০১৩ ৪৮ বছরে ভক্তদের দ্বারা শ্রীল প্রভুপাদের ৫০ কোটি গ্রন্থ বিতরণ – প্রতিদিন গড়ে ২৮ হাজার ৫৩৮ টি গ্রন্থ - ৬ বছর পূর্বে
২০১৯ ২১ মার্চ গৌর পূর্ণিমার দিন মধ্য ইউরোপীয় সময় সকাল ৭.১৫ মিনিটে বাণীপিডিয়া শ্রীল প্রভুপাদের বাণী উপস্থিতিকে আহ্বান জানাতে ও তার পূর্ণ প্রকাশ করতে সকল ভক্তদের সহযোগিতা করতে আমন্ত্রণ জানানোর ১১ বৎসর পূর্তি উদযাপন করল। বাণীপিডিয়া এখন ৯৩ টি ভাষায় ৪৫,৫৮৮ টি ভাগ, ২ লক্ষ ৮২ হাজার ২৯৭ টি পৃষ্ঠা, ২১ লক্ষেরও অধিক উদ্ধৃতি উপহার দিচ্ছে। এই অর্জন সম্ভব হয়েছে ১২২০-র ও অধিক সংখ্যক ভক্তদের দেয়া ২ লক্ষ ৯৫ হাজার ঘণ্টারও অধিক সময়ের বাণী সেবার দ্বারা। শ্রীল প্রভুপাদের বাণীমন্দির তৈরি করার জন্য আমাদের এখনও অনেক দূর যেতে হবে। এইভাবে আমরা ভক্তদেরকে এই মহিমান্বিত উদ্দেশ্যে অংশ গ্রহণ করার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
মন্তব্য
আধুনিক কালের কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনের শিরোনামের অধীনে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর আন্দোলনের বিকাশ ভগবৎ সেবা সম্পাদনের এক অত্যন্ত আনন্দ উত্তেজনাময় মুহূর্ত।
আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের প্রতিষ্ঠাতা আচার্য শ্রীল প্রভুপাদ তাঁর অনুবাদকর্ম, ভক্তিবেদান্ত তাৎপর্য, প্রবচন, কথোপকথন এবং পত্রের মাধ্যমে সারা বিশ্বের দরবারে এক জীবন পরিবর্তনের ঘটনা ঘটিয়েছেন। এখানেই রয়েছে সমগ্র মানব সমাজের পুনরায় আধ্যাত্মিকীকরণের মূল চাবিকাঠি।
বাণী, ব্যক্তিগত সঙ্গ এবং বিরহের মধ্যে সেবা-উদ্ধৃতি
আমার গুরুমহারাজ ১৯৩৬ সালে অপ্রকট হয়েছিলেন। আর আমি এই আন্দোলন শুরু করি ১৯৬৫ সালে, ৩০ বছর পর। তাহলে? আমি আমার গুরুদেবের কৃপা লাভ করছি। এই হচ্ছে বাণী। এমনকি যদি গুরু দৈহিকভাবে উপস্থিত নাও থাকেন, যদি তুমি তাঁর বাণী পালন কর, তাহলেই তুমি সাহায্য প্রাপ্ত হবে।– শ্রীল প্রভুপাদের প্রাতঃভ্রমণ কথোপকথন, ২১ জুলাই ১৯৭৫
গুরুদেবের দৈহিক অনুপস্থিতির সময় বাণীসেবা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আমার গুরুদেব শ্রীল সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুর দৈহিকভাবে উপস্থিত নেই বলে মনে হতে পারে। কিন্তু যেহেতু আমি এখনও তাঁর নির্দেশাবলীর সেবা করার চেষ্টা করে চলেছি, আমি কখনও তাঁর থেকে বিচ্ছিন্ন অনুভব করি না। আমি আশা করছি তোমরা সকলেই এই সমস্ত উপদেশ-নির্দেশ অনুসরণ করে চলবে। – টোকিও থেকে করন্ধর (জিবিসি)-কে লেখা শ্রীল প্রভুপাদের পত্র, ২২ আগস্ট ১৯৭০
শুরু থেকেই আমি কঠোরভাবে নির্বিশেষবাদীদের বিরুদ্ধে এবং আমার সমস্ত গ্রন্থগুলোতে এই বিষয়ের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। সুতরাং আমার মুখনিঃসৃত আদেশ এবং আমার লেখা গ্রন্থগুলো সর্বদা তোমাদের সেবায় রয়েছে। এখন তোমরা জিবিসি-রা সেইগুলি পর্যালোচনা কর এবং সেই সম্পর্কে স্বচ্ছ ও পোক্ত ধারণা নাও। তাহলে আর কোনও উৎপাত থাকবে না। উৎপাত সৃষ্টি হয় অজ্ঞানতা থেকে। যেখানে অজ্ঞানতা নেই সেখানে কোনও উৎপাতও নেই। – কোলকাতা থেকে হয়গ্রীব দাস-কে লেখা শ্রীল প্রভুপাদের পত্র (জিবিসি), ২২ আগস্ট ১৯৭০
