BN/Prabhupada 0325 - কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন প্রসারের জন্য চেষ্টা করো, আর এটাই তোমার সাধনা



Class in Los Angeles -- Los Angeles, November 15, 1968

কৃষ্ণ ভাবনামৃত খুবই সুন্দর। এটা একটি আস্বাদনীয় ব্যাপার। সমস্ত ছেলেরা, যে কোনো মানুষ এখানে আসতে পারেন এবং তাদের জিজ্ঞাসা করুন তারা কেমন অনুভব করছে। যতক্ষণ না তারা আধ্যাত্মিক সন্তুষ্টি অনুভব করছে, তারা কীভাবে সমস্ত কিছু ত্যাগ করে কৃষ্ণ ভাবনামৃতের কীর্তনের সহিত যুক্ত হবে? তাই এটি আস্বাদনীয়। নৈষাম্‌ মতিস্তাবদ্‌ উরুক্রমাঁঘ্রিম্‌। মতিস্তাবদ্‌ উরুক্রমাঁঘ্রিম।উরুক্রমাঁঘ্রিম। উরুক্রম, কৃষ্ণের আরেক নাম উরুক্রম। উরুক্রম মানে... উরু মানে খুব কঠিন এবং ক্রম মানে পদক্ষেপ। যেমন কৃষ্ণ বামন অবতারে তার একটি পা আকাশ পর্যন্ত রেখেছিলেন। তাই তাঁর নাম উরুক্রম। তাই কেউ তার মন কে ততদিন কৃষ্ণের চরনে সর্মপন করতে পারে না যতদিন মহিয়সাম পদ-রজভিষেকম নিষ্কিঞ্চনানাম্‌ ন বৃণীত যাবৎ। এটা কখনই সম্ভব নয় যতক্ষন না তিনি কৃপা লাভ করেন তাঁর চরন ধূলির স্পর্শ পেয়ে যিনি নিশকিঞ্চন। যাঁর জাগতিক ভোগের বাসনা নেই, মহিয়সাম, এবং তাঁর জীবন কৃষ্ণের জন্য নিবেদিত। যত তাড়াতাড়ি এইরকম ব্যক্তির সঙ্গ লাভ করা যায়, যার অনুগ্রহে এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত লাভ করা যায়। অন্য কোনো উপায়ে নয়। নৈষাম্‌ মতিস্তাবদ্‌ উরুক্রমাঁঘ্রিম (শ্রী.ভা. ৭.৫.৩২)। পরীক্ষা্টি হবে স্পৃশতি অনর্থপোগমম্‌ যদ অর্থ মহীয়সাম্‌ পাদো- রজ-ভিষেকম নিষ্কিঞ্চিনাম্‌ ন বৃণীত যাবৎ। এটিই পরিক্ষা, এবং একজন সৎ ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার সুযোগ। এবং তাঁর কৃপা এবং দয়ায় তাঁর থেকে কৃষ্ণ ভাবনা গ্রহন করা। কিন্তু আমরা এটী যত তাড়াতাড়ি গ্রহন করব শীঘ্রই আমরা জাগতিক বস্তুর থেকে মুক্তি পাব। শীঘ্র ,শীঘ্র। এবং যখন তিনি প্রগতি লাভ করবেন, প্রগতি, প্রগতি, তাঁর জীবন আরো বেশী উন্নত হয়ে উঠবে। এখন আরও একটি কথা ... কোন প্রশ্ন করতে পারেন, ধরুন কেউ অনুভুতির বাইরে কৃষ্ণ ভাবনামৃত গ্রহন করেছেন, কিন্তু তিনি সেটা শেষ করেন নি। তার ফল কী হবে? এটা শ্রীমদ্ভাগবতমে বলা হয়েছে। ত্যক্তা স্ব-ধর্মম্‌ চরণাম্বুজম্‌ হরেঃ (শ্রী.ভা. ১.৫.১৭)। স্ব- ধর্মম।

