BN/Prabhupada 0107 - আবার কোন জড় শরীর গ্রহণ করবেন না



Lecture on BG 4.17 -- Bombay, April 6, 1974

এটা ধনী শরীর হোক কিংবা গরীব শরীর, সেটা কোন ব্যাপার না। প্রত্যেককেই জীবনের তিন ধরণের ক্লেশের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যখন টাইফয়েড হয়, তখন এটি বৈষম্য করে না যে "এটি একটি ধনী শরীর। আমি এটিকে কম কষ্ট দিব।" না। যখন টাইফয়েড হয়, তখন তোমার শরীরটা ধনী হোক কিংবা দরিদ্র, একই কষ্ট ভোগ করতে হবে। যখন তুমি তোমার মায়ের গর্ভের মধ্যে থাক, তোমাকে একই কষ্ট ভোগ করতে হবে, তুমি রাণীর গর্ভ কিংবা মুচির স্ত্রীর গর্ভ, যেখান থেকেই আসো না কেন। ওটা বদ্ধ অবস্থা... কিন্তু তারা জানে না। জন্ম,মৃত্যু,জরা। অনেক কষ্ট আছে জন্মের প্রক্রিয়াতে। জন্ম, মৃত্যু ও বার্ধক্য জনিত প্রক্রিয়ায় অনেক কষ্ট আছে। একজন ধনী ব্যক্তি কিংবা একজন দরিদ্র ব্যাক্তি, আমরা যখন বৃদ্ধ হয়ে যাই, তখন আমাদেরকে বৃদ্ধাবস্থা থেকে অনেক কষ্ট পেতে হয়।

তেমনি, জন্ম,মৃত্যু,জরা,ব্যাধি (ভ.গী. ১৩.৯) জরা, জরা এবং ব্যাধি, আর মৃত্যু। সুতরাং, আমরা এই জড় শরীরের কষ্ট সম্পর্কে সচেতন নই। শাস্ত্র বলছে, "আর কোন জড় শরীর গ্রহণ করো না।" ন সাধু মন্যেঃ "এটা ভাল না, আপনি বার বার এই জড় শরীর গ্রহণ করছেন।" ন সাধু মন্যে যত আত্মনো। আত্মনো, আত্মা এই জড় শরীরের মধ্যে বদ্ধ। যতো আত্মনোঃ, যয়ম অসন্ন অপি। যদিও অস্থায়ী, আমি এই শরীর পেয়েছি। ক্লেশদ আস দেহঃ তাই যদি আমরা আরেকটি জড় দেহ ধারনের এই যন্ত্রণাদায়ক অবস্থা বন্ধ করতে চাই, তাহলে আমাদের অবশ্যই জানতে হবে কর্ম কি, বিকর্ম কি, এটি কৃষ্ণের প্রস্তাব। কর্মণো হ্যপি বোদ্ধব্যং বোদ্ধব্যং চ বিকর্মণঃ অকর্মনশ্চ বোদ্ধব্যং। অকর্ম মানে কোন প্রতিক্রিয়া নেই। প্রতিক্রিয়া। কর্ম, যদি তুমি ভাল কাজ কর, তবে এটির একটি প্রতিক্রিয়া হবে। সুন্দর শরীর, সুশিক্ষা, সমৃদ্ধ পরিবার, ঐশ্বর্য্য ইত্যাদি। এটিও ভাল। আমরা এটাকে ভাল হিসাবে নিই। আমরা স্বর্গে যেতে চাই। কিন্তু তারা জানে না যে, এমনকি স্বর্গেও জন্ম-মৃত্যু-জরা-ব্যাধি আছে। অতএব কৃষ্ণ দেবশরীর লাভ করার পরামর্শ দেন না। তিনি বলেছেন, আব্রহ্ম ভুবনাল্লোকাঃ পুনরাবর্তিন অর্জুন (ভ.গী ৮.১৬)। এমনকি যদি তুমি ব্রহ্মলোকেও যাও, তবুও, জন্ম মর্ত্যুর পুনরাবৃত্তি আছে এবং ... যৎ গত্বা ন নিবর্ততে তৎ ধাম পরমম্‌ মম (ভ.গী.১৫.৬) যৎ গত্বা ন নিবর্তন্তে। কিন্তু আমরা জানি না যে এরকম ধাম রয়েছে। যেকোনো ভাবেই হোক, আমরা যদি নিজেদের সেই ধামে উন্নীত করতে পারি, তাহলে ন নিবর্তন্তে, যৎ গত্বা ন নিবর্ততে তৎ ধাম পরমম্‌ মম। অন্য জায়গায় বলা হয়েছে, ত্যত্ত্বা দেহং পুনর্জন্ম নৈতি মামেতি (ভ.গী. ৪.৯)

