BN/Prabhupada 0542 - গুরুর যোগ্যতা কি? কিভাবে সকলেই গুরু হতে পারে?



Janmastami Lord Sri Krsna's Appearance Day Lecture -- London, August 21, 1973

সুতরাং শ্রীকৃষ্ণ বলেন আচার্যম্‌ মাম্‌ বিজানীয়াৎ (শ্রীমদ্ভাগবতম ১১/১৭/২৭) "আচার্যকে আমার স্বরূপ বলে গ্রহণ কর।" কেন? কারণ আমি মানুষের মতোই দেখছি। তাঁর ছেলেরা তাকে বাবা বলে ডাকে, অথবা তিনি দেখতে একজন মানুষের মতোই তাহলে কেন ভগবানের মতোই হবেন? কারণ তিনি ভগবান যা বলেছেন ঠিক তেমনটাই বলে থাকেন। ব্যাস্‌। অতএব, তিনি কোনও রকম পরিবর্তন করেন না। ঠিক যেমন ভগবান বলেছেন, শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, সর্ব ধর্মান পরিত্যজ্য মাম্‌ একম্‌ শরণম্‌ ব্রজ (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১৬/৬৬)। গুরু বলেন তুমি শ্রীকৃষ্ণ বা ভগবানের কাছে আত্মসমর্পণ কর। একই কথা। ভগবান বলেন, মন্মনা ভব মদভক্ত মদ্‌যা‌জী মাম্‌ নমস্কুরু (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১৮/৬৫)। গুরু বলেছেন যে আপনি সর্বদা শ্রীকৃষ্ণের কথা ভাবুন, আপনি তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করুন, আপনি তাঁর কাছে প্রার্থনা নিবেদন করুন, আপনি তাঁর ভক্ত হন। এভাবে তাঁর কথায় কোনও পরিবর্তন নেই। কারণ তিনি পরমেশ্বর ভগবানের যা বলেছেন ঠিক তাই বলেন, তাই তিনি গুরু। যদিও তুমি দেখতে পাচ্ছ যে তিনি জাগতিকভাবে জন্মগ্রহণ করেছেন, তার আচার-আচরণ অন্যান্য মানুষের মতোই। কিন্তু কারণ বেদে যেমনটা বলা হয়েছে, তিনিও ঠিক একই সত্য বলেচ থাকেন, অথবা পরমেশ্বর ভগবান যেমনটা ঠিক তেমনই বলেন, তাই তিনি গুরু। কারণ তিনি খামখেয়ালীভাবে কোন কিছু পরিবর্তন করেন না, সুতরাং তিনি গুরু। এটাই সংজ্ঞা। এটা খুবই সরল ব্যাপার। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু সবাইকে গুরু হতে বলেছেন। সবাই। কারণ গুরুর দরকার আছে। সারা পৃথিবী বদমাশে পূর্ণ, তাই তাদের শেখানোর জন্য বহু সংখ্যক গুরুর প্রয়োজন। কিন্তু গুরুর প্রয়োজনটি কি? সবাই কীভাবে গুরু হতে পারেন? এটিই পরবর্তী প্রশ্ন হতে পারে। কারণ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন, "আমার আজ্ঞায় গুরু হইয়া তার এই দেশ (শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত মধ্য ৯/১২৮)। এই দেশ মানে তুমি যেখানেই বাস করছ না কেন, তুমি গুরু হও এবং তাদের উদ্ধার কর। ধর, তুমি একটি ছোট পাড়ায় বসবাস করছো, তুমি সেই পাড়ার গুরু হতে পার এবং তাদের উদ্ধার করতে পার। "এটা কীভাবে সম্ভব? আমার কোন শিক্ষা নেই, আমার কোন জ্ঞান নেই। আমি কীভাবে গুরু হয়ে তাদের উদ্ধার করতে পারি? " শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছিলেন এটি মোটেই কঠিন নয়। যারে দেখ তারে কহ কৃষ্ণ উপদেশ (শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত মধ্য ৭/১২৮)। এটাই তোমার যোগ্যতা। তুমি যদি কেবল শ্রীকৃষ্ণ দ্বারা প্রদত্ত বার্তাটি প্রচার কর, তবে তুমি গুরু হতে পার। শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, সর্বধর্মান্‌ পরিত্যজ্য মাম্‌ একম্‌ শরণম্‌ ব্রজ (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১৮/৬৬)। আপনি প্রচার করুন, আপনি সকলকে অনুরোধ করুন, "মহাশয়, আপনি শ্রীকৃষ্ণের কাছে আত্মসমর্পণ করুন।" এইভাবে আপনি গুরু হন। খুবই সরল ব্যাপার। শ্রীকৃষ্ণ বলেছিলেন মন্মনা ভব মদভক্ত মদ্‌যাজী মাম্‌ নমস্কুরু (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১৮/৬৫)। তুমি এই কথাটি বল যে "আপনি শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত হন, আপনি তাঁকে প্রণাম করুন। এখানে মন্দির; এখানে শ্রীকৃষ্ণ। দয়া করে এখানে আসুন। আপনি প্রণাম নিবেদন করুন, এবং আপনি যদি পত্রম্‌ পুষ্পম্‌ ফলম্‌ তোয়ম্‌ (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ৯/২৬) দিতে পারেন। আপনি নিবেদন করেন না... কিন্তু এটি খুবই সরল পন্থা। যে কেউই সামান্য ফুল, কিছু ফল, সামান্য জল নিবেদন করতে পারেন। এটা মোটেই কঠিন নয়।"

সুতরাং এটিই হচ্ছে গুরুর যোগ্যতা। গুরু কোনও যাদু দেখায় না বা অপূর্ব কিছু বানায় না যে তবেই সে গুরু হয়ে যাবে। সুতরাং বাস্তবে আমি এটি করেছি। লোকেরা আমাকে কৃতিত্ব দিচ্ছে যে আমি জাদু করেছি, তবে আমার জাদু হল আমি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বার্তাটি বহন করেছি: যারে দেখ তারে কহ কৃষ্ণ উপদেশ (শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত মধ্য ৭/১২৮)। সুতরাং এটিই হচ্ছে রহস্য। সুতরাং আপনারা যে কেউ গুরু হতে পারেন। এমন নয় যে আমি একজন অসাধারণ ব্যক্তি, অসাধারণ দেবতা কোনও রহস্যজনক জায়গা থেকে আসছি। এটি এমন কিছু নয় - এটি খুবই সরল ব্যাপার।