গুরুদেবের সাথে দৈহিক সান্নিধ্যের কথা বলতে গেলে, আমি মাত্র ৪-৫ বার আমার গুরুদেবের ব্যক্তিগত সান্নিধ্য পেয়েছি। কিন্তু আমি কখনও তাঁর সঙ্গ পরিত্যাগ করি নি, এমন কি এক মুহূর্তের জন্যও নয়। যেহেতু আমি তাঁর নির্দেশ পালন করছিলাম, আমি কখনও তাঁর থেকে বিচ্ছিন্ন অনুভব করি নি। – কোলকাতা থেকে শতধন্য দাস-কে লেখা শ্রীল প্রভুপাদের পত্র, ২০ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২
দয়া করে বিরহের মধ্য দিয়ে সুখী হও। আমি ১৯৩৬ সাল থেকে আমার গুরু মহারাজের থেকে (দৈহিকভাবে) আলাদা হয়ে আছি। কিন্তু যতক্ষণ আমি তাঁর নির্দেশ আদেশ অনুযায়ী কাজ করে যাব, আমি সর্বদা তাঁর সঙ্গেই রয়েছি। সুতরাং আমরাও ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে সন্তুষ্ট করার জন্য এইভাবে কাজ করে যাব এবং এইভাবে বিরহের অনুভব চিন্ময় আনন্দে রূপান্তরিত হবে। – বোস্টন থেকে উদ্ধব দাস (ইস্কন প্রেস)-কে লেখা শ্রীল প্রভুপাদের পত্র, ৩ মে ১৯৬৮
মন্তব্য
শ্রীল প্রভুপাদ নিম্নোক্ত বক্তব্যগুলোর মধ্যে বহু সত্য প্রকাশ করেছেন।
শ্রীল প্রভুপাদের ব্যক্তিগত নির্দেশনা সর্বদাই আমাদের সঙ্গে রয়েছে।
আমাদের শ্রীল প্রভুপাদের বিরহের মধ্যেই আনন্দ অনুভব করা উচিত।
শ্রীল প্রভুপাদের দৈহিক অনুপস্থিতির সময় তাঁর বাণীসেবাই অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
শ্রীল প্রভুপাদ খুব কমই তাঁর গুরুদেবের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন।
শ্রীল প্রভুপাদের শ্রীমুখনিঃসৃত বাণী এবং তাঁর গ্রন্থাবলী আমাদের সকলের সেবাকার্যে রয়েছে।
শ্রীল প্রভুপাদের বিরহ এক চিন্ময় আনন্দে রূপ নেয়।
শ্রীল প্রভুপাদের দৈহিক অনুপস্থিতির সময় যদি আমরা তাঁর বাণীসেবা করি, তবে তা থেকে আমরা সাহায্য পাব।
শ্রীল প্রভুপাদ এমন কি এক মুহূর্তের জন্যও তাঁর গুরুদেব ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরের সঙ্গ ত্যাগ করেন নি।
শ্রীল প্রভুপাদের বাণী এবং তাঁর গ্রন্থাবলীর পুঙ্খানুপুঙ্খ অধ্যয়নের দ্বারা আমরা অত্যন্ত স্বচ্ছ এবং শক্তিশালী ধারণা পেতে পারি।
শ্রীল প্রভুপাদের উপদেশাবলীর পালনের দ্বারা আমরা কখনই তাঁর থেকে বিচ্ছিন্ন অনুভব করব না।
শ্রীল প্রভুপাদ আমাদের থেকে এই প্রত্যাশা করেন যে তাঁর শক্তিপ্রাপ্ত শিক্ষা-শিষ্য হওয়ার জন্য আমরা যেন তাঁর এই সমস্ত নির্দেশাবলী যথাযথভাবে পালন করি।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বার্তা প্রচারের জন্য মিডিয়া বা গণ মাধ্যমের ব্যবহার
সুতরাং ছাপাখানা এবং অন্যান্য আধুনিক প্রচারমাধ্যমের দ্বারা আমার গ্রন্থগুলো প্রচারের জন্য তোমাদের এই ব্যবস্থাপনা এগিয়ে নিয়ে যাও; এতে করে শ্রীকৃষ্ণ নিশ্চিতভাবেই তোমাদের প্রতি প্রসন্ন হবেন। আমরা শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে বলার জন্য সমস্ত কিছুর- দূরদর্শন, বেতার, চলচ্চিত্র অথবা অন্য যে কোন কিছুরই উপযোগ করতে পারি।– ভগবান দাস (জিবিসি)-কে লেখা শ্রীল প্রভুপাদের পত্র, ২৪ নভেম্বর ১৯৭০
দূরদর্শন ও বেতারে তোমার পরিচালিত অনুষ্ঠানগুলি দেখে আমি অত্যন্ত উৎসাহিত হয়েছি। যে সমস্ত গণমাধ্যমগুলি সুলভ আছে সেইসবের মাধ্যমে যতদূর সম্ভব আমাদের প্রচার কার্যক্রমকে বিস্তার করতে চেষ্টা কর। আমরা আধুনিক কালের বৈষ্ণব এবং যত ধরণের মাধ্যম সম্ভব সেই সবের দ্বারা আমাদের অবশ্যই আরও জোরদারভাবে প্রচার করা উচিত।– রূপানুগ দাস (জিবিসি)-কে লেখা শ্রীল প্রভুপাদের পত্র, ৩০ ডিসেম্বর ১৯৭১
