BN/Prabhupada 0343 - আমরা মূঢ়কে শিক্ষিত করার জন্য চেষ্টা করছি



Lecture on BG 3.27 -- Madras, January 1, 1976

কৃষ্ণ, যখন তিনি এই গ্রহে উপস্থিত ছিলেন, এটি বাস্তবিকভাবে দেখিয়েছেন, যে, তিনি সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করেন, কিন্তু কেউ তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এই হচ্ছে ঈশ্বর। একেই পরমেশ্বর বলা হয়। ঈশ্বর সবাই হতে পারে ভগবান সবাই হতে পারে। কিন্তু পরম ভগবান হচ্ছেন কৃষ্ণ। নিত্য নিত্যানাম চেতনস চেতনানাম (ক.উ.২.২.১৩) তাই আমাদের এটা খুব ভালভাবে বুঝতে হবে এবং এটি খুব কঠিন নয়। একই নিয়ন্তা আমাদের সামনে একজন মানুষ হিসাবে আমাদের সামনে এসেছে। কিন্তু আমরা তাকে গ্রহণ করছি না। এটাই অসুবিধা। অবজানন্তি মাং মূঢ়া মানুষিং তনুম আশ্রিতম (ভ.গী.৯.১১)। কৃষ্ণ বলেছেন যে, " আমি প্রদর্শন করতে আসছি, "আমি যে সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণকারী, এবং আমি একজন মানুষের ভূমিকা পালন করছি যাতে সবাই বুঝতে পারে, আমি ভগবদ গীতাতে শিক্ষাদান করছি। এমনকি তারপরও, এই বোকা, দুষ্টরা, তারা বুঝতে সক্ষম হয় না।" তাই ভগবান আছেন, আমরা ভগবানের নাম জানি, উনি হচ্ছেন কৃষ্ণ। ভগবানের ঠিকানা, বৃন্দাবন, ভগবানের পিতার নাম, মাতার নাম। তাহলে কেন ... ভগবানকে খুঁজে পাওয়া অসুবিধা কোথায়? কিন্তু তারা গ্রহণ করবে না। তারা গ্রহণ করবে না মূঢ়া। তাদের মুঢ়া হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

