BN/Prabhupada 0048 - আর্য সভ্যতা



Lecture on BG 2.2-6 -- Ahmedabad, December 11, 1972

অনার্যজুষ্টম, জীবনের এমন প্রগতিশীল মূল্যবোধের কথা জানে এমন একজন মানুষের জন্য শোভা পায় না। আর্য। আর্য অর্থ যারা প্রগতিশীল। তাই যুদ্ধক্ষেত্ৰে অর্জুনের যুদ্ধ না করার সিদ্ধান্তকে বর্ণনা করা হয়েছে অনার্যসুলভ হিসেবে। আর্য, ভগবদগীতার বর্ণনায় আর্য সভ্যতা অনুসারে, ৪ টি বর্ণবিভাগ রয়েছে যেগুলি পরমেশ্বর ভগবান কর্তৃক প্রবর্তিত। যেটা আমরা ইতিমধ্যে ব্যাখ্যা করেছি, ধর্মং তু সাক্ষাদ্ভগবদপ্রণীতং (শ্রীমদ্ভাগবত ৬.৩.১৯) কোনও সুব্যববস্থাসম্পন্ন ধর্মীয় পন্থা বলতে বোঝায়: "এটা ভগবান দ্বারা প্রদত্ত।" মানুষ কোনো ধর্মীয় পন্থা সৃষ্টি করতে পারে না। তাই এই আর্য সভ্যতা হলো, প্রগতিশীল পদ্ধতি, চাতুবর্ণং ময়া সৃষ্টং গুণকর্ম বিভাগশঃ। (গীতা ৪.১৩) শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, "সামাজিক ব্যবস্থাপনাকে খুব ভাল ভাবে পরিচালনার জন্য এটি আমারই সৃষ্টি।" ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শুদ্র। এক্ষেত্রে অর্জুন হলেন ক্ষত্রিয় বংশজাত। এজন্য যুদ্ধক্ষেত্রে তাঁর যুদ্ধ করার যে দ্বিধা প্রকাশ, তা আর্যসুলভ নয়। ক্ষত্রিয় হয়েও যুদ্ধ না করার প্রবণতা ভাল নয়। ক্ষত্রিয়রা, যখন যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধ করে, তখন হত্যা করা তাদের জন্য পাপকর্ম নয়। তদ্রুপ, একজন ব্রাহ্মণ যখন যজ্ঞ করেন, তখন মাঝে মাঝে পশুদের সেই যজ্ঞে আহুতি দেন; তার অর্থ এই নয় যে তিনি পাপকর্ম করছেন। পশুযজ্ঞের উদ্দেশ্য পশু-মাংস আহার করা নয়। এটি বৈদিক মন্ত্র পরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত হয়। ব্রাহ্মণেরা কি যজ্ঞে সঠিকভাবে আহুতি দিচ্ছেন, তারা কি সঠিক ভাবে বৈদিক মন্ত্র জপ করছেন, সেটি পরীক্ষা করা হয় কোনও পশুকে যজ্ঞে অর্পণ এবং পুনরায় তাকে নবজীবন প্রদান করার মাধ্যমে। এই হল পশুযজ্ঞ। যজ্ঞে মাঝে মাঝে অশ্ব, মাঝে মাঝে গাভীও নিবেদন করা হত। কিন্তু এই কলিযুগে সেগুলো নিষিদ্ধ কারণ সেরকম যাজ্ঞিক ব্রাহ্মণ এখন আর নেই। এই যুগে সমস্ত প্রকার যজ্ঞই নিষিদ্ধ।

অশ্বমেধং গবালম্ভং
সন্ন্যাসং পলপৈতৃকম্।
দেবরেণ সুতোৎপত্তিং
কলৌ পঞ্চ বিবর্জয়েৎ।।
(চৈ চ আদি ১৭.১৬৪)

অশ্বমেধ যজ্ঞ, গোমেধ যজ্ঞ, সন্ন্যাস এবং দেবরের মাধ্যমে সন্তান লাভ, (স্বামীর ছোট ভাই), এই যুগে সেগুলো নিষিদ্ধ।