যদি সবকিছু এমনভাবে আয়োজন করতে পার যে আমি কেবল এক জায়গায় বসে থাকব যাতে সারা পৃথিবী আমাকে দেখতে পারে এবং আমি সারা বিশ্বের কাছে আমার কথা বলতে পারি, তাহলে আমি কখনই লস্ এঞ্জেলেস্ ছেড়ে যাব না। সেইটিই হবে তোমাদের এই লস্ এঞ্জেলেস্ মন্দিরের পরিপূর্ণতা। কৃষ্ণভাবনামৃত অনুষ্ঠানের বন্যায় তোমাদের দেশের গণ মাধ্যমগুলোকে ভাসিয়ে দেয়ার এবং তোমাদের নেতৃত্বে সেইটির বাস্তব রূপায়নের এই প্রস্তাবে আমি খুবই উৎসাহিত বোধ করছি। আমি সম্পূর্ণরূপেই অত্যন্ত খুশি। - সিদ্ধেশ্বর ও কৃষ্ণকান্তি দাস-কে লেখা শ্রীল প্রভুপাদের পত্র, ১৬ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২
তোমার উচিত দূরদর্শনের এই সব ব্যক্তিদের নিয়ে এসে তাদের দ্বারা আমাদের এই গ্রন্থগুলো দেখাতে এবং গণমাধ্যমে সেগুলির বিজ্ঞাপন দেয়ার চেষ্টা করা। সেটিই হবে গণ মাধ্যমের সাহায্যে আমাদের প্রচার প্রচেষ্টার আসল সার্থকতা।- মুকুন্দ দাসকে লেখা শ্রীল প্রভুপাদের পত্র, ২১ ফেব্রুয়ারী ১৯৭৩
তাঁর গুরুদেবের পদাঙ্ক অনুসরণ করে শ্রীল প্রভুপাদও জানতেন কিভাবে সমস্ত কিছু ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবায় লাগানো যায়।
শ্রীল প্রভুপাদ চেয়েছিলেন যেন সারা বিশ্ব তাঁকে দেখতে পায় এবং তিনি যেন সারা বিশ্বের কাছে কথা বলতে পারেন।
শ্রীল প্রভুপাদ আমাদের কৃষ্ণভাবনাময় কার্যক্রমগুলোর দ্বারা সমস্ত গণমাধ্যমকে প্লাবিত করতে চেয়েছিলেন।
শ্রীল প্রভুপাদ চেয়েছিলেন তাঁর গ্রন্থসমহূর ছাপাখানা এবং আরও সমস্ত আধুনিক গণমাধ্যমের দ্বারা বিস্তার লাভ করুক।
শ্রীল প্রভুপাদ তাঁর প্রদত্ত শিক্ষাসমূহের বিষয়ভিত্তিকভাবে আভিধানিক রূপ দেয়ার পরিকল্পনা শুনে খুশি হয়েছিলেন।
শ্রীল প্রভুপাদ বলেছেন সহজেই পাওয়া যাচ্ছে এমন সব গণমাধ্যমের সদব্যবহার করতে।
শ্রীল প্রভুপাদ বলেন যে আমরা হচ্ছি আধুনিক যুগের বৈষ্ণব এবং আমাদের অবশ্যই এই সমস্ত মাধ্যমের দ্বারা অত্যন্ত জোরালোভাবে প্রচার করা উচিত।
শ্রীল প্রভুপাদ বলেন শ্রীকৃষ্ণের সম্পর্কে বলার জন্য আমরা সবকিছুই- দূরদর্শন, বেতার, চলচ্চিত্র অথবা আর যা কিছুই পাওয়া যাচ্ছে - ব্যবহার করতে পারি।
শ্রীল প্রভুপাদ বলেন যে এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনের আরও বিস্তার ঘটাতে গণমাধ্যমগুলো এক অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করতে পারে।
আধুনিক গণমাধ্যম, আধুনিক সুবিধাসমূহ
১৯৭০ সালে শ্রীল প্রভুপাদের জন্য আধুনিক মাধ্যম এবং গণমাধ্যম বলতে ছাপাখানা, বেতার, দূরদর্শন এবং চলচিত্রকেই বোঝানো হত। ওনার তিরোভাবের পর গণমাধ্যমের চেহারা আমূল পরিবর্তন ঘটেছে যেখানে আজ এন্ড্রয়েড ফোন, আন্তর্জালিক সংরক্ষণ ব্যবস্থা ও গণনা, ই-বই পড়ুয়া, ই-বাণিজ্য, পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ামূলক দূরদর্শন এবং খেলা, অনলাইন ছাপা, পোডকাস্ট এবং আরএসএস ফিড, সামাজিক যোগাযোগ সাইট, চলমান মিডিয়া সেবা, টাচ্-স্ক্রীন প্রযুক্তি, ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ এবং বিতরণ যেবা এবং তারবিহীন প্রযুক্তি-ইত্যাদির সূচনা হয়েছে।
২০০৭ সাল থেকে আমরা, শ্রীল প্রভুপাদের দৃষ্টান্ত অনুযায়ী তাঁর বাণীসমূহকে সংকলন, সূচীকরণ, দলবদ্ধকরণ এবং বিতরণের জন্য আধুনিক গণমাধ্যম প্রযুক্তি ব্যবহার করছি।
