BN/Prabhupada 0245 - প্রত্যেকে নিজের ইন্দ্রিয় সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছে



Lecture on BG 2.9 -- London, August 15, 1973

শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছে সমস্ত ইন্দ্রিয়ের মালিক। সমগ্র বিশ্ব ইন্দ্রিয় সন্তুষ্টির জন্য সংগ্রাম করছে। এখানে সহজ দর্শনের, সত্য হল যে, "প্রথমেই কৃষ্ণকে উপভোগ করতে দিন, তিনি হলেন মালিক, তারপর আমরা আনন্দ করব।" তেন ত্যক্তেন ভুঞ্জিথা। ঈশোপনিষদে বলা হয়েছে সবকিছু কৃষ্ণের। ঈশাবাস্য ঈদং সর্বম (ঈ.প.১) "সবকিছু কৃষ্ণের।" এটাই আমাদের ভুল। সবকিছুই কৃষ্ণের, কিন্তু আমরা চিন্তা করি, "সবকিছুই আমার।" এটা মায়া। অহং মমেতি (শ্রী.ভা. ৫.৫.৮) অহং মামেতি। জনস্য মোহ 'যং অহং মামেতি। এটা মায়া। প্রত্যেকে ভাবছে, "আমি এই শরীর, এবং সবকিছু, যা কিছু আমরা খুজে পাই এই জগতে, সেগুলি আমার আনন্দের জন্যে।" এটা এই সভ্যতার দোষ। প্রকৃত জ্ঞান হল: "সবই ভগবানের। যা কিছু তিনি আমাকে দিয়েছেন তা আমি গ্রহণ করতে পারি, দয়া করে অনুমতি দিন।" তেন ত্যক্তেন ভুঞ্জিথা। এটি বৈষ্ণব দর্শন নয়, বরং এটিই বাস্তব সত্য। কেউ মালিক নন। ঈশাবাস্য ইদম সর্বং। প্রত্যেক...কৃষ্ণ বলেছেন, "আমি ভোক্তা, আমি মালিক।" সর্ব-লোক-মহেশ্বরম (ভ.গী.৫.২৯) মহেশ্বরম। মহা মানে মহান। আমরা নিজেকে ঈশ্বর দাবি করতে পারি, নিয়ামক, কিন্তু কৃষ্ণ বিশ্বের মহেশ্বর "নিয়ন্ত্রকের নিয়ন্তা" হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে, এই হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণ। কেউ স্বাধীন ভাবে নিয়ন্ত্রক নয়।

তাই কৃষ্ণ বলেছেন, হৃষিকেশ। হৃষিকেন হৃষিকেশ সেবনং ভক্তির উচ্যতে (চৈ.চ.মধ্য ১৯.১৭০) আর ভক্তির অর্থ হল হৃষিকেশের সেবা করা হৃষিক দ্বারা। হৃষিক মানে ইন্দ্রিয়। কৃষ্ণ ইন্দ্রিয়ের মালিক এবং সেইজন্য যে ইন্দ্রিয় আমি পেয়েছি, তার মালিক কৃষ্ণ, স্বামী কৃষ্ণ। সুতরাং যখন আমাদের ইন্দ্রিয় মালিকের ইন্দ্রিয় সন্তুষ্টির জন্য ব্যবহৃত হয়, তখন তাকে ভক্তি বলা হয়। এটাই ভক্তি, ভক্তিমূলক সেবা এর সংজ্ঞা। আর যখন ইন্দ্রিয় নিযুক্ত হয় ইন্দ্রিয় তৃপ্তির কাজে, মালিকের জন্য নয় তখন তাকে কাম বলা হয়। কাম এবং প্রেম। প্রেমের অর্থ হচ্ছে কৃষ্ণকে ভালোবাসা এবং সবকিছু কৃষ্ণের সন্তুষ্টি বিধানের জন্য করা। সেটাই প্রেম, ভালোবাসা। এবং কাম মানে সবকিছু নিজের ইন্দ্রিয় সন্তুষ্টির জন্য করা। এটাই পার্থক্য, ইন্দ্রিয় হচ্ছে মাধ্যম। সুতরাং আপনি যেকোন একটি করতে পারেন, আপনার ইন্দ্রিয় সন্তুষ্ট, অথবা কৃষ্ণের ইন্দ্রিয় সন্তুষ্ট। কিন্তু যখন আপনি কৃষ্ণের ইন্দ্রিয়কে সন্তুষ্ট করেন, তখন আপনি সঠিক। এবং যখন আপনি আপনার ইন্দ্রিয় সন্তুষ্ট করবেন, তখন আপনি অসম্পূর্ণ, ভ্রম মধ্যে থাকবেন। কারণ আপনি আপনার ইন্দ্রিয়কে সন্তুষ্ট করতে পারেন না। কৃষ্ণ ছাড়া এটি সম্ভব নয়। হৃষিকেন হৃষিকেশ সেবনং ভক্তির উচ্যতে (চৈ.চ.মধ্য.১৯.১৭০)

এজন্যই আমাদেরকে ইন্দ্রিয়কে শুদ্ধ করতে হবে। বর্তমান সময়ে, সবাই তাদের ইন্দ্রিয়কে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছে। অহং মামেতি। জনস্য মোহ যং (শ্রী.ভা.৫.৫.৮) পুংস স্ত্রীয় মিথুনীভাবমেতম্‌ এতৎ। পুরো জড় জগত এটাই... দুই প্রকার জীব পুরুষ এবং মহিলা। পুরুষ তার ইন্দ্রিয় সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছে এবং মহিলা তার ইন্দ্রিয় সন্তুষ্ট করারা চেষ্টা করছে। এখানে তথাকথিত ভালবাসা মানে ... ভালবাসা সেখানে নেই এটা হতে পারে না কারণ পুরুষ এবং মহিলা, অন্য কেউ অন্য পক্ষের ইন্দ্রিয় সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছে না। প্রত্যেক ব্যক্তি তার ইন্দ্রিয় সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছে। একজন মহিলা তার ইন্দ্রিয়কে সন্তুষ্ট করার জন্য একজন পুরুষকে ভালোবাসে এবং একজন পুরুষ নিজেকে সন্তুষ্ট করার জন্য একজন মহিলাকে ভালবাসে। অতএব, যত তাড়াতাড়ি ইন্দ্রিয় সন্তুষ্টির মধ্যে কিছু সামান্য ঝামেলা হয়, বিবাহবিচ্ছেদ। "আমি এটা চাই না।" কারণ কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ব্যাক্তিগত ইন্দ্রিয় সন্তুষ্টি। কিন্তু আমরা লোকদেখানো তৈরি করি, "আহ্‌ আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি, আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি"। এটা ভালবাসা নয়। এটা কাম, লালসা। জড় জগতে প্রেমের সম্ভাবনা নেই। এটি সম্ভব নয়। তথাকথিত প্রেম, শুধুমাত্র প্রতারণা, প্রতারণা। "আমি তোমাকে ভালোবাসি, আমি তোমাকে ভালোবাসি কারণ তুমি সুন্দর, এটা আমার ইন্দ্রিয়কে সন্তুষ্ট করবে। কারণ তুমি যুবক, এটি আমার ইন্দ্রিয়কে সুখ দেবে।" এটাই দুনিয়া, জড় জগত মানে এটা। পুংস স্ত্রীয়া মিথুনীভাবমেতৎ। এই জড় জগতের মৌলিক নীতি হল ইন্দ্রিয় তৃপ্তি। যং মৈথুনাদি গৃহমেধী সুখং হি তুচ্ছম্‌। কন্ডুয়নেন করয়োর ইব দুঃখ-দুঃখম্‌ (ভাগবত ৭.৯.৪৫)