BN/Prabhupada 0914 - জড় বস্তু ভগবানের একটি শক্তি এবং চিন্ময় আত্মা আরেকটি শক্তি



730420 - Lecture SB 01.08.28 - Los Angeles

প্রভুপাদঃ বিভু মানে পরম, সবচাইতে মহান। বিভু। আমরা অনু, আমরা অত্যন্ত ক্ষুদ্র। এবং কৃষ্ণ হচ্ছেন বিভু। কৃষ্ণও, কারণ আমরা কৃষ্ণের অবিচ্ছেদ্য অংশ, তাই কৃষ্ণ একই সঙ্গে অনু এবং বিভু। আমরা কেবল অনু। কিন্তু কৃষ্ণ উভয়ই। কৃষ্ণ হচ্ছেন বিভু, তিনি সর্বব্যাপী। বৃহৎ কিছু ... যদি তোমার কাছে একটা বড় ব্যাগ থাকে, ছোট ব্যাগে তুমি তা করতে পারবে।

কিন্তু কৃষ্ণ হচ্ছেন বিভু। তাঁর মধ্যেই অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ রয়েছে তাঁর মধ্যে সবকিছুই আছে এবং তিনি সর্বত্র আছেন। এই হচ্ছে বিভু। বিভু, সর্বব্যাপী। কৃষ্ণ সর্বত্র আছেন। অন্ডান্তরস্থ পরমাণুচয়ান্তরস্থম্‌ (ব্রহ্মসংহিতা ৫/৩৫)। ব্রহ্ম সংহিতায় বলা হয়েছে যে কৃষ্ণ... কারণ শ্রীকৃষ্ণ ব্যতীত, জড় বস্তু বাড়তে পারে না। নাস্তিক বিজ্ঞানীরা বলে যে জড় বস্তু থেকে জীবন আসে। সেটি মূর্খতা। না। জড় বস্তু কৃষ্ণের একটি শক্তি। এবং চিন্ময় আত্মাও তাঁর আরেকটি শক্তি। চিৎ শক্তি হচ্ছে উৎকৃষ্টা শক্তি, এবং জড়া শক্তি হচ্ছে নিকৃষ্টা শক্তি। জড় বস্তুর বৃদ্ধি হয় উৎকৃষ্টা শক্তির উপস্থিতির কারণে।

ঠিক যেমন এই আমেরিকাতে। একই আমেরিকা দু'শ বছর আগেও ছিল, তিন'শ বছর আগেও একই আমেরিকা ছিল আমেরিকা জায়গাটি, কিন্তু তা কোন উন্নয়ন হয় নি। কিন্তু ইউরোপ থেকে কিছু অগ্রসর শ্রেণীর লোকজন এসেছিল, তাই এখন আমেরিকা উন্নত হয়েছে। তাই উন্নয়নের কারণ হচ্ছে উৎকৃষ্টা শক্তি। নিকৃষ্টা শক্তি মানে অনেক জমি এখনও খালি পড়ে আছে যেমন আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া। তাদের "অনুন্নত" বলা হয়। অনুন্নত কেন? কারণ উৎকৃষ্টা শক্তি জীবসত্ত্বা তা উন্নতির জন্য স্পর্শ করে নি। যেই মাত্র উৎকৃষ্টা শক্তি তা স্পর্শ করবে, সেই একই জমিতে উন্নয়ন হবে, সেখানে অনেক কলকারখানা, বাড়ি, শহর, রাস্তা, গাড়ি, সবকিছু হবে।

তাই সিদ্ধান্ত হচ্ছে যে জড় বস্তু একা একা উন্নতি করতে পারে না না, তা সম্ভব নয়। উৎকৃষ্টা শক্তির তাতে হাত লাগাতে হবে। তখন সেটি সক্রিয় হবে। অনেক যন্ত্রপাতি আছে। সেগুলো হচ্ছে জড় বস্তু, নিকৃষ্টা শক্তি। একজন অপারেটর বা চালক না আসলে সেই মেশিন কিন্তু চলবে না। সবচেয়ে ভাল মোটর গাড়ি, অনেক দামী মোটর