BN/Prabhupada 0075 - আপনাকে একজন গুরুর কাছে যাওয়া উচিত



Lecture on SB 1.8.25 -- Mayapur, October 5, 1974

যখন কেউ উচ্চতর পর্যায়ের প্রশ্নগুলি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে আগ্রহী হয়, ব্রহ্ম-জিজ্ঞাসা, তখন সে একজন গুরুকে জিজ্ঞাসা করবে। তস্মাদ গুরুং প্রপদ্যেতঃ "তুমি এখন উচ্চতর জ্ঞান জানার জন্য আগ্রহী, তাহলে অবশ্যই একজন গুরুর কাছে যাও।" তস্মাদ গুরুং প্রপদ্যেত। কে? জিজ্ঞাসুঃ শ্রেয় উত্তমং। উত্তমং। উত্তমং মানে যিনি অজ্ঞানতার উর্ধ্বে রয়েছেন। সমগ্র পৃথিবী অন্ধকারাচ্ছন্ন। কাজেই যে এই অন্ধকারের উর্ধ্বে যেতে চায়, তমসি মা জ্যোতির্গম। বৈদিক অনুশাসন হচ্ছেঃ "অন্ধকারে থেকো না। আলোতে যাও।" এই আলো হচ্ছে ব্রহ্ম, ব্রহ্ম-জিজ্ঞাসা। তাই যে অনুসন্ধিৎসু... উত্তম... উদগত-তম যস্মাৎ। উদ্গ‌ত-তম। তম মানে অজ্ঞানতা। চিন্ময় জগতে কোন অজ্ঞানতা নেই। জ্ঞান। মায়াবাদী দার্শনিকেরা, তারা শুধু বলে, জ্ঞান, জ্ঞানবান। কিন্তু জ্ঞান দেখানোর জিনিস নয়। বিভিন্ন ধরণের জ্ঞান রয়েছে। ঠিক যেমন বৃন্দাবনে, সেখানে জ্ঞান রয়েছে, কিন্তু সেখানে বৈচিত্র রয়েছে। কেউ শ্রীকৃষ্ণকে দাস্যভাবে ভালবাসতে চায়। কেউ শ্রীকৃষ্ণকে বন্ধুরূপে ভালোবাসতে চায়। কেউ কেউ শ্রীকৃষ্ণের ঐশ্বর্যের প্রশংসা করে। কেউ কেউ শ্রীকৃষ্ণে পিতা মাতা হয়ে ভালোবাসতে চায়। কেউ আবার শ্রীকৃষ্ণকে দাম্পত্য রসে, পরকীয়া রসে ভালোবাসতে চায়। কেউ কেউ শ্রীকৃষ্ণকে শ্ত্রু রূপে ভালোবাসতে চায়। যেমন কংস। এটিও বৃন্দাবন লীলা। সে সর্বদাই শ্রীকৃষ্ণের চিন্তা করত, কিন্তু ভিন্ন উপায়ে, কিভাবে শ্রীকৃষ্ণকে হত্যা করা যায়। পূতনা, সেও আপাতদৃষ্টিতে শ্রীকৃষ্ণের প্রেমিকা রূপে এসেছিল, তাঁকে তার স্তন্যদুগ্ধ পান করানোর জন্য। কিন্তু অন্তরের ইচ্ছা ছিল কিভাবে শ্রীকৃষ্ণকে হত্যা করা যায়। কিন্তু এটিও পরোক্ষ ভালোবাসা রূপে গৃহীত হয়েছে। অন্বয়াৎ।

শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন জগৎগুরু। তিনি হচ্ছেন আদি বা মূল শিক্ষক। এই শিক্ষক স্বয়ং ভগবদ্গীতায় শিক্ষা দিচ্ছেন, আর আমরা বদমাশরা সেই শিক্ষা গ্রহণ করছি না। শুধু দেখ, যার কারণে আমরা হচ্ছি মূঢ়। যে কেউ সে যদি জগৎগুরুর দেয়া শিক্ষা গ্রহনে অযগ্যো হয়, তবে সেই মূঢ়। কাজেই আমাদের পরীক্ষার মাপকাঠি হলঃ কেউ যদি শ্রীকৃষ্ণকে না জানে, কেউ যদি না জানে যে কিভাবে ভগবদ্গীতা অনুসরণ করতে হয়, আমরা তৎক্ষণাৎ তাকে একটা বদমাশ হিসেবে গ্রহণ করব। কিছু মনে করো না, হতে পারে সে প্রেসিডেন্ট কিংবা হাইকোর্টের বিচারক, অথবা... না। "না, তিনি একজন প্রেসিডেন্ট। তিনি হাইকোর্টের বিচারপতি। তবু তিনি মূঢ়?" হ্যাঁ। "কিভাবে?" মায়য়াপহৃতজ্ঞানাঃ (ভগবদ্গীতা ৭.১৫)। "শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে তার কোন জ্ঞান নেই। সে মায়া দ্বারা আবৃত।" মায়য়াপহৃতজ্ঞানা আসুরং ভাবমাশ্রিতাঃ। তাই সে মূঢ়। সুতরাং সোজাসুজি প্রচার কর। অবশ্য তুমি এই জিনিসগুলো নরম ভাষায় বলতে পার, যাতে করে কোন রকম বিক্ষোভের সৃষ্টি না হয়। কিন্তু কেউ যদি শ্রীকৃষ্ণকে জগৎগুরু রূপে স্বীকার না করে এবং তাঁর শিক্ষা গ্রহণ না করে, সে একটা বদমাশ। ঠিক যেমন জগন্নাথ পুরীতে একটা মূঢ় ছিল। সে বলত যে "তুমি আরেকটি জন্ম নাও। তখন তুমি পারবে..." এই মূঢ়কে বদমাশ বলতে হবে। কেন? সে বলছে যে, "আমি হচ্ছি জগৎগুরু।" কিন্তু সে জগৎগুরু নয়। সে এমন কি পুরো জগতটাকেই দেখেনি। সে একটা ব্যাঙ। আর সে নিজেকে জগতগুরু বলে দাবি করছে। তাই সে একটা মূঢ়। শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন। সে মূঢ় কারণ সে শ্রীকৃষ্ণ প্রদত্ত শিক্ষা গ্রহণ করেনি।