BN/Prabhupada 0627 - পবিত্র না হলে কেউ এই সুমহান বিষয়বস্তুটি সম্পর্কে জানতে পারবে না



Lecture on BG 2.13 -- Pittsburgh, September 8, 1972

একজন সদ্গুরুর লক্ষণগুলো কি কি? প্রত্যেকেই গুরু হতে চায়। সেটিও বর্ণনা করা হয়েছে। শাব্দে পরে চ নিষ্ণাতং। যিনি বৈদিক সাহিত্যরূপ সমুদ্রে পূর্ণরূপে স্নাত হয়েছেন, শাব্দে পরে চ নিষ্ণাতং (SB 11.3.21) ঠিক যেমন আপনি স্নান করার দ্বারা সতেজ বা পবিত্র অনুভব করেন। যদি আপনি ভালো করে স্নান করেন, তবে খুব সতেজ অনুভব করেন। শাব্দে পরে চ নিষ্ণাতং। এই পবিত্রতা ছাড়া কেউই এই সুমহান বিষয়বস্তু বুঝতে পারবে না। গুরুদেবকে বৈদিক জ্ঞানের সাগরে অবগাহন করার দ্বারা পবিত্র হতে হবে। আর তার ফলাফল কি? শাব্দে পরে চ নিষ্ণাতং। এই ধরণের পবিত্রতার দ্বারা তিনি সর্বতোভাবে পরম সত্যের আশ্রয় নেন, তার আর কোন জড় বাসনা থাকে না। তার আর কোনই জড় বাসনা থাকে না। তিনি শুধু শ্রীকৃষ্ণ বা পরম সত্য সম্বন্ধীয় ব্যাপারেই আগ্রহান্বিত হন। এগুলো হচ্ছে গুরুদেবের লক্ষণ।

এই ব্যাপারটি বোঝার জন্য... ঠিক যেমন শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে শিক্ষা দিচ্ছেন। এর পূর্বেই অর্জুন নিজেকে শ্রীকৃষ্ণের কাছে সমর্পণ করেছেন। "শিষ্যস্তেহং শাধি মাম্ তাম্ প্রপন্নং। (গীতা ২.৭) যদিও শ্রীকৃষ্ণ এবং অর্জুন বন্ধু ছিলেন, প্রথমে তারা বন্ধুর মতো কথা বলে চলছিলেন আর অর্জুন শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে তর্ক করছিলেন। এইসব তর্কের কোন মূল্য নেই, কারণ আমি সম্পূর্ণ অভ্রান্ত নই। আমার তর্ক করার কি-ই বা মানে আছে? আমি যাই কিছু তর্ক করব, তার সবটাই ভ্রান্ত হবে। সুতরাং আমার ভ্রান্ত তর্কের দ্বারা সময় নষ্ট করার কি-ই বা মূল্য আছে? এটি সঠিক পন্থা নয়। সঠিক পন্থাটি হচ্ছে আমাদেরকে একজন যথার্থ ব্যক্তির কাছে শরণাগত হবে এবং তাঁর থেকে উপদেশ নিতে হবে। তাহলেই আমাদের অর্জিত জ্ঞান হবে অভ্রান্ত। কোনরকম তর্ক করা ছাড়াই আমরা বৈদিক জ্ঞান গ্রহণ করে থাকি। ঠিক যেমন, কোন প্রাণীর বিষ্ঠা। বৈদিক সাহিত্যে বলা হয়েছে, বিষ্ঠা অপবিত্র। যদি আপনি বিষ্ঠা স্পর্শ করেন... বৈদিক রীতি অনুযায়ী, এমন কি আমার নিজের মল ত্যাগ করার পরও আমাকে স্নান করতে হবে। তাহলে অন্যের মল স্পর্শ করার কথা আর কি-ই বা বলার আছে। সেটিই হচ্ছে প্রকৃত ব্যবস্থা। সুতরাং বিষ্ঠা অপবিত্র। বিষ্ঠা স্পর্শ করার পর একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই স্নান করতে হবে। সেটিই হচ্ছে বৈদিক নির্দেশ। কিন্তু অন্য এক জায়গায় বলা হয়েছে, গাভীর মল হচ্ছে পবিত্র। এবং যদি কোন অপবিত্র জায়গার ওপর গোবর দিয়ে লেপা হয়, তাহলে তা পবিত্র হয়ে যায়। তাহলে এখন আপনি তর্ক করতে করতে পারেন, "পশুর বিষ্ঠা তো অপবিত্র"। তাহলে কেন এক জায়গায় বিষ্ঠাকে পবিত্র বলা হচ্ছে আর অন্য জায়গায় সেটি অপবিত্র বলা হচ্ছে? এটা তো পরস্পর বিরোধী। কিন্তু এটি আপাতবিরোধী নয়। আপনি বাস্তবে পরীক্ষা করে দেখুন। আপনি কিছু গোবর নিয়ে যে কোন জায়গায় লেপে দেখুন, দেখবেন তা পবিত্র হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে পবিত্র হয়ে যাচ্ছে। তাই এটিই হচ্ছে বৈদিক নির্দেশ। বৈদিক জ্ঞান হচ্ছে যথার্থ জ্ঞান। সময় নষ্ট করে তর্ক করা আর মিথ্যা আত্মসম্মানকে বাড়ানোর পরিবর্তে যদি আপনি শুধু এই আদর্শ জ্ঞানটি গ্রহণ করে নেন, যেমনটা বৈদিক সাহিত্যে বলা হয়েছে, তাহলেই আমরা যথার্থ জ্ঞানটি লাভ করতে পারি এবং আমাদের জীবন তাতে সার্থক হবে। দেহের কোথায় আত্মা আছে সে ব্যপারে গবেষণা চালানোর পরিবর্তে ... আত্মা রয়েছে, কিন্তু তা এতোই ক্ষুদ্র যে তা আপনার ভোতা চোখে দেখতে পাবেন না, কোনও অনুবীক্ষণ যন্ত্র বা অন্য কোন যন্ত্র দিয়েও নয়, কারণ বলা হয়েছে আত্মা হচ্ছে কেশাগ্রের দশ হাজার ভাগের এক ভাগের সমান। সুতরাং এমন কোন যন্ত্র নেই। আপনি তা দেখতে পারবেন না। কিন্তু তা রয়েছে। অন্যথায় একটি মৃতদেহ আর জীবিত শরীরের মধ্যে কিভাবে পার্থক্য থাকছে?