বাণীপিডিয়ার লক্ষ্য হচ্ছে এমনভাবে শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাগুলোকে ইন্টারনেটে আরও দৃশ্যমান ও সুলভ করে তুলতে যেখানে এইসব ব্যক্তিরা যেন সবকিছু একটি মুক্ত, প্রামাণিক এবং এক জায়গায় সবকিছু পেতে পারেন
• ইস্কন প্রচারকবৃন্দ
• ইস্কন নেতা ও ব্যবস্থাপকবৃন্দ
• ভক্তিমূলক শিক্ষাক্রম অধ্যয়নকারী শিক্ষার্থীগণ
• তাদের জ্ঞানকে আরও গভীর করতে আগ্রহী ভক্তবৃন্দ
• আন্ত-বিশ্বাসমূলক আলোচনায় নিযুক্ত ভক্তগণ
• শিক্ষাক্রম উন্নয়নকারীগণ
• শ্রীল প্রভুপাদের বিরহ অনুভবকারী ভক্তগণ
• কার্যনির্বাহী নেতৃবৃন্দ
• শিক্ষাবিদ্বৃন্দ
• ধর্মীয় শিক্ষা শিক্ষক ও ছাত্রগণ
• লেখকবৃন্দ
• পারমার্থিক জ্ঞানান্বেষণকারী
• বর্তমান সামাজিক বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তক ব্যক্তিবর্গ
• ঐতিহাসিকগণ
মন্তব্য
আজকের বিশ্বে শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাকে আরও সুলভ ও মুখ্য করে তোলার লক্ষ্যে এখনও অনেক কিছু করার বাকী রয়ে গেছে। পারস্পরিক সহযোগিতামূলক ইন্টারনেট প্রযুক্তি অতীতের সমস্ত সাফল্যকে ছাপিয়ে আরও অনেকদূর সামনে এগিয়ে যেতে আমাদের সুযোগ করে দেবে।
বাণীসেবা – শ্রীল প্রভুপাদের বাণী সেবা করার এক পবিত্র কার্য
শ্রীল প্রভুপাদ ১৯৭৭ সালের ১৪ই নভেম্বর কথা বলা বন্ধ করেছিলেন, কিন্তু তিনি যা বাণী দিয়ে গিয়েছেন তা আমাদের জন্য সর্বদাই চিরহরিৎ থাকবে। যাই হোক, এই সমস্ত শিক্ষাসমূহ এখনও মৌলিক অবস্থায় নেই বা এখনও তা খুব সহজেই তাঁর সমস্ত ভক্তদের কাছে সুলভ নয়। শ্রীল প্রভুপাদের অনুসারীদের সকলের কাছে তাঁর শিক্ষাবলী সংরক্ষণ ও বিতরণের একটি পবিত্র দায়িত্ব রয়েছে। তাই আমরা আপনাদের এই বাণীসেবাটি করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
সর্বদা এই কথা মনে রেখ যে আমার এই মহতী কার্য সম্পাদনের লক্ষ্যে আমি যে কয়েকজনকে নিযুক্ত করেছি তুমি তাদেরই একজন এবং তোমার সামনে যে লক্ষ্য রয়েছে তা অত্যন্ত বিশাল। তাই সর্বদাই শ্রীকৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা কর যেন আমি যা করছি ঠিক সেইভাবে করার মাধ্যমে এই লক্ষ্যকে সম্পাদন করার জন্য তিনি তোমাকে শক্তিদান করেন। আমার প্রথম কাজ হল ভক্তদের যথার্থ জ্ঞান দান করা ও তাদেরকে ভগবৎসেবায় নিযুক্ত করা। সুতরাং এইটি তোমার জন্য এতো কঠিন কিছু নয়। আমি তোমাদের সবকিছুই দিয়েছি। আমার গ্রন্থগুলো অধ্যয়ন কর ও সেখান থেকে বল। এতে করে অনেক নতুন কিছু বেরিয়ে আসবে। আমাদের প্রচুর গ্রন্থ রয়েছে, তাই যদি তোমরা সেই সব থেকে আগামী এক হাজার বছর ধরেও প্রচার করতে থাকো, তাহলেও তার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ মজুদ রয়েছে। – সৎস্বরূপ দাস (জিবিসি)-এর কাছে লেখা শ্রীল প্রভুপাদের পত্র, ১৬ জুন১৯৭২
১৯৭২ সালের জুন মাসে শ্রীল প্রভুপাদ বলেছিলেন"আমাদের এতো গ্রন্থ রয়েছে" যে আমাদের কাছে "যথেষ্ট পরিমাণ মজুদ" রয়েছে "আগামী ১০০০ বছরের প্রচারের জন্য।" সেই সময়ে মাত্র ১০টি শিরোনামের গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল সুতরাং পরবর্তীতে জুলাই ১৯৭২ সাল থেকে নভেম্বর ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত শ্রীল প্রভুপাদ যত গ্রন্থ ছাপিয়েছেন তার দ্বারা খুব সহজেই আগামী ৫০০০ বছরের প্রচার করার মতো বিস্তৃত হয়েছে। যদি আমরা এর সঙ্গে ওনার মৌখিক উপদেশ এবং পত্রগুলো যোগ করি, তাহলে সেই মজুদ সহজেই ১০,০০০ বছরের জন্য বিস্তৃত হয়ে যাবে। আমাদের এই সমস্ত শিক্ষাবলী সকলের কাছে সুলভ এবং সুবোধ্য করে দেয়া উচিত যাতে করে সেইগুলো এখন ও ভবিষ্যতের সমস্ত দিনগুলোর জন্য "প্রচার করা" যায়।
