BN/Prabhupada 0578 - কেবল শ্রীকৃষ্ণ যা বলেছেন তা পুনরাবৃত্তি কর



Lecture on BG 2.19 -- London, August 25, 1973

সুতরাং যদি তুমি এই জন্মমৃত্যুর চক্র থামাতে চাও, তাহলে ইন্দ্রিয় তৃপ্তিতে লিপ্ত হওয়া বন্ধ কর। নয়তো আবারও জড়িয়ে পড়তে হবে। নূনং প্রমত্তঃ কুরুতে বিকর্ম যদ্‌ ইন্দ্রিয়প্রীতায় আপৃণোতি ন সাধু মন্যে যতাত্মনোহম্‌ অসন্নপি ক্লেশদ আস দেহঃ (ভাগবত ৫/৫/৪)

"ঠিক আছে, এই দেহ তো কেবল কয়েক বছরের, তারপর তার বিনাশ হবে" ঠিক আছে, এরপর তো তা ধ্বংস হবেই, কিন্তু তোমাকে আরেকটি শরীর ধারণ করতে হবে। তোমাকে দেহ ধারণ করতেই হবে, তার কারণ তোমার ইন্দ্রিয় তৃপ্তির বাসনা রয়ে গেছে। ইন্দ্রিয় তৃপ্তির অর্থ হচ্ছে ভোগের জন্য জড় ইন্দ্রিয়ের ব্যবহার। শ্রীকৃষ্ণ যেহেতু অত্যন্ত কৃপাময়, "ঠিক আছে, এই মূর্খ এইরকমটাই চাই। ওকে এরকম কিছুই দেয়া হোক। ঠিক আছে। এই মূর্খ বিষ্ঠা খেতে চায়, ঠিক আছে। ওকে শুকরের দেহ দেয়া হোক।" এটাই চলছে। এটিই প্রকৃতির নিয়ম।

সুতরাং এই জ্ঞান ভগবদগীতায় মানব সমাজের জন্য দেয়া হয়েছে। এবং শ্রীকৃষ্ণ চান যেন এই জ্ঞান সবার কাছে ছড়িয়ে দেয়া হোক কারণ সকলেই ... সর্বযোনিষু কৌন্তেয় সম্ভবন্তি মূর্তয়ঃ ... (গীতা ১৪/৪) তিনিই সকলের বীজপ্রদানকারী পিতা। পিতা স্বাভাবিকভাবেই শুভাকাঙ্ক্ষী এই কথা ভেবে যে, "এই মূর্খগুলো দুঃখভোগ করছে, প্রকৃতিস্থানি। মনঃ ষষ্ঠানীন্দ্রিয়ানি প্রকৃতিস্থানি কর্ষতি (গীতা ১৫/৭) কেবল মনের জল্পনার কল্পনার দ্বারাই পরিচালিত, মনঃ এবং তা ইন্দ্রিয়ের দ্বারা আরও ইন্ধন পাচ্ছে, ওগুলো তাই কঠোর পরিশ্রম করছে। আর ওরা যদি আমার কাছে ফিরে আসে, তবেই কেবল আনন্দে থাকতে পারবে, বৃন্দাবনে আমার বন্ধু হিসেবে, আমার প্রেমিক হিসেবে, আমার পিতা হিসেবে, মাতা হিসেবে । তাই আবার তাঁদের আমার ধামে ফিরিয়ে আনা। তাই শ্রীকৃষ্ণ অবতীর্ণ হন। যদা যদা হি ধর্মস্য (গীতা ৪/৭) কারণ সারা দুনিয়া কেবল এই মিথ্যা ইন্দ্রিয় তৃপ্তির পেছনেই ছুটছে, তাই তিনি আসেন এবং উপদেশ দেন, 'সর্বধর্মান্‌ পরিত্যাজ্য (গীতা ১৮.৬৬) "আরে মূর্খ, এই সব বাদ দাও। নিজেকে বিজ্ঞানের ভিত্তিতে উন্নত মনে করে গর্বস্ফীত হও না। তোমরা সবাই মূর্খ। এইসব আজেবাজে কাজ বাদ দাও। আমার কাছে ফিরে এসো। আমিই তোমাকে রক্ষা করব। এই হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ। কতোই না করুণাময়। আর ভগবানের সেবকদেরও সেই একই কাজ করতে হবে। যোগী বা কোন যাদুকর হওয়া নয়। না, সেসবের কোন প্রয়োজন নেই। কেবল শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন তাই পুনরাবৃত্তি করা। এভাবেই গুরু হতে পার। কোন আজেবাজে কথা বলবে না। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুও বলেছেন, "যারে দেখ তারে কহ কৃষ্ণ উপদেশ (চৈতন্য চরিতামৃত ৭.১২৮) যাকেই দেখ তাকে কেবল শ্রীকৃষ্ণের কথাই প্রচার কর। এভাবেই তুমি গুরু হবে। ব্যাস্‌। খুব সহজ।

অনেক ধন্যবাদ।