BN/Prabhupada 0172 - প্রকৃত ধর্ম হচ্ছে কৃষ্ণের প্রতি আত্মসমর্পণ করা



Lecture on SB 1.5.30 -- Vrndavana, August 11, 1974

যেটা ধর্ম, কৃষ্ণকে আত্মসমর্পণ করা। অন্যভাবে শ্রীমদ্ভাগবতমে বলা হয়েছে, ধর্ম প্রোজ্ঝিত কৈতব অত্র (শ্রী.ভা.১.১.২) সমস্ত প্রতারণামূলক ধর্মীয় ব্যবস্থা ভাগবত থেকে দূর করে দেওয়া হয়েছে। লাথি মেরে বের করে দেয়া হয়েছে। প্রোজ্ঝিত। ভগবানে লীন হওয়া, ভগবান হওয়া, ভগবানের অবতার হওয়া - এই ধরনের ধর্মীয় ব্যবস্থা খুব কঠোরভাবে ভাগবত থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। কারণ ওসব ধর্ম নয়। প্রকৃত ধর্ম হচ্ছে কৃষ্ণতে আত্মসমর্পণ করা।

অতএব বলা হয়, তৎতৎ সাক্ষাদ্‌ ভগবান উদিতম্‌ (শ্রীমদ্ভাগবত ১.৫.৩০)। যদি তুমি পরমেশ্বর ভগবানকে পেতে চাও, তাহলে তোমাকে অবশ্যই ভগবানের কথা মতো চলতে হবে কিন্তু তাদের কোন ধারণা নেই যে পরম পুরুষ ভগবান কে, তাঁর আদেশ কী, আমাদের সঙ্গে তার সম্পর্ক কী? এই জিনিস অজানা। এটি কেবলমাত্র ভক্তরা জানতে পারেন। এটি কেন কেবল ভক্তদের একচেটিয়া অধিকার? তাও ভগবৎ-গীতাতে উল্লিখিত হয়েছে, ভক্ত্যা মাম্‌ অভিজানাতি যাবান যশ্চাস্মি তত্ত্বত (ভ.গী. ১৮.৫৫) যদি আপনি জানতে চান ভগবান কি, কৃষ্ণ কি, তাহলে আপনাকে এই ভক্তি-মার্গ, অথবা ভক্তিমূলক মাধ্যমে যেতে হবে ... অন্য কোন উপায় নেই। কৃষ্ণ কখনোই বলেন না যে তিনি তথাকথিত জল্পনা কল্পনার ধারণা বা চর্চার মাধ্যমে তাঁকে জানা যায়। না। তারপর তিনি বলতে পারতেন, "জ্ঞানের মাধ্যমে কেউ আমাকে বুঝতে পারেন।" না। কোনও কর্মের দ্বারা না, যোগের দ্বারাও বুঝতে পারেন না। এটি শাস্ত্রে অনেক জায়গায় বিভিন্ন স্থানে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। শুধু ভক্তি। শুধু ভক্তি। এবং এটি আধ্যাত্মিক গুরুর কাজ, অথবা মহাত্মা, তিনি ভক্তি প্রচার করেন। যেটি সবচেয়ে গোপনীয় ... যেটি সবচেয়ে করুণাময় মানবহিতৈষী কাজ। কারণ মানুষ এই জ্ঞানের অভাবে দুঃখভোগ করছে। অতএব আমাদের কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন একমাত্র আন্দোলন - আমি খুব গর্বের সাথে ঘোষণা করতে পারি - যা আসলে মানব সমাজের কিছু উপকার করতে পারে। এটাই একমাত্র আন্দোলন। অন্যসব ফালতু আন্দোলন, আমি ঘোষণা করছি। ওদের আসতে দিন এবং শাস্ত্র অধ্যয়ন করতে দিন এবং নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে দিন। ওরা সব প্রতারণা করছে। শুধুমাত্র এই ভগবদ্ভক্তি। কারণ ভক্তিমূলক সেবা প্রক্রিয়া ছাড়া কেউ ভগবানকে বুঝতে পারে না। ভক্ত্যা মাম্‌ অভিজানাতি যাবান্‌ যশ্চাস্মি তত্ত্বতঃ (ভ.গী.১৮.৫৫) যদি আপনি সত্য জানতে চান, তত্ত্বতঃ ... কৃষ্ণ চান যে কেউ তাকে তত্ত্বতঃ বুঝুক। এইরকম নয় কৃষ্ণকে ভাসাভাসা ভাবে গ্রহণ করবেন, "তিনি গোপীদের খুব পছন্দ করতেন, এবং আমাদেরকে কৃষ্ণের লীলা শুনতে দিন।" শ্রীকৃষ্ণের গোপীলীলা কেন? অসুর হত্যা লীলা নয় কেন? ঐসব মানুষ শ্রীকৃষ্ণের অসুর হত্যা লীলা শুনতে আগ্রহী নয়? কারণ গোপীলীলায় যুবক যুবতীর মধ্যে আদানপ্রদান , তাই ওটা মানুষকের বেশি আকর্ষণ করে। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের আরও কাজও আছে পরিত্রাণায় সাধুনাম্‌ বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্‌ (ভ.গী ৪.৮)। সেটাও কৃষ্ণের লীলা। সেটা কৃষ্ণের লীলা। যেমন ভগবান রামচন্দ্র রাবণকে হত্যা করেছিলেন। এটাও কৃষ্ণের লীলা। ভগবান রামচন্দ্রের লীলা এবং কৃষ্ণের লীলা...

সুতরাং আমরা কৃষ্ণের যে কোনও লীলাকে পরম হিসাবে গ্রহণ করা উচিত। এমন না যে কেবল সবচেয়ে গোপনীয় লীলা ... বৃন্দাবন-লীলা, গোপীদের সঙ্গে কৃষ্ণের লীলা, সবচেয়ে গোপনীয় লীলা। আমরা এই গুহ্যতম লীলা নিয়ে বেশি আলোচনা করি না যদি না আমরা মুক্ত পুরুষ না হই। এটা খুব কঠিন বিষয়। এবং কৃষ্ণের লীলা কি তারা বোঝে না, তারা অনুকরণ করে, তারা পতিত হয়। অনেক কিছু আছে আমরা আলোচনা করতে চাই না কিন্তু আমাদের উচিত ... যদি আমরা কৃষ্ণ-লীলাতে অগ্রগতির ব্যাপারে আসলেই ঐকান্তিক হই, তাহলে আমরা প্রথমেই জানতে হবে যে কৃষ্ণ কি, কি তার উদ্দেশ্য, এবং কীভাবে আমরা কাজ করব। তারপর আমরা কৃষ্ণের গোপনীয় লীলার অংশে প্রবেশ করতে পারি। অন্যথায় আমরা ভুল বুঝব এবং পতিত হব।