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বাণী প্রচার করার শ্রীল প্রভুপাদের যে অশেষ উৎসাহ এবং দৃঢ়তা ছিল সে সম্পর্কে তা সন্দেহাতীত। আমাদের মাঝ থেকে তাঁর দৈহিক তিরোভাব কোন ব্যাপারই নয়। তিনি তাঁর শিক্ষাবলীর মাঝে চিরকাল রয়েছেন এবং এখন এই ডিজিটাল মাধ্যমে তিনি বরং এখন তাঁর দৈহিক উপস্থিতিকালীন সময়ের চেয়েও আরও ব্যপকভাবে প্রচার করে যাচ্ছেন। চলুন আমরা, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর কৃপার ওপর সম্পূর্ণ নির্ভর করে, শ্রীল প্রভুপাদের বাণী-মিশনকে আঁকড়ে ধরি এবং আগামী ১০,০০০ হাজার বছর দক্ষভাবে প্রচারের জন্য পূর্বের চেয়েও আরও দৃঢ় হই।
গত দশ বছর ধরে নির্মাণকাঠামোটি বানিয়েছি এবং এখন আমরা বৃটিশ সাম্রাজ্যের চেয়েও বৃহদাকার হয়েছি। এমন কি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যও আমাদের মতো এতোটা বিস্তারশীল ছিল না। ওঁদের কেবল পৃথিবীর একটি অংশমাত্র ছিল আর আমরা বিস্তার এখনও সম্পূর্ণও হয় নি। আমাদের অবশ্যই সীমাহীনভাবে আরও আরও বিস্তৃত হওয়া উচিত। কিন্তু তোমাদেরকে আমার একটি কথা অবশ্যই মনে করিয়ে দেয়া উচিত যে আমাকে শ্রীমদ্ভাগবতের অনুবাদ সম্পূর্ণ করতে হবে। এটিই হচ্ছে সর্বোত্তম অবদান; আমাদের গ্রন্থগুলি আমাদেরকে এক অত্যন্ত সম্মানজনক অবস্থান দিয়েছে। লোকেদের মধ্যে এইসব চার্চ বা মন্দির পূজা পদ্ধতিতে কোন বিশ্বাস নেই। সেইসব দিন আজ অতীত হয়ে গিয়েছে। অবশ্যই আমাদেরকে মন্দিরগুলোও চালাতে হবে যেহেতু আমাদের উৎসাহমূলক মনোভাব সর্বদা জাগ্রত রাখার প্রয়োজন রয়েছে। কেবল জ্ঞান দিয়ে কাজ হবে না, ব্যবহারিক শুদ্ধিকরণও অবশ্যই থাকতে হবে।
তাই আমি পরিচালনাগত দায়িত্বসমূহ থেকে আমাকে আরও অধিক পরিমাণে অব্যহতি দেয়ার জন্য তোমাদের অনুরোধ করছি যাতে আমি শ্রীমদ্ভাগবতের অনুবাদটি সম্পন্ন করতে পারি। যদি আমাকে সবসময় পরিচালনা নিয়েই থাকতে হয় তাহলে আমি গ্রন্থরচনার কার্য সুসম্পন্ন করতে পারব না। এটি হবে এক প্রামাণ্য নথি, আমাকে এখানে প্রতিটি শব্দ অত্যন্ত গভীরভাবে চিন্তা করে নির্বাচন করতে হবে আর যদি আমাকে পরিচালনার কথা ভাবতে হয় তাহলে আমার দ্বারা এই কাজটি হবে না। আমি সেইসমস্ত বদমাশদের মতো হতে পারি না যারা কি না লোক ঠকানোর জন্য কিছু মনগড়া বস্তু উপস্থাপন করে। তাই আমার দ্বারা নিযুক্ত সহকারীগণ, জিবিসিবৃন্দ, মন্দির অধ্যক্ষগণ এবং সন্ন্যাসী- এই সকলের সহযোগিতা ছাড়া আমার দ্বারা এই কার্যটি সম্পাদন করা সম্ভব হবে না। আমি সবচাইতে উত্তম ব্যক্তিদের জিবিসি নির্বাচন করেছি আর আমি চাই না যে জিবিসিগণ মন্দির অধ্যক্ষদের প্রতি অসম্মানসূচক ব্যবহার করুক। তোমরা স্বাভাবিকভাবেই আমার সাথে আলোচনা করতে পারো কিন্তু মৌলিক নীতিটিই যদি দুর্বল হয় তাহলে এই সব কিছু চলবে কি ভাবে? তাই দয়া করে আমাকে পরিচালনা কাজে সাহায্য কর যাতে করে আমি শ্রীমদ্ভাগবত সম্পন্ন করার অবসর পাই যা কি না এই পৃথিবীতে আমাদের সবচাইতে দীর্ঘস্থায়ী অবদান হবে। – সমস্ত জিবিসি পরিচালকমণ্ডলীদের প্রতি শ্রীল প্রভুপাদের পত্র, ১৯ মে ১৯৭৬
