BN/Prabhupada 0895 - ভক্ত কখনও বিপদের মুহূর্তকে দুর্যোগপূর্ণ মনে করেন না। তিনি স্বাগত জানান



730417 - Lecture SB 01.08.25 - Los Angeles

ভক্ত কখনও বিপদের মুহূর্তকে দুর্যোগপূর্ণ মনে করেন না। তিনি স্বাগত জানান তুমি জিহবা পেয়েছ। তুমি হরে কৃষ্ণ জপ করতে পার। হরে কৃষ্ণ। তৎক্ষণাৎ তুমি কৃষ্ণের সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শে চলে আসতে পার , তৎক্ষণাৎ। কারণ কৃষ্ণ নাম এবং ব্যক্তি কৃষ্ণ অভিন্ন। একই। তাই তুমি যদি মনেও কর যে কৃষ্ণ বহু বহু দূরে আছেন... কৃষ্ণ বহু দূরে নন, তিনি তোমার ভেতরেই আছেন তিনি বহুদূরে নন। তিনি বহু দূরে আছেন, আবার একই সঙ্গে তিনি সবচেয়ে কাছেও আছেন তাই যদি তুমি এটাও ভাব যে কৃষ্ণ অনেক অনেক দূরে আছে, তাহলে তাঁর নাম এখানে রয়েছে তুমি হরে কৃষ্ণ কীর্তন কর, কৃষ্ণ তৎক্ষণাৎ তোমার কাছে। অনিয়মিতঃ এবং কৃষ্ণকে এই সংক্ষিপ্ত উপায়ে সুলভে পাবার জন্য কোন কড়াকড়ি নিয়ম নেই তুমি যে কোন সময় জপ করতে পার, তৎক্ষণাৎ তুমি কৃষ্ণ পাবে। দেখ শ্রীকৃষ্ণের কি অপূর্ব করুণা।

তাই চৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন, এতাদৃশী তব কৃপা "হে ভগবান, আপনি আমাকে আপনার সান্নিধ্যে আসার এত চমৎকার সুযোগ দিয়েছেন, কিন্তু দুর্দৈব, এটা আমার দুর্ভাগ্য যে আমার এসবে কোন রুচি নেই আমার কোনই আসক্তি নেই। আমার অন্যনায় সবকিছুর প্রতি এত আসক্তি আছে কিন্তু আপনার হরে কৃষ্ণ নামে আমার কোন আসক্তি নেই। এটা আমার দুর্ভাগ্য।" শ্রীকৃষ্ণ আমাদের এত সুযোগ দিয়েছেন যে তিনি তাঁর দিব্য নামের মাধ্যমে তোমার সামনেই উপস্থিত এবং সেই নাম কৃষ্ণের সমস্ত শক্তিসম্পন্ন তাই যদি তুমি সেই নামের সংস্পর্শে থাক, তাহলে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে থাকার সব আশীর্বাদ পেয়ে যাবে কিন্তু তা সত্ত্বেও সেই নাম গ্রহণে আমার কোন রুচিই নেই। এটি আমার দুর্ভাগ্য

তাই একজন ভক্ত কখনও বিপজ্জনক অবস্থাকে প্রতিকূল বা দুর্দশাপূর্ণ বলে গ্রহণ করেন না তিনি স্বাগত জানান। কারণ একজন শরণাগত আত্মা জানেন যে বিপদই হোক আর উৎসবই হোক, এ সবই কৃষ্ণের বিভিন্ন প্রকাশ। শ্রীকৃষ্ণ পরম। শাস্ত্রে বলা হয়েছে যেমন দুই ধরণের দুটো দিক আছে, ধর্ম ও অধর্ম। ঠিক উল্টো কিন্তু শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে ধর্মাচরণ কেবল ভগবানের সম্মুখ ভাগ মাত্র আর অধর্ম তাঁর পশ্চাদ্ভাগ তো ভগবানের সামনের দিক বা পেছনের দিক, এর মধ্যে কোন পার্থক্য আছে? ভগবান পরম। তাই একজন ভক্ত বিপদ বা ঐশ্বর্যে কখনও বিচলিত নন। তিনি জানেন যে এই দুই কৃষ্ণ। বিপদের মুহূর্তেও... "কৃষ্ণ এখন আমার কাছে বিপদ রূপে আবির্ভূত হয়েছেন"।

হিরণ্যকশিপু, প্রহ্লাদ মহারাজ ও শ্রীনৃসিংহদেবের লীলার মতো। শ্রীনৃসিংহদেব হিরণ্যকশিপুর কাছে ভয়ঙ্কর ছিলেন এবং তিনি প্রহ্লাদ মাহারাজের পরম বন্ধু ছিলেন, সেই একই ব্যক্তি তেমনই ভগবান ভক্তের কাছে কখনই ভয়ানক নন। ভক্ত বিপদ দেখে কখনই ভয়ভীত হন না। তিনি নিশ্চিত যে তাঁর বিপদগুলো সেটিও ভগবানের আরেকটি রূপ "তাই আমি কেন ভয় পাব?" আমি তাঁর কাছে শরণাগত" তাই কুন্তীদেবী বলেছেন যে, বিপদঃ সন্তু। বিপদঃ সন্তু তঃ শশ্বৎ। কারণ তিনি জানেন যে কীভাবে কৃষ্ণকে বিপদের মুহূর্তে স্মরণ করা যায়। তাই তিনি বিপদকে আমন্ত্রন জানাচ্ছেন "হে ভগবান আমি এইসব বিপদকে স্বাগত জানাই, যদি আমি এর দ্বারা তোমাকে স্মরণ করি।" ঠিক প্রহ্লাদ মহারাজের মতো। তিনি সর্বদা কৃষ্ণচিন্তা করতেন যক্ষণ তাঁর পিতা তাঁকে বিভিন্ন বিপদ পরিস্থিতির মধ্যে ফেলছেন যদি তুমি বিপদজনক অবস্থায় থাকো এবং সেই বিপদজনক অবস্থা যদি আমাদের শ্রীকৃষ্ণের কাছে শরণাগত হতে সাহায্য করে, তবে সেটি স্বাগত। সেটিই স্বাগতম। "ওহ্‌ আমি কৃষ্ণ স্মরণের এত সুযোগ পাচ্ছি, তাই একে কীভাবে স্বাগত হল? এটি স্বাগত জানানো কঠিন কারণ আমি কৃষ্ণ ভাবনামৃতে উন্নত হওয়ার চেষ্টা করছি যাতে আমাকে আর এই অধিক বিপদজনক জড় জগতে আসতে না হয়, ভোগান্তি না পেতে হয়। ।