BN/Prabhupada 0206 - বৈদিক সমাজে অর্থের কোন প্রশ্নই নেই



Morning Walk -- October 16, 1975, Johannesburg

প্রভুপাদঃ প্রথমে বুঝে নাও "এরা সব বদমাশ", এরপর এদের প্রশিক্ষণ দাও। সেটাই চাই। সবাইকে বদমাশ বলে ধরে নাও। । "কোন প্রশ্নই নেই যে ইনি বুদ্ধিমান মানুষ, ইনি বদমাশ, ইনি এই...না। প্রথমে ওদের সবাইকে বদমাশ মনে কর, এবং তারপর ওদের প্রশিক্ষণ দাও, সেটাই দরকার। এখন সেটাই দরকার। বর্তমান সময়ে পুরো দুনিয়া বদমাশে ভরে গেছে, এখন, যদি তারা কৃষ্ণ ভাবনামৃত গ্রহণ করে, তাদের মধ্যে খুঁজে নাও যেমনটা আমি প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, তোমরা প্রশিক্ষণের দ্বারা ব্রাহ্মণ হয়েছ। সুতরাং যারা প্রশিক্ষণ দ্বারা ব্রাহ্মণ হওয়ার জন্য প্রস্তুত, তাদেরকে ব্রাহ্মণ হিসাবে আলাদা গ্রহণ কর। যাদের ক্ষত্রিয় হিসাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়, তাদের আলাদা কর । এইভাবে, চাতুর্বর্ণ্যং ময়া সৃষ্ট (ভ.গী. ৪.১৩)

হরিকেশঃ আর ক্ষত্রিয় প্রত্যেককে নিযুক্ত করবে, আসলে সবাই শুদ্র এবং তারপর তাদের থেকে খুঁজে নিবে।

প্রভুপাদঃ হুম?

হরিকেশঃ ক্ষত্রিয় প্রথমে বাছাই করবে ...

প্রভুপাদঃ না না না তোমরা বাছাই কর... সমগ্র জনগণকে শূদ্র হিসেবে গ্রহণ কর। তারপর ...

হরিকেশঃ বাছাই করব।

প্রভুপাদঃ সেখান থেকে বাছাই কর, যে না ব্রাহ্মণ, না ক্ষত্রিয়, না বৈশ্য, সে শূদ্র। ব্যাস্‌, এটা খুব সহজ ব্যাপার। যদি তাকে প্রকৌশলী হিসাবে প্রশিক্ষিত না করা যায়, তাহলে তিনি একজন সাধারণ মানুষ হিসাবে হয়ে থাকবে কোন জবরদস্তি নেই। এই হচ্ছে সমাজ সংগঠনের পদ্ধতি। কোন জবরদস্তি নেই, শুদ্রদেরও প্রয়োজন আছে।

পুষ্ট কৃষ্ণঃ এখন আধুনিক সমাজে শিক্ষালাভের আগ্রহ হচ্ছে প্রকৌশলী হওয়ার জন্য টাকা প্রয়োজন। বৈদিক সংস্কৃতিতে অনুপ্রেরণা কি ছিল?

প্রভুপাদঃ টাকার কোন প্রয়োজন ছিল না। ব্রাহ্মণ সবাইকে নিঃশুল্ক শেখাতেন। টাকার কোন প্রশ্নই ছিল না। যে কেউ শিক্ষা নিতে পারতো একজন ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় বা বৈশ্য রূপে। সেখানে কেউ নেই... বৈশ্যদের কোন পড়াশোনার প্রয়োজন নেই। ক্ষত্রিয়দের অল্প প্রয়োজন ছিল, ব্রাহ্মণের প্রয়োজন ছিল, কিন্তু সেটা নিঃশুল্কতে। শুধু একজন ব্রাহ্মণ গুরু খুঁজুন এবং তিনি আপনাকে নিঃশুল্ক শিক্ষা দেবেন। ব্যাস। এটাই সমাজ। এখন, যখনই... বর্তমান সময়ে, যখন একজন শিক্ষিত হতে চায়, উনার টাকার প্রয়োজন হয়। কিন্তু বৈদিক সভ্যতায় টাকার কোন প্রশ্ন ছিল না, শিক্ষা নিঃশুল্ক ছিল।

হরিকেশঃ তাই অনুপ্রেরণা হচ্ছে সমাজে সুখ?

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ সেটাই... প্রত্যেকে উৎকন্ঠায় আছে। "কোথায় সুখ?" এটাতে সুখ হবে। যখন মানুষ শান্তিপূর্ণ হবে, তাদের জীবনে খুশি হবে, সেটাই খুশি নিয়ে আসবে। এটা কল্পনা করে না যে "যদি আমি একটি গগনচুম্বী ভবন পাই, তাহলে আমি খুশি হয়ে যাব" এবং তারপর ওটা থেকে ঝাঁপ দেও এবং আত্মহত্যা করো। এটাই চলছে। সে মনে করছে যে "যদি আমার একটি গগনচুম্বী ভবন থাকে তবে আমি খুশি হব" এবং যখন তিনি হতাশ হয়, তখন নিচে ঝাঁপ দিচ্ছে, এইরকম হচ্ছে। এটাই খুশী। এর অর্থ হল সবাই বদমাশ। তারা জানেই না সুখ কি। সেইজন্য প্রত্যেককে কৃষ্ণের পথ প্রদর্শন করার প্রয়োজন আছে। সেটাই কৃষ্ণ ভাবনামৃত। এখন তোমরা বলছ যে আত্মহত্যার হার এখানে বেশি?

পুষ্ট কৃষ্ণঃ হ্যাঁ

প্রভুপাদঃ কেন? এটা এমন একটা দেশ এখানে সোনার খনি আছে, এবং কেন তারা আত্মহত্যা করছে...? এবং তোমরা বলছিলে যে এখানে দরিদ্র হওয়া মুশকিল।

পুষ্ট কৃষ্ণঃ হ্যাঁ। এখানে দরিদ্র মানুষ হওয়ার জন্য আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। তবুও তারা আত্মহত্যা করছে। কেন? প্রত্যেকে ধনী এবং কেন তারা আত্মহত্যা করছে? হুম? এর উত্তর দিতে পারবে? ভক্তঃ তাদের প্রকৃত সুখের অভাব?

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ, এখানে কোন সুখই নেই।