BN/Prabhupada 0219 - মালিক হবার অর্থহীন বিচার ত্যাগ করুন



Lecture on SB 7.9.24 -- Mayapur, March 2, 1976

আপনার দেশের আশি শতাংশ, নব্বই শতাংশ, তারা ম্যালেরিয়া সংক্রমিত হয়, এবং তাদের সিফিলিস হয়। তফাৎটি কি? কেন আপনারা তৈরি করেছেন...? একজন চিকিৎসক হয়ে কেন তফাৎ করছেন, এই রোগ ওই রোগের চেয়ে ভাল? রোগ তো রোগই। আসলে এটাই ঘটনা। তুমি বলছ "আমরা ম্যালেরিয়াতে পীড়িত। এটা সিলিফিস হবার চাইতে ভাল। "না। রোগ তো রোগই। একইভাবে, ব্রহ্মা অথবা পিঁপড়ে, রোগ হচ্ছে কিভাবে প্রভু হবে। এটাই রোগ। এইজন্য এই রোগ থেকে মুক্ত হবার জন্য, কৃষ্ণ আসেন এই রোগ থেকে মুক্ত করার জন্য, স্পষ্টরূপে বললে দুষ্ট তুমি প্রভু নও, তুমি সেবক। আমার প্রতি আত্মসমর্পণ কর।" এটাই রোগের চকিৎসা। যদি আমরা সহমত হই যে, আর নয়,"আরে নারে বাপ, "আর প্রভু হতে চাই না," এটাই রোগের চিকিৎসা।

এইজন্য চৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন, প্রহ্লাদ মহারাজ বলছেন, নিজ ভৃত্য-পার্শ্বম্‌ (শ্রী.ভা.৭.৯.২৪) "আমাকে আপনার সেবকের সেবক রূপে নিযুক্ত করুন।" একই কথা চৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন, গোপীভর্তুঃ পদ কমলয়ো দাস দাসানুদাস (চৈ.চ.মধ্য ১৩.৮০) তাই কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন মানে আমাদেরকে প্রভু হবার এই অনর্থক চিন্তা ত্যাগ করতে হবে। এটাই কৃষ্ণ ভাবনামৃত। আমাদেরকে শিখতে হবে কিভাবে সেবক হতে হয়। শুধুমাত্র সেবক নয়, সেবকের সেবক, সেবকের...এটাই চিকিৎসা। এ কারণে প্রহ্লাদ মহারাজ বলেছিলেন, "আমি একজন প্রভু হয়ে উঠার এই অর্থহীনতাটি বুঝতে পেরেছি। আমার পিতাও প্রভু হতে চেষ্টা করেছিল। তাই এই জ্ঞান, আমি এখন সঠিক। মালিক হয়ে কোন লাভ নেই। এটা ভাল হয় যদি আপনি আমাকে এই আশির্বাদ করেন, কৃপা করে আপনার সেবকের সেবক হতে দিন। এটাই আশির্বাদ। তাই যিনি কৃষ্ণের সেবকের সেবক হওয়া শিখে নিয়েছেন, তিনি সঠিক। তাইজন্য চৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন, তৃনাদপি সুনিচেন তরোরপি সহিষ্ণুনা। একজন সেবককে সহ্য করতে হয়। সহ্য। সেবক, কখনো কখনো প্রভুকে আদেশ দেন, তখন তিনি বিরক্ত হয়ে যান। কিন্তু তারপরও, তিনি এটা সাধন করেন এবং সহ্য করেন। এটাই পরিপূর্ণতা। ভারতে এখনও একজন ব্যাক্তি যখন বিবাহ করতে যায়, উনার...এটা একটি রেওয়াজ। উনার মা পুত্রকে জিজ্ঞাস করে, "প্রিয় পুত্র, তুমি কোথায় যাচ্ছ?" সে মাকে উত্তর দেয়, মা আমি তোমার জন্য দাসী আনতে যাচ্ছি।" এটাই পদ্ধতি। "মা, আমি তোমার জন্য দাসী আনতে যাচ্ছি।" তার মানে " আমার স্ত্রী, তোমার পুত্রবধু, তোমাকে দাসীর মতন সেবা করবে।" এটা বৈদিক সভ্যতা।

যখন কৃষ্ণ তার ষোল হাজার পত্নীদের সহিত হস্তিনাপুর গিয়েছিল, তখন দৌপদী... এটা স্বাভাবিক যে, এক মহিলা আর মহিলার ভিতর, তারা তাদের স্বামীর সন্মন্ধে কথা বলে, এটা স্বাভাবিক। তখন দৌপদী কৃষ্ণের প্রত্যেক স্ত্রীকে জিঞাসা করতে লাগলেন। তাদের সবাইকে নয়, এটি অসম্ভব, ষোল হাজারকে জিজ্ঞাস করা। কম করে মুখ্য রানীদের থেকে শুরু করেন... কি বলে (অপষ্ট)? রুক্মিণী, হ্যাঁ। তাদের মধ্যে সবাই তাদের বিবাহ সমারোহের কথা বর্ননা করছিল, যে "আমার..." রুক্মিণী বর্ননা করেছিল যে, " আমার পিতা চাইছিল কৃষ্ণের কাছে আমার বিয়ে দিতে কিন্তু আমার বড় ভাই রাজী ছিল না। সে চাইছিল শিশুপালের সাথে আমার বিবাহ দিতে, তাই আমি এই বিচার পছন্দ করি নি। আমি কৃষ্ণকে একটা ব্যাক্তিগত পত্র লিখি, যে "আমি আমার জীবন আপনাকে সমর্পন করেছি, কিন্তু এটা এখন আমার অবস্থা। অনুগ্রহ করে আসুন এবং আমাকে অপহরন করুন।' তখন এইভাবে কৃষ্ণ আমাকে অপহরণ করেন এবং আমাকে তার দাসী বানিয়েছেন।" রাণীর মেয়ে, রাজার মেয়ে...তারা প্রত্যেকে রাজার মেয়ে ছিল। তারা সাধারন ব্যাক্তির মেয়ে ছিল না, কিন্তু তারা কৃষ্ণের দাসী হতে চেয়েছিলেন। এটাই বিচার, দাসী হওয়া বা চাকর হওয়া। এটাই মানব সভ্যতার আদর্শ। প্রত্যেক মহিলার উচিত উনার স্বামীর দাসী হওয়ার চেষ্টা করা। এবং প্রত্যেক মানুষের উচিত কৃষ্ণের শতবার দাস হওয়ার চেষ্টা করা। এটাই ভারতীয় সভ্যতা, এই নয় যে, "স্বামী এবং স্ত্রী, আমাদের সমান অধিকার আছে।" এটা ইউরোপে, আমেরিকায়, আন্দোলন চলছে, "সমান অধিকার।" এটা বৈদিক সভ্যতা নয়। বৈদিক সভ্যতা হলো স্বামী কৃষ্ণের একজন আন্তরিক দাস হবে, এবং স্ত্রীর উচিত স্বামীর একজন আন্তরিক দাস হওয়া।