সাংবাদিকরা আমাকে আজ সকালে জিজ্ঞাসা করেছিল, "আপনার আন্দোলনের উদ্দেশ্য কি?" তাই আমি বললাম, "মূঢ়দের শিক্ষিত করা, ব্যাস।" এটা কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলনের সারসংক্ষেপ, আমরা মূঢ়দেরকে শিক্ষিত করার চেষ্টা করছি। এবং কে মূঢ়? সেটা কৃষ্ণ বর্ননা করেছেন। ন মাং দুষ্কৃতিনো মূঢ়া প্রপদ্যন্তে নরাধাম (ভ.গী.৭.১৫) কেন? মায়াপহৃত-জ্ঞানা। কেন মায়া তাদের জ্ঞান নিয়ে নিয়েছেন? অসুরাং ভাবং আশ্রিতং। আমাদের একটি খুব সহজ পরীক্ষা আছে, যেমন একটি রসায়নবিদ একটি ছোট পরীক্ষা নল বিশ্লেষণ করতে পারেন, তা তরল কিনা। সেইজন্য আমরা খুব বুদ্ধিমান নই। আমরা অনেক মূঢ়ের মধ্যে এক, কিন্তু আমাদের একটি টেষ্ট টিউব পরীক্ষা আছে। কৃষ্ণ বলেছেন... আমরা মুঢ় হতে চাই, এবং কৃষ্ণ থেকে শিক্ষা পাই। এটাই কৃষ্ণ ভাবনামৃত। আমরা আমাদেরকে অনেক শিক্ষিত পন্ডিত এবং খুব জ্ঞাত পণ্ডিতদের বলি না। "আমরা সবই জানি।" না। আমরা ... চৈতন্য মহাপ্রভু, তিনিও মুঢ় থাকার চেষ্টা করেছিল। তিনি যখন প্রকাশানন্দ সরস্বতীর সাথে কথা বলেন...সে মায়াবাদী সন্ন্যাসী ছিলেন। চৈতন্য মহাপ্রভু নৃত্য ও কীর্তন করছিলেন। তাই এই মায়াবাদী সন্ন্যাসী তাকে সমালোচনা করছিল, "সে একজন সন্ন্যাসী, এবং তিনি শুধু জপ করছেন এবং নাচ করছেন কিছু উৎসাহী ব্যক্তিদের সঙ্গে। এটা কি?" তাই প্রকাশনন্দ সরস্বতী ও চৈতন্য মহাপ্রভুর মধ্যে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় চৈতন্য মহাপ্রভু একজন বিনম্র সন্ন্যাসী রূপে অংশ নেন। তারপর প্রকাশনন্দ সরস্বতী জিজ্ঞাসাবাদ করলেন, "স্যার, আপনি একজন সন্ন্যাসী। আপনার কর্তব্য সর্বদা বেদান্ত অধ্যয়ন করা সুতরাং কিভাবে, আপনি নৃত্য এবং কীর্তন করছেন? আপনি বেদান্ত পড়ছেন না।" চৈতন্য মহাপ্রভু বলেন, "হ্যাঁ, এটাই সত্য। আমি এই কাজ করছি কারণ আমার গুরু মহারাজ আমাকে মূঢ় হিসাবে দেখেছেন।" "কীভাবে?" "তিনি বলেন," গুরু মোরা মূর্খ দেখি করিলা শাসন দেখুন (চৈ.চ. আদি ৭. ৭১)। আমার গুরু মহারাজ আমাকে একটি মুর্খ হিসেবে দেখেছিলেন এবং তিনি আমাকে বকেছিলেন।" "কিভাবে তিনি আপনাকে বকেছিলেন? এখন," আপনার বেদান্ত অধ্যয়ন করার কোন অধিকার নেই। এটা আপনার জন্য সম্ভব নয়। আপনি একজন মুঢ়। ভালো আপনি হরে কৃষ্ণ মন্ত্র জপ করুন।"

তাই তার উদ্দেশ্য কি? উদ্দেশ্য হল, বর্তমানে, এই মূঢ়, তারা কিভাবে বেদান্ত বুঝতে পারবে? ভাল হয় হরে কৃষ্ণ জপ করুন। তাহলে আপনি সব জ্ঞান পাবেন।

হরের নাম হরের নাম হরের নামৈব কেবলম
কলৌ নাস্তেব্য নাস্তেব্য নাস্তেব্য গতির অন্যথা
(চৈ.চ.আদি ১৭.২১)

এই যুগে, মানুষ এতই পতিত হয়েছে যে, তারা বেদান্ত কি বুঝেবে এবং বেদান্ত পড়ার সময় কার আছে? কৃষ্ণ বলেছেন, এটা ভাল বেদান্ত থেকে সরাসরি জ্ঞান গ্রহন করুন, বেদৈশ্চ সর্বৈর অহমেব বেদ্য (ভ.গী ১৫.১৫)।

তাই বেদান্তের জ্ঞান শব্দার্থ অনাবৃত। শব্দ ব্রহ্ম জপ করে - আমরা মুক্ত হতে পারি। তাই শাস্ত্রে এটি সুপারিশ করা হয়েছে।

হরের নাম হরের নাম হরের নামৈব কেবলম
কলৌ নাস্তেব্য নাস্তেব্য নাস্তেব্য গতির অন্যথা
(চৈ.চ.আদি ১৭.২১)

যদি আমরা বাস্তবে আগ্রহী হই কিভাবে এই জড় বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া যায়। জন্ম-মৃত্যু-জড়া-ব্যাধী (ভ.গী. ১৩.৯)- এগুলি সমস্যা শাস্ত্র অনুসারে। মহাজনদের কথা অনুসারে, আমাদের উচিত এই হরে কৃষ্ণ মহা মন্ত্র জপ করা। এটাই আমাদের, আমি বলতে চাচ্ছি, উদ্দেশ্য।