এখানে শ্রীল প্রভুপাদ উল্লেখ করেছেন যে "আমার সহকারীদের সহযোগিতা ছাড়া এই কার্য শেষ করা সম্ভব হবে না" তাঁকে সাহায্য করার জন্য "এই পৃথিবীর প্রতি আমাদের দীর্ঘস্থায়ী অবদান" প্রস্তুত করেতে। এটি হচ্ছে শ্রীল প্রভুপাদের গ্রন্থাবলী যা "আমাদের এক সম্মানজনক অবস্থান দিয়েছে" এবং সেইগুলি হচ্ছে "এই বিশ্বের প্রতি সবচাইতে মহান অবদান।"
বিগত বছরগুলোতে বিবিটি ভক্ত, গ্রন্থ বিতরণকারী, শ্রীল প্রভুপাদের বাণীকে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখা প্রচারক এবং অন্য সমস্ত ভক্তরা যারা কোনও না কোনভাবে শ্রীল প্রভুপাদের বাণীকে বিতরণ ও সংরক্ষণ করার জন্য নিজেদেরকে উৎসর্গ করেছেন- তাদের সকলের দ্বারা অনেক বাণীসেবা হয়েছে। কিন্তু এখনও অনেক কিছু করার রয়ে গিয়েছে। বৃহৎ বৃহৎ বৃহৎ মৃদঙ্গ (বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট বা World Wide Web) প্রযুক্তির মাধ্যমে একত্রে কাজ করে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শ্রীল প্রভুপাদের বাণীর অতুলনীয় প্রকাশ ঘটানোর এক অনন্য সুযোগ আমাদের কাছে রয়েছে। আমাদের প্রস্তাবনা হচ্ছে ২০২৭ সালের ৪ঠা নভেম্বর-এর মধ্যে বাণীসেবা ও বাণীমন্দির নির্মাণের লক্ষ্যে একত্রিত হওয়া যখন আমরা সকলে শেষ ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করব। বিরহের মধ্যে দিয়ে শ্রীল প্রভুপাদের সেবা করার ৫০ বছর পূর্তি। এটি শ্রীল প্রভুপাদের প্রতি আমাদের ভালোবাসার এক যথার্থ এবং চমৎকার নিবেদন এবং তাঁর আগামী প্রজন্মের সমস্ত ভক্তদের কাছে আমাদের এক মহিমান্বিত উপহার হয়ে থাকবে।
আমি শুনে খুব খুশি হয়েছি যে তুমি তোমার ছাপাখানার নাম রেখেছ রাধা প্রেস। এটি খুবই আনন্দজনক। তোমার রাধা প্রেস জার্মান ভাষায় আমাদের সমস্ত গ্রন্থ ও বৈদিক সাহিত্যগুলো ছাপানোর কাজে সমৃদ্ধ হোক। এটি খুবই সুন্দর নাম। রাধারাণী হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণের সর্বোত্তম এবং সর্বোচ্চ সেবক। আর মুদ্রণযন্ত্র হচ্ছে এই মুহূর্তে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করার সবচাইতে বৃহৎ মাধ্যম। সুতরাং এটি সত্যিই শ্রীমতি রাধারাণীর প্রতিনিধি। প্রকৃতপক্ষেই তোমার এই ভাবনাটি আমার খুব পছন্দ হয়েছে।– জয় গোবিন্দ দাস (গ্রন্থ উৎপাদন ব্যবস্থাপক)-কে লেখা শ্রীল প্রভুপাদের পত্র ৪ জুলাই, ১৯৬৯
বিংশ শতাব্দীর অধিকাংশ সময় জুড়েই মুদ্রণযন্ত্র বা ছাপাখানা বহু লোকগোষ্ঠীর সাফল্যজনক প্রচার-প্রসারের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। শ্রীল প্রভুপাদ বলেছিলেন যে কিভাবে কম্যুনিস্টরা প্রচারপত্র ও বই বিলি করে ভারতে তাদের প্রভাব বিস্তার করেছিল। শ্রীল প্রভুপাদ সারা বিশ্বজুড়ে তাঁর গ্রন্থসমূহ বিতরণ করার দ্বারা কিভাবে কৃষ্ণভাবনামৃত অনুষ্ঠানকে বিশাল আকারে প্রচার করতে চান সেই সম্পর্কে তাঁর মনোভাব প্রকাশ করার জন্য এই উদাহরণটি দিয়েছিলেন।
এখন, এই একবিংশ শতাব্দীতে শ্রীল প্রভুপাদের উক্তি "ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবা করার জন্য এই মুহূর্তে সর্ববৃহৎ মাধ্যম"-কে আমরা নিঃসন্দেহে ইন্টারনেটভিত্তিক প্রকাশনা ও বিতরণের দৃষ্টান্তস্বরূপ ও অনুপম ক্ষমতার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারি। বাণীপিডিয়াতে আমরা শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাবলীকে সকলের কাছে বিতরণের করার গণমাধ্যম স্তরে যথাযথভাবে উপস্থাপন করার জন্য প্রস্তুত করছি। শ্রীল প্রভুপাদ বলেছিলেন যে জার্মানিতে তাঁর ভক্তদের দ্বারা স্থাপিত রাধা প্রেস "শ্রীমতি রাধারাণীর যথার্থ প্রতিনিধি" ছিল। এজন্যই আমরা নিশ্চিত যে তিনি বাণীপিডিয়াকেও শ্রীমতী রাধারাণীর প্রতিনিধি বলেই বিবেচনা করবেন।
