BN/Prabhupada 0141 - মা আমাদের দুধ দেয় আর আপনারা মাকেই হত্যা করছেন



Garden Conversation -- June 14, 1976, Detroit

জয়াদ্বৈতঃ কলেজের অনুষ্ঠানে, সৎস্বরূপ মহারাজ এবং আমি বর্ণাশ্রম ধর্ম সম্পর্কে অনেক ক্লাস দিয়ে আসছি কারণ তারা সবসময় হিন্দুদের জাতিপ্রথা সম্পর্কে শুনতে চান, তাই ওটার ভিত্তিতেই তারা আমাদের নেবে তারপর আমরা বর্ণাশ্রম ধর্ম সম্পর্কে বর্ণনা করি। আর ওদের কাছে এটা পরাস্ত করার কোন ধারণাই নেই তারা সবসময়, কিছু সামান্য দুর্বল যুক্তি দেখায়, কিন্তু তাদের কাছে এর চেয়ে ভাল কোন পদ্ধতি নেই।

প্রভুপাদঃ তাদের যুক্তি কি?

জয়াদ্বৈতঃ খুব কমই .... তাদের সামান্য কিছু ধারণা আছে, তারা বলে যে কোন সামাজিক গতিবিধি নেই, কারণ জাতিপ্রথা নিয়ে ওদের ধারণা কেবল দেহের ভিত্তিতে

প্রভুপাদঃ না, এটা সঠিক বা বাস্তব নয়।

জয়াদ্বৈতঃ না।

প্রভুপাদঃ কেবল যোগ্যতা।

জয়াদ্বৈতঃ যখন আমরা প্রকৃত ধারণা উপস্থাপন করি, তখন তারা সেখানে কেবল বসে থাকে, তাদের কোন যুক্তিই থাকে না। এবং তারপর আমরা তাদের পদ্ধতিকে চ্যালেঞ্জ করি, যে "আপনাদের সমাজের উদ্দেশ্য কি? এর লক্ষ্য কি?" এবং তারা কিছুই বলতে পারে না।

প্রভুপাদঃ যতক্ষণ কাজের শ্রেণীবিভাগ না থাকছে, কিছুই পুরোপুরি ভালভাবে করা যাবে না শরীরের মধ্যেই প্রাকৃতিক বিভাগ আছে - মাথা, হাত, পেট এবং পা। একইভাবে, সমাজেও মাথা, বুদ্ধিমান শ্রেণীর পুরুষ, ব্রাহ্মণ ইত্যাদি থাকা আবশ্যক। তাহলে সবকিছু মসৃণভাবে চলবে। এবং, বর্তমানে মুহূর্তে, কোন বুদ্ধিমান শ্রেণী নেই। সকল শ্রমিক, কর্মী শ্রেণী, চতুর্থ শ্রেণী। প্রথম শ্রেণীর, দ্বিতীয় শ্রেণী নয়। অতএব সমাজ বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছে। কোন মস্তিষ্ক নেই।

জয়াদ্বৈতঃ যখন আমরা উপস্থাপন করি যে ব্রহ্মচারী, গৃহস্থ, বানপ্রস্থ, সন্ন্যাস তখন তাদের একমাত্র আপত্তি এবং তারা আপনা থেকেই শত্রুভাবাপন্ন হয়ে ওঠে, কারণ তারা বুঝেছে যে আমরা ইন্দ্রিয় তৃপ্তির বিপরীতে রয়েছি।

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। ইন্দ্রিয় তৃপ্তি হচ্ছে পশু সমাজ। এবং ইন্দ্রিয় নিয়ন্ত্রণ সভ্য মানুষের সমাজ .... ইন্দ্রিয় তৃপ্তি মানব সমাজ নয়। ইন্দ্রিয় তৃপ্তি মানব সভ্যতা নয়। না। তারা জানে না। তাদের মূল বিষয় ইন্দ্রিয় তৃপ্তি। এটা দোষ। তারা একটি মানব সভ্যতা হিসাবে পশু সভ্যতা চালাচ্ছে। এটা দোষ। ইন্দ্রিয় তৃপ্তি পশু সভ্যতা। এবং আসলে তারা পশু। যদি তারা নিজের সন্তানকে হত্যা করতে পারে, তবে সে পশু। শুধু বিড়াল, কুকুরের মত, তারা নিজের সন্তানকে হত্যা করে। এটা কি? এটা পশু। কে জানি বলছিল যে বাচ্চাকে থলেতে ভরে ফেলে দেয়?