তাই মানুষের কাছে শ্রীকৃষ্ণ বা পরমেশ্বর ভগবান সন্মন্ধে কোন জ্ঞান নেই, তার নিজস্ব বাসস্থান রয়েছে এবং সেখানে যে কেউ যেতে পারে। কিভাবে যেতে পারে? যান্তি দেবব্রতা দেবান্‌ পিতৃন্‌ যান্তি পিতৃব্রতাঃ ভুতানি যান্তি ভূতেজ্যা যান্তি মদ্‌যাজিনোহপি মাম্‌ (ভ.গী.৯.২৫)

"যদি কেউ আমার ভক্তিতে স্থিত হয়, তাহলে সে আমার কাছে আসে।" অন্য জায়গায় তিনি বলেছেন, ভক্ত্যা মামভিজানাতি যাবান যশ্চাস্মি (ভ.গী. ১৮.৫৫)

আমাদের একমাত্র কাজ হল শ্রীকৃষ্ণকে জানা, যজ্ঞার্থে কর্ম। এটা অকর্ম। বলা হয়েছে, অকর্মণ, অকর্মণ্যহপি বোদ্ধব্যং, অকর্মণশ্চ বোদ্ধব্যং। অকর্ম মানে কোন প্রতিক্রিয়া না হওয়া। যদি আমরা নিজের ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য কাজ করি, তবে প্রতিক্রিয়া হবে.... যেমন একজন সৈনিক যদি হত্যা করে। তবে সে স্বর্ণপদক পাচ্ছে। সেই সৈনিক, যদি ঘরে একজনকে হত্যা করে, তবে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। কেন? সে আদালতে বলতে পারে, "স্যার, যখন আমি যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াই করছিলাম, তখন আমি অনেক শ্ত্রূকে হত্যা করেছি। আমি স্বর্ণপদক পেয়েছিলাম। তাহলে এখন কেন আপনি আমাকে ফাঁসিতে ঝুলাচ্ছেন?" "কারণ তুমি তোমার নিজের ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য কাজ করেছো। আর ঐটা তুমি সরকারী অনুমোদনে করেছো। "

অতএব যেকোনো কর্ম, যদি তুমি এটি কৃষ্ণের সন্তুষ্টির জন্য কর, তবে এটি অকর্ম, এটির কোন প্রতিক্রিয়া নেই। কিন্তু যদি তুমি তোমার নিজস্ব ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য কিছু কর, তবে তোমাকে তার ভাল বা খারাপ ফল ভোগ করতে হবে। তাই শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,

কর্মণোহপি বোদ্ধব্যং,
বোদ্ধব্যং চ বিকর্মণঃ
অকর্মণ্যশ্চ বোদ্ধব্যং
গহনা কর্মণ্য গতিঃ
(ভ.গী. 4.17)

এটা বুঝতে পারা খুব কঠিন যে, তোমার কি ধরনের কাজ করা উচিত। অতএব আমাদেরকে গুরু, কৃষ্ণ এবং শাস্ত্র থেকে নির্দেশনা প্রাপ্ত হতে হবে। তাহলে আমাদের জীবন সফল হবে। অসংখ্য ধন্যবাদ। হরে কৃষ্ণ।