ইস্কন ভক্তবৃন্দের দ্বারা বহু সুন্দর বপু-মন্দির নির্মাণ হয়েছে - তাই চলুন অন্ততপক্ষে একটি হলেও মহিমান্বিত বাণীমন্দির নির্মাণ করা যাক। বপু মন্দির ভগবানের শ্রীবিগ্রহের অপ্রাকৃত পবিত্র দর্শন উপহার দিয়ে থাকে। আর এই বাণীমন্দির শ্রীভগবান ও তাঁর শুদ্ধভক্তদের অপ্রাকৃত বাণীর পবিত্র দর্শন উপহার দেবে, শ্রীল প্রভুপাদ যেমনভাবে সেটি উপস্থাপন করে গিয়েছেন। যখন শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাসমূহ যথোপযুক্ত এবং পূজনীয় মর্যাদার আসনে আসীন হবে, তখন ইস্কন ভক্তদের কার্যাবলী আপনা থেকেই আরও সাফল্যমণ্ডিত হবে। এখন শ্রীল প্রভুপাদের বর্তমান "নিযুক্ত সহকারীদের" এই অপূর্ব সুযোগ রয়েছে তাঁর বাণীমন্দির নির্মাণের এই বাণী-লক্ষ্যকে সাদরে আলিঙ্গন করে নেওয়ার ও আগামী দিনের আগত আন্দোলনকে আরও উৎসাহিত করার।
ঠিক যেভাবে শ্রীধাম মায়াপুরে গঙ্গার তীরে নির্মাণাধীন সুবিশাল এবং অত্যন্ত সুন্দর বপুমন্দিরটি সারা বিশ্বজুড়ে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর কৃপা বিতরণ করার লক্ষ্যে গড়ে উঠছে, ঠিক একইভাবে শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাবলীর এই বাণীমন্দিরটিও পারে সারা বিশ্বজুড়ে ইস্কন আন্দোলনকে প্রচার করার জন্য আরও শক্তিশালী করতে এবং আগামী হাজার হাজার বছর ধরে শ্রীল প্রভুপাদের পদমর্যাদাকে আরও সুপ্রতিষ্ঠিত করতে।
বাণীসেবা – সেবা করার লক্ষ্যে ব্যবহারিক কার্য
বাণীপিডিয়া সম্পন্ন হওয়ার অর্থ হচ্ছে শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষা এমনভাবে উপস্থাপিত হবে যে কেউই কোনদিনই কোনও আধ্যাত্মিক গুরুর জন্যই এমনভাবে কিছু করে নি। আমরা সকলকে এই মহতী সেবাকার্যে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ জানাই। সম্মিলিতভাবে আমরা সারা পৃথিবীর কাছে শ্রীল প্রভুপাদকে এমন বিশালতায় উপস্থাপন করব যা কেবল ইন্টারনেটের মাধ্যমেই সম্ভব।
আমাদের ইচ্ছা শ্রীল প্রভুপাদের শিক্ষাকে 'বহু ভাষায় তথ্য সংগ্রহের জন্য সুলভ এক নম্বর বিশ্বকোষ' হিসেবে তৈরি করা। তা কেবল বহু ভক্তের ঐকান্তিক প্রতিজ্ঞা, আত্মত্যাগ ও সমর্থনের দ্বারাই সম্ভব। আজ পর্যন্ত প্রায় ১২২০ জন ভক্ত বাণীউৎস (Vanisource) ও বাণীউদ্ধৃতি (Vaniquotes) তৈরি করতে এবং ৯৩টি ভাষায় তা অনুবাদ করতে অংশগ্রহণ করেছে। এখন বাণীউদ্ধৃতি সম্পন্ন করতে ও বাণীপিডিয়া নিবন্ধসমূহ, বাণীগ্রন্থসমূহ এবং বাণীবিশ্ববিদ্যালয় কোর্সসমূহ ইত্যাদি নির্মাণ করতে আমাদের নিম্নলিখিত দক্ষতাসম্পন্ন ভক্তদের থেকে সহযোগিতা প্রয়োজনঃ
• প্রশাসন
• সংকলন
• শিক্ষাক্রম উন্নয়ন
• নকশা ও বিন্যাস
• অর্থসংস্থান
• ব্যবস্থাপনা
• প্রচারণা
• গবেষণা
• সার্ভার রক্ষণাবেক্ষণ
• সাইট উন্নয়ন
• সফট্ওয়্যার প্রোগ্রামিং
• শিক্ষণ
• প্রযুক্তিগত সম্পাদনা
• প্রশিক্ষণ
• অনুবাদ
• লেখা
বাণীসেবকেবৃন্দ তাদের বাড়ি, মন্দির ও অফিস থেকেও সেবা করতে পারে অথবা আমাদের সঙ্গে পূর্ণকালীনভাবে যোগদান করতে পারে বা শ্রীধাম মায়াপুর বা রাধাদেশে নির্দিষ্ট কিছুদিনের জন্যও সেবায় যোগদান করতে পারে।
