BN/Prabhupada 0084 - শুধু একজন কৃষ্ণ ভক্ত হও



Lecture on BG 2.22 -- Hyderabad, November 26, 1972

আমাদের কথা হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণ থেকে জ্ঞান গ্রহণ করতে হবে তিনিই সবচেয়ে আদর্শ ব্যক্তি আমরা শাস্ত্রের কথা গ্রহণ করি, তা হচ্ছে অভ্রান্ত। এতে কোন ভুল নেই ঠিক যেমন, আমি যখন গোশালার পাশ দিয়ে হাঁটছিলাম ওখানে স্তূপ স্তূপ গোবর ছিল তখন আমি আমার শিষ্যদের বোঝাচ্ছিলাম যদি অন্য প্রাণীর, অর্থাৎ মানুষের মল ওখানে স্তূপ করা থাকে, তাহলে ওখানে কেউই যাবে না। কেউ যাবে না। কিন্তু গোবর, কত কত স্তূপ করে রাখা গোবর তারপরও ওসবের মধ্য দিয়ে যাতে আমরা ভালই অনুভব করছিলাম এবং বেদে বলা হয়েছে, "গোবর হচ্ছে শুদ্ধ" এর নাম শাস্ত্র। যদি তুমি তর্ক কর, "তা কিভাবে সম্ভব? এ তো প্রাণীর মল।" কিন্তু বেদে বলা হচ্ছে... কারণ সেই জ্ঞান অভ্রান্ত এমনকি আমরা যুক্তি দিয়েও দেখাতে পারব না প্রাণীর মল কিভাবে শুদ্ধ হয় কিন্তু তা পবিত্র। তাই বৈদিক জ্ঞান অভ্রান্ত তাই আমরা যদি বেদ থেকে জ্ঞান গ্রহণ করি তাহলে আমাদের গবেষণা করার অনেক সময় বেঁচে যাবে। আমরা খুব গবেষণা করতে পছন্দ করি। সবকিছুই বেদে বলা আছে শুধু শুধু কেন সময় নষ্ট করবেন?

এই হচ্ছে বৈদিক জ্ঞান বৈদিক জ্ঞান মানে তা পরমেশ্বর ভগবান দ্বারা প্রদত্ত সেটি হচ্ছে বৈদিক জ্ঞান। অপৌরুষেয় তা আমার মতো কোন সাধারণ মানুষের দ্বারা বলা জ্ঞান নয় যদি আমরা বৈদিক জ্ঞান গ্রহণ করি, ভগবান কৃষ্ণ যা বলেছেন তা যথাযথ ভাবে নিই, অথবা তাঁর প্রতিনিধির থেকে... কারণ তাঁর প্রতিনিধি এমন কিছু বলবেন না যা শ্রীকৃষ্ণ বলেন নি তাই তিনি প্রতিনিধি কৃষ্ণভাবনাময় ব্যক্তিরাই তাঁর প্রতিনিধি কারণ একজন কৃষ্ণভাবনাময় ব্যক্তি কোন আজেবাজে কথা বলবেন না শ্রীকৃষ্ণের কথার বাইরে কিছু বলবেন না। সেটাই হচ্ছে পার্থক্য অন্যান্য বদমাশ , বাজে লোকেরা কৃষ্ণের কথার বাইরে নিজেদের মনগড়া কথা বলবে কৃষ্ণ বলেছেন, মন্মনা ভব মদ্ভক্ত মদ্‌যাজী মাম্‌ নমস্কুরু (গীতা ১৮/৬৫) কিন্তু বদমাশ পণ্ডিতেরা বলবে, "না, না, ওটা কৃষ্ণ নয়, অন্য কারোর কাছে"। এসব বাজে কথা কোথায় পেল? শ্রীকৃষ্ণ নিজেই বলেছেন, মন্মনা ভব মদ্ভক্ত মদ্‌যাজী মাম্‌ নমস্কুরু (গীতা ১৮/৬৫) তাহলে তুমি কেন সেটি বিকৃত করছ? কেন তুমি বলছ অন্য কিছুর কাছে? "এটি কৃষ্ণের ভেতরে থাকা অন্য কিছুর কথা বলা হচ্ছে।" এসব তোমরা জানবে ... আমি নাম বলতে চাই না এই ধরণের বহু বদমাশ পণ্ডিত আছে। তারা এইভাবে ব্যাখ্যা করে এই কারণে, যদিও ভগবদ্গীতা ভারতের জ্ঞানগ্রন্থ তারপরও বহু বহু লোক ভ্রান্ত পরিচালিত হচ্ছে... এইসব বদমাশ পণ্ডিত, তথাকথিত পণ্ডিতদের কারণে কারণ ওরা কেবল ভুল ব্যাখ্যা করে।

