BN/Prabhupada 0226 - ভগবানের নাম, মহিমা, কার্যকলাপ, সুন্দরতা, ভালবাসা প্রচার করুন



Lecture -- Los Angeles, May 18, 1972

ব্যবহারিক ভাবে কৃষ্ণ এই জড় জগতের ভিতর নেই। যেমন বড় লোকের মতো, তার কারখানা চলছে, তার ব্যবসা চলছে কিন্তু এটা জরুরী নয় যে সেখানে তাকে উপস্থিত থাকতে হবে। একইভাবে, কৃষ্ণের শক্তি কাজ করছে, তার সহকারী, তার অনেক দেবতা আছে, তারা কাজ করছেন। এটা শাস্ত্রের মধ্যে বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন সূর্যের মত। সূর্য একটি বাস্তব কারণ এই জড় অভিব্যক্তির। এটা ব্রহ্ম সংহিতায় বর্ণিত হয়েছে।

যৎ-চক্ষুরেষা সবিতা সকল-গ্রহনাম
রাজা সমস্ত-সুর-মূর্তির অশেষ-তেজা
যস্যাগ্রয়া ভ্রমতি সংভৃত-কাল-চক্র
গোবিন্দ আদি-পুরুষং তমঃ অহম ভজামি।
(বি.এস. ৫.৫২)

গোবিন্দ...সূর্যকে বর্ণনা করা হয়েছে, ভগবানের একটা চক্ষু। তিনি সবকিছু দেখছে। আপনি নিজেকে ভগবানের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতে পারবেন না, যেহেতু আপনি নিজেকে সূর্য থেকে লুকিয়ে রাখতে পারবেন না। সুতরাং, এইভাবে ভগবানের নাম, যে কোন নাম হতে পারে... এবং বৈদিক সাহিত্যে এটা স্বীকার করা হয় যে, ভগবানের অনেক নাম রয়েছে, কিন্তু কৃষ্ণের এই নামটি প্রধান নাম। মুখ্য। মুখ্য মানে প্রধান এবং এটা খুব ভালভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে: "সব আকর্ষণীয়।" তাই অনেক উপায়ে তারা সব আকর্ষণীয়। তাই ভগবানের নাম ... কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন ভগবানের নাম প্রচার করছে, ভগবানের মহিমা, ভগবানের কার্যকলাপ, ভগবানের সৌন্দর্য, ভগবানের ভালবাসা সবকিছু। আমরা এই জড় জগতে অনেক কিছু পাই, সেগুলির সব, কৃষ্ণের মধ্যে আছে। আপনার যা কিছু আছে এখানে।

যেমন এখানে এই জড় জগতের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল যৌন আকর্ষণ। সুতরাং এটি কৃষ্ণের মধ্যে আছে, আমরা রাধা এবং কৃষ্ণের পূজা করছি, আকর্ষন। কিন্তু এই আকর্ষণ এবং সেই আকর্ষণ এক নয়। ওটা বাস্তব এবং এখানে এটি অবাস্তব। আমরা সেই সবকিছুর সাথে কাজ করছি যেটি আধ্যাত্মিক জগতে আছে কিন্তু যেটি শুধুমাত্র প্রতিফলন। সেগুলির কোন বাস্তব মূল্য নেই। যেমন দর্জির বা কাপড়ের দোকানে, কখনো কখনো সেখানে সুন্দর পুতুল থাকে। একটি সুন্দর মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু কেউ এটা দেখার পরোয়া করে না। কারণ সবাই জানেন যে "এটি নকল।" যতই সুন্দর হোক না কেন, এটা নকল।" কিন্তু যদি একটি জীবন্ত মহিলা সুন্দর হয়, তাহলে অনেক লোক তাকে দেখে। কারণ এটি আসল। এটি একটি উদাহরণ। তথাকথিত জীবিত এখানেও মৃত কারণ শরীরের তরল পদার্থ। এটি একটি তরল পদার্থ। যখনই আত্মা সুন্দর নারী থেকে দূরে চলে যায়, কেউ এটি দেখার জন্য পরোয়া করে না। কারণ এটা দরজির দোকানের জানালায় একটা পুতুলের মতো। তাই আসল কারণ আত্মা এবং কারণ সবকিছু এখানে মৃত তরল পদার্থ দ্বারা গঠিত, সুতরাং এটি শুধুমাত্র নকল, প্রতিফলন। বাস্তব জিনিস আধ্যাত্মিক জগতে আছে|

একটি আধ্যাত্মিক জগত আছে। যারা ভগবদ গীতা পড়েন তারা বুঝতে পারেন। আধ্যাত্মিক জগতের কথা সেখানে বর্ণনা করা হয়েছেঃ পরঃ তস্মাৎ তু ভাবঃ অন্যঃ অব্যক্তঃ অব্যক্তাৎ সনাতনঃ (ভ.গী.৮.২০) ভাবঃ মানে প্রকৃতি। এই প্রকৃতির বাইরে আরেকটি প্রকৃতি আছে। আমরা আকাশ পর্যন্ত এই প্রকৃতি দেখতে পাই। বিজ্ঞানীরা, তারা সর্বোচ্চ গ্রহে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, কিন্তু তারা গণনা করছে যে এটি চল্লিশ হাজার বছর লাগবে। তাহলে চল্লিশ হাজার বছর ধরে কে বাঁচবে, আবার ফিরে আসবে? কিন্তু গ্রহটি সেখানে আছে। তাই আমরা এই জড় জগতের লম্বা ও চওড়া গণনা করতে পারি না, তা আধ্যাত্মিক জগতের আর কী কথা? তাই আমাদেরপ্রামানিক উৎস থেকে জানা উচিত। এই প্রামানিক উৎস হচ্ছে কৃষ্ণ। কারণ আমরা ইতিমধ্যেই এটি বর্ণনা করেছি, কৃষ্ণের চেয়ে কেউ আর বুদ্ধিমান বা জ্ঞানী নয়। তাই কৃষ্ণ এই জ্ঞান দিচ্ছেন, যে পরঃ তস্মাৎ তু ভাবঃ অন্যঃ (ভ.গী ৮.২০) "এই জড় জগতের বাইরে সেখানে অন্য আধ্যাত্মিক আকাশ রয়েছে।" অসংখ্য গ্রহও আছে। এবং সেই আকাশ এই আকাশের তুলনায় অনেক বড়। এটা শুধুমাত্র এক চতুর্থাংশ এবং আধ্যাত্মিক আকাশ তিন চতুর্থাংশ। ভগবদ গীতাতে বর্ণিত আছে, একাংশেন স্থিত জগত (ভ.গী.১০.৪২)। এটা শুধুমাত্র এক চতুর্থাংশ এই জড় জগতের। অন্য আধ্যাত্মিক জগত তিন চতুর্থাংশ। ধর, ভগবানের সৃষ্টি একশত। এটা মাত্র পঁচিশ শতাংশ, পচাঁত্তর শতাংশ সেখানে আছে। একইভাবে, জীব এখানে বসবাস করে, জীবের একটি খুব ছোট অংশ এখানে বসবাস করে। এবং সেখানে, আধ্যাত্মিক জগতে, প্রধান অংশ সেখানে আছে।