হরিশৌরিঃ আবর্জনার জিনিসের ব্যাগে, ত্রিবিক্রম মহারাজ বলছিলেন, জাপানে। উনি বলছিলেন যে, কুড়ি হাজার শিশু, তারা একটি ফেলে দেওয়া লকারে রাখে এবং পরে তা ফেলে দেয়।

প্রভুপাদঃ বাস স্টেশন? ট্রেন স্টেশন? ব্যাগ ছুঁড়ে দেয়। ভেতরে রেখে বন্ধ করে দেয়, তাহলে আর ফিরে আসবে না। তারপর যখন খারাপ গন্ধ আসে .... এসবই চলছে। কেবল মাত্র পশু সভ্যতা। গাভীর থেকে দুধের শেষ বিন্দুটুকুও গ্রহণ করে এবং অবিলম্বে কসাই খানায় পাঠিয়ে দেয়। তারা এইরকম করছে কসাই খানায় পাঠানোর আগে, তারা গাভীর দুধের শেষ বিন্দুও বের করে নিচ্ছে। এবং অবিলম্বে হত্যা করছে। দুধ দরকার, সবাই এতো দুধ গ্রহণ করছে, দুধ ছাড়া তুমি পারবে না ... এবং যে প্রাণী থেকে তুমি দুধ খাবে, সে তোমার মা। তারা এটা ভুলে যায়। মা দুধ সরবরাহ করে, সে তার শরীর থেকে দুধ সরবরাহ করে, আর তুমি কি মাকে খাবে? এটা কি সভ্যতা ? মাকে মারা হচ্ছে? এবং দুধ প্রয়োজনীয়। এভাবে তুমি শেষ বিন্দুটিও নিয়ে নিচ্ছ। না হলে, গাভী থেকে শেষবিন্দু দুধটুকুও নেয়ার কি প্রয়োজন? দুধ তো দরকারি। সুতরাং কেন তাকে বাঁচতে দিচ্ছ না এবং দুধ সরবরাহ করতে দিচ্ছ না, দুধ থেকে শত শত এবং হাজার হাজার পুষ্টিকর সুস্বাদু খাবার তৈরি করা যায় কোথায় সেই বুদ্ধি? দুধ রক্তের রূপান্তর ছাড়া কিছুই নয়। তাই রক্ত ​​গ্রহণ করার পরিবর্তে, রক্তের রূপান্তর দুধ গ্রহণ করুন এবং ভালোভাবে বাঁচুন, সৎ ভদ্রলোকের মতো। না। তারা এমনকি ভদ্রলোকও নয়। দুর্বৃত্ত, অসভ্য। যদি আপনি মাংস নিতে চান, তাহলে আপনি শুকর ও কুকুরের মতো কিছু তুচ্ছ প্রাণীকে হত্যা করতে পারেন যার কোন ব্যবহার নেই। যদি একেবারে খেতেই চান, তাহলে ওদের খেতে পারেন, যেটা অনুমোদিত রয়েছে, শুকর এবং কুকুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কারণ কোনও ভদ্রলোক মাংস খেতে পারেন না। এটা নিম্ন শ্রেণির লোকদের কাজ। তাই তাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, "ঠিক আছে, তুমি শুকর খেতে পার, শ্বপচ।" নিম্ন শ্রেণীর লোকেরা, তারা শূকর ও কুকুর খাচ্ছে। এখনও, তারা খাচ্ছে। সুতরাং যদি আপনি মাংস খেতে চান, আপনি এই গুরুত্বহীন প্রাণী হত্যা করতে পারেন। কেন সেই পশুকে মেরে ফেলা হচ্ছে যার দুধের শেষবিন্দুও দরকার? কোন বুদ্ধিতে এটা করা হচ্ছে? আর যখনই কৃষ্ণকে দেখছি, তিনি পূতনাকে হত্যা করেছেন কিন্তু তাকে তাঁর মাতৃস্থান দিয়েছেন। কারণ কৃষ্ণ অনুগত অনুভব করেছেন যে, "পূতনার অভিপ্রায় যাই হোক না কেন, কিন্তু আমাকে তার স্তন পান করিয়েছে, তাই সে আমার মা।" তাই আমরা গাভী থেকে দুধ গ্রহণ করছি, তাহলে গাভী কি আমাদের মা নয়? দুধ ছাড়া কে বাঁচতে পারে? এবং এমন কে আছে যে গোদুগ্ধ পান করে নি? ঘুম থেকে উঠে সকালেই, দুধ প্রয়োজন। এবং যে প্রাণী সেই দুধ সরবরাহ করছে, সে মা নয়? এটা কোন ধরণের জ্ঞান? মাতৃহত্যাকারী সভ্যতা। আর ওরা আবার সুখী হতে চায় এই জন্য মাঝেমধ্যেই বড় বড় যুদ্ধ লাগছে, গণহারে হত্যা হত্যা হচ্ছে, গাভী হত্যার-ই প্রতিক্রিয়া