স্ব- ধর্ম মানে প্রত্যেকের কিছু না কিছু কর্তব্য, কাজ। প্রত্যেকের। যদি কেউ তার কর্তব্য ত্যাগ করেন যাতে তিনি যুক্ত, ত্যক্তা স্ব-ধর্মম... যেমন অনেক ছেলে মেয়েরা এখানে আসে। তারা অন্য কোথাও কাজ করার জন্য নিযুক্ত ছিলেন কিন্তু হঠাৎ যদি তারা কৃষ্ণ ভাবনামৃতে যোগদান করেন এবং তা গ্রহন করেন। তাঁদের জন্য ভাগবতে বলা হয়েছে, ত্যক্তা স্ব-ধর্মম... স্ব মানে তার নিজের কাজ, ধর্ম। এখানে ধর্ম মানে ধর্মাচরন নয়। কর্তব্য কর্ম। ত্যক্তা স্ব-ধর্মম্‌ চরণাম্বুজম্‌ হরে। ধরুন কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন শ্রবন করার পরে, তিনি ঠিক করলেন যে আমি এখন থেকে কৃষ্ণ ভাবনামৃতে যোগদান করব," এবং তিনি তাঁর নির্ধারিত কর্তব্য কর্ম ত্যাগ করে দিলেন। ত্যক্তা স্ব-ধর্মম চরনামভুজম হরের ভজন্ন অপক্য বা ত পতেত ততো যদি (শ্রী.ভা. ১.৫.১৭)। ভজন্ন। তিনি নিয়মিত জপ এবং অন্যান্য নিয়ম গুলি পালন করতে থাকেন, কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি পতিত হন। তিনি পতিত হন। এবং নিয়ম গুলি পালন করতে পারেন না। কোনো কারন এবং পরিস্থিতির ফলে তিনি পতিত হন। তাই ভাগবতমে বলা হয়েছে, " তাঁর যে পতন হলো তাঁর কী ভুল ছিল? কেবল দেখুন। যদি তিনি কৃষ্ণ ভাবনামৃতে অপরিপক্ক উন্নতির ফলে পতিত হন তার মানে তিনি পরাজিত নন। ভাগবতম এ বলা হয়েছে, কো বার্থ আপ্ত ভজতাম্‌ স্ব- ধর্মতঃ। আর যিনি তাঁর কর্তব্য কর্মে অটল ভাবে যুক্ত থাকেন তাঁর কী লাভ হয়? তিনি হতভাগ্য কারণ তিনি জানেন না তাঁর জীবনের লক্ষ্য কি। কিন্তু যদি একজন ব্যক্তি কৃষ্ণ ভাবনামৃতে যোগদান করেন, যদি তিনি আমাদের সাথে কিছু দিন থাকেন, তিনি কৃষ্ণ ভাবনামৃতের সঙ্গ পান তাহলে পরবর্তী জন্মে তিনি পুনরায় পুনরায় পুনরায় এটি শুরু করবেন। সুতরাং তিনি পরাজিত নন। কৃষ্ণ ভাবনামৃতের একটি ইনজেকশন তাঁকে একদিন কৃষ্ণ ভাবনামৃতে সফল করবেই। এবং তিনি অবশ্যই ভগবানের কাছে ফিরে যাবেন, এবং ভগবদ্ধামে ফিরে যাবেন। সুতরাং কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে হবে। এবং এটাই আপনার সাধনা, কৃচ্ছতা সাধন, তপস্যা কারণ আপনাকে অনেক বাধা এবং লড়াই এর সম্মুখীন হতে হবে। এটাই তপস্যা। আপনাকে অনেক অপমান, কষ্ট, এবং অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে। ব্যক্তিগত অসুবিধা, টাকা সমস্ত কিছু ত্যাগ করতে হবে- কিন্তু কোনোটাই বিফল হবে না। নিশ্চিত থাকুন। এটা বিফল হবে না। কৃষ্ণ বলেছেন মানে, আপনি পুরষ্কৃত হবেন। আপনি এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত কে বাস্তবায়িত করুন।

অনেক ধন্যবাদ।