BN/Prabhupada 0334 - জীবনের আসল প্রয়োজন আত্মাকে সুখ প্রদান করা



Lecture on SB 1.8.33 -- Los Angeles, April 25, 1972

শারীরিক আরাম আপনাকে কখনই রক্ষা করতে পারবে না। ধরুন একটি মানুষ খুব আরামদায়ক ভাবে থাকে। এর মানে কী এই যে তিনি কখনো মারা যাবেন না। তিনি মারা যাবেন। সুতরাং শারীরিক আরাম দ্বারা আপনি কখনই টিকে থাকতে পারবেন না। যোগ্যতমের বেঁচে থাকা। বেঁচে থাকার জন্য লড়াই। সুতরাং যখন আমরা শরীরের দেখাশোনা করবো, সেটা হবে ধর্মস্য গ্লানি, অপবিত্র। আমাকে জানতে হবে যে শরীরের কী প্রয়োজন, আত্মার কী প্রয়োজন। আমাদের জীবনের বাস্তবিক আবশ্যকতা হল আত্মার সন্তুষ্টি প্রদান করা। এবং আত্মা কখনই জাগতিক সুবিধার দ্বারা সন্তুষ্ট হয় না। কারন আত্মার একটি অন্য পরিচয় আছে, আত্মার আধ্যাত্মিক খাদ্য প্রয়োজন। এই আধ্যাত্মিক খাদ্য হলো কৃষ্ণ ভাবনামৃত। যদি আপনি আত্মাকে আধ্যাত্মিক খাদ্য দেন... খাদ্য, যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে আপনি তাকে খাবার এবং ঔষধ দেন। দুটো জিনিসেরই আবশ্যকতা আছে। যদি আপনি কেবল ঔষধ দেন খাবার না দেন, তাহলে খুব একটা সফলতা আসবে না। দুটিই। সুতরাং কৃষ্ণভাবনামৃতের অর্থ হল আত্মাকে খাদ্য, আহার এবং ঔষধ দেওয়া। আর ঔষধ হলো হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র। ভবাশৌধাচ চ্রোত্র মন অভিরামাত ক উত্তমশ্লোক গুনানুবাদাত পুমান বিরাজ্যেত বিনা পশুঘ্নাত (শ্রী.ভা. ১০.১৪)। পরিক্ষীৎ মহারাজ শুকদেব গোস্বামী কে বলেছেন যে, "যে ভাগবতমের জ্ঞান আপনি আমাকে দিতে প্রস্তুত, এটি একটি সহজ জিনিস নয়।" নিবৃত্ত-তর্শৈর উপগীয়মানাত। এই ভাগবত চর্চা সেই ব্যক্তি পছন্দ করেন যিনি নিবৃত্ত তৃষ্ণা। তৃষ্ণা, তৃষ্ণা মানে আকাঙ্খা। এই জড়জগতে প্রত্যেকেই আকাঙ্খিত, আকাঙ্খিত। তো যিনি এই আকাঙ্খা থেকে মুক্ত হতে পারবেন তিনি ভাগবতের স্বাদ বুঝতে পারবেন, এটা কতটা সুস্বাদু। এটা একটি কথা। নির্বৃত্ত তর্শৈ। সাধারনত ভাগবত মানে, হরে কৃষ্ণ মহমন্ত্র হলো ভাগবত। ভাগবত মানে পরমেশ্বরের সঙ্গে সম্বন্ধ যুক্ত যা কিছু। সেটাই ভাগবত। পরমেশ্বর কে বলা হয় ভগবান। ভগবত শব্দ, এবং তাঁর সাথে সম্পর্কযুক্ত যে কোনো কিছু। ভাগবত শব্দ ভাগবত শব্দে পরিণত হয়ে যায়।

তাই পরিক্ষীৎ মহারাজ বলেছেন যে ভাগবতের স্বাদ কেবল মাত্র একজন মানুষই উপলব্ধি করতে পারে যে জাগতিক বস্তুর আকাঙ্খা ত্যাগ করেছে। নিবৃত্ত তর্শৈর উপগীয়মানাত। কেনো এই ধরনের বস্তুর স্বাদ গ্রহন করতে চাইছেন? ভবৌষধি। ভবৌষধি আমাদের জন্ম এবং মৃত্যু রোগের ঔষধ। ভব মানে হয়ে ওঠা। আমাদের বর্তমান মুহুর্তে আমরা রোগগ্রস্থ অবস্থায় আছি। তারা জানে না রোগগ্রস্থ অবস্থা টি কী, স্বাস্থ্যবান অবস্থা টি কী, এরা বদমাশরা। তারা কিচ্ছু জানে না। তবুও তারা একজন মহান বিজ্ঞানী, দার্শনিক... তারা কখনো অনুসন্ধান করে না যে, "আমি মরতে চাই না। তবু কেনো আমার মৃত্যু আসবে?" কোনো অনুসন্ধান নেই। কোনো সমাধান নেই। এবং তারা বৈজ্ঞানিক। বিজ্ঞানীরা কি ধরনের? বিজ্ঞান মানে যে আপনি জ্ঞানে এগিয়ে থাকবেন যাতে আপনার জীবনের দুর্বৃত্ত অবস্থা হ্রাস হয়, অন্তত এটাই বিজ্ঞান। তা নাহলে কীসের বিজ্ঞান? তারা কেবল প্রতিশ্রুতি দেয়, "ভবিষ্যতে।" " কিন্তু এখন আপনি কী দিচ্ছেন সাহেব?" "এখন তুমি যেমন কষ্ট পাচ্ছো, তেমনি দুঃখ ভোগ কর। ভবিষ্যতে আমরা কিছু রাসায়নিকের সন্ধান পাব।" না। আসলে অত্যান্তিক দুঃখ নিবৃত্তি। অত্যান্তিক, পরম। অত্যান্তিক মানে পরম। দুঃখ মানে কষ্ট। এটাই মনুষ্য জীবনের লক্ষ্য। তাই তারা জানে না অত্যান্তিক দুঃখ কী। দুঃখ মানে কষ্ট। অত্যান্তিক দুঃখ সম্পর্কে ভগবদ গীতায় বলা হয়েছে। এখানে অত্যান্তিক দুঃখ , সাহেব।"এটা কী? জন্ম-মৃত্যু-জড়া-ব্যধি (ভ.গী. ১৩.৯) জন্ম, মৃত্যু, বার্ধ্যক্য, ব্যধি।