অনুদান করা
বিগত ১২ বছর ধরে মূলত ভক্তিবেদান্ত লাইব্রেরী সার্ভিসেস a.s.b.l.-এর দ্বারাই বাণীপিডিয়ার অর্থসংস্থান হয়েছে। এর নির্মাণকার্য অক্ষুণ্ণ রাখতে ভক্তিবেদান্ত লাইব্রেরী সার্ভিসেস বা বিএলএস-এর বাইরেও আমাদের আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন। আমরা আশা করছি যে, এই উদ্যোগটি সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পর বাণীপিডিয়া বহু পরিতৃপ্ত সাইট দর্শক (visitor)-দের ক্ষুদ্র অনুদানের এক অল্প অংশ দিয়েই চলতে পারবে। কিন্তু এখনকার মতো এই মুক্ত বিশ্বকোষটি নির্মাণের প্রাথমিক পর্যায়টি সম্পূর্ণ করার জন্য আর্থিক সাহায্য পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাণীপিডিয়ার সমর্থনকারীবৃন্দ নিম্নে উল্লিলিখিত বিকল্পসমূহ থেকে যে কোনটি বেছে নিতে পারেন
জামিন বা স্পন্সর: একজন ব্যক্তি তাদের ইচ্ছামতো যে কোন পরিমাণ অনুদান করতে পারেন।
সমর্থনকারী পৃষ্ঠপোষক: একজন ব্যক্তি বা কোন বৈধ সংস্থা কমপক্ষে ৮১ ইউরো অনুদান করতে পারেন।
বজায়কারী পৃষ্ঠপোষক: একজন ব্যক্তি বা কোন বৈধ সংস্থা কমপক্ষে ৮১০ ইউরো অনুদান করতে পারেন যা কিনা ৯ মাসের প্রতি মাসে ৯০ ইউরো করেও দেয়া যেতে পারে।
বৃদ্ধিকারী পৃষ্ঠপোষক: একজন ব্যক্তি বা কোন বৈধ সংস্থা কমপক্ষে ৮,১০০ ইউরো অনুদান করতে পারেন যা কিনা ৯ মাসের প্রতি মাসে ৯০০ ইউরো করেও দেয়া যেতে পারে।
মূল পৃষ্ঠপোষক: একজন ব্যক্তি বা কোন বৈধ সংস্থা কমপক্ষে ৮১,০০০ ইউরো অনুদান করতে পারেন যা কিনা ৯ মাসের প্রতি মাসে ৯০০০ ইউরো করেও দেয়া যেতে পারে।
আপনি অনুদান দিতে চাইলে অনলাইনে অনুদান প্রাপ্তি এই লিঙ্কের মাধ্যমে দেয়া যেতে পারে অথবা আমাদের [email protected] নামের PayPal একাউন্ট-এর মাধ্যমেও করা যেতে পারে। যদি আপনি এ ছাড়া আর কোন মাধ্যমে অনুদান দিতে চান অথবা অনুদান করার আগে আরও কিছু জানতে চান, তাহলে আমাদেরকে [email protected] এই ঠিকানায় ইমেইল করতে পারেন।
আমরা চিরকৃতজ্ঞ - প্রার্থনা
আমরা চিরকৃতজ্ঞ
ধন্যবাদ শ্রীল প্রভুপাদ
আমাদেরকে আপনার সেবা করার এই সুযোগ দেওয়ার জন্য।
আপনার এই আন্দোলনে আপনাকে সন্তুষ্ট করতে আমরা আমাদের সর্বোত্তম চেষ্টা করব।
আপনার শিক্ষা কোটি কোটি জীবকে আশ্রয় দিক।
হে প্রিয় শ্রীল প্রভুপাদ,
দয়া করে আমাদের শক্তি দিন,
সবধরনের ভালো গুণাবলি এবং সামর্থ্য দিয়ে,
এবং দীর্ঘকাল ধরে
ঐকান্তিক দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ভক্ত ও উপকরণাদি পাঠিয়ে
সকলের কল্যাণের জন্য,
সফলভাবে আপনার মহিমান্বিত এই বাণীমন্দিরটি নির্মাণ করতে।
হে প্রিয় শ্রীশ্রী পঞ্চতত্ত্ব,
দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন শ্রীশ্রী রাধামাধবের
এবং শ্রীল প্রভুপাদের প্রিয় শিষ্যদের এবং আমাদের গুরুমহারাজদের প্রিয় হতে;
আমাদের এই শক্তি দিন যাতে আমরা কঠোর পরিশ্রম ও বুদ্ধিদীপ্ত ভাবে সেবা করতে পারি
শ্রীল প্রভুপাদের এই আন্দোলনে,
তাঁর ভক্তদের আনন্দবিধানের জন্য।
আমাদের এই প্রার্থনা গ্রহণ করার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য
শ্রীল প্রভুপাদ, শ্রীশ্রী পঞ্চতত্ত্ব এবং শ্রীশ্রী রাধামাধবের করুণাশক্তির দ্বারাই কেবল আমরা এই বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করার আশা করতে পারি। তাই আমরা নিরন্তর তাঁদের করুণা প্রার্থনা করি।