তাই আমরা ভগবদগীতা যথাযথ উপস্থাপন করছি কৃষ্ণ বলেছেন, সর্বধর্মান্‌ পরিত্যাজ্য মামেকম্‌ শরণম্‌ ব্রজ (গীতা ১৮/৬৬) আমরা এই কথা প্রচার করছি যে, "কৃষ্ণ ভাবনাময় হন কেবল কৃষ্ণের ভক্ত হন। তাঁকে আপনার সম্মান প্রদান করুন..." সকলকে সম্মান করতে হবে। তুমি পরমেশ্বর নও কাজ পেতে গেলে তোমাকে অন্য কারোর তোষামোদ করতে হয় এমনকি ভাল পদ পেলেও তোমাকে তোষামোদ করতে হয় এমনকি দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে গেলেও তোমাকে দেশের লোকেদের তোষামোদ করতে হবে, "দয়া করে আমাকে ভোট দিন দয়া করুন, আমি আপনাদের অনেক সুযোগসুবিধা করে দেব" এইভাবে তোমাকে তোষামোদ করতে হবে। এটাই বাস্তব তুমি অনেক বড় কেউ হতে পার। কিন্তু তোমাকে কারোর না কারো তোষামোদ করতে হবে তোমাকে কোন না কোন প্রভু গ্রহণ করতে হবে। তাহলে কেন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে প্রভু বলে গ্রহণ করছ না? কি সমস্যা এতে? "না আমি কৃষ্ণ বাদে হাজার হাজার প্রভু গ্রহণ করব"। এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা "আমি কৃষ্ণ বাদে হাজারটা শিক্ষক গ্রহণ করব। এটাই আমার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা"। তাহলে আমরা কি করে সুখী হব? কেবল মাত্র কৃষ্ণকে গ্রহণ করার দ্বারাই সুখী হওয়া যাবে।

ভোক্তারম্‌ যজ্ঞ তপসাম্‌
সর্বলোকমহেশ্বরম্‌
সুহৃদম্‌ সর্বভূতানাম্‌
জ্ঞাত্বা মাম্‌ শান্তিমৃচ্ছতি
(গীতা ৫/২৯)

এই হচ্ছে শান্তির উপায়। শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, "আমি ভোক্তা, তুমি ভোক্তা নও।" তুমি ভোক্তা নও। তুমি প্রেসিডেন্ট হতে পার, সেক্রেটারি হতে পার; তুমি যা খুশিই হতে পার কিন্তু তুমি ভোক্তা নও। কৃষ্ণ হচ্ছেন ভোক্তা। এটা জানতে হবে। ঠিক যেমন... আমি এখানে এসেছি, আমি একটা চিঠি পেয়েছি অন্ধ্র রিলিফ্‌ কমিটি থেকে যদি কৃষ্ণ সন্তুষ্ট না হন, তাহলে রিলিফ্‌ কমিটি দিয়ে কি হবে? কেবল কিছু টাকা সংগ্রহ করে কি হবে? না তা সম্ভব না। এখন বৃষ্টি হচ্ছে। এখন লাভ হবে। কিন্তু এই বৃষ্টিও শ্রীকৃষ্ণের কৃপার ওপর নির্ভর করে, তা আপনাদের তহবিল গঠনের ওপর নির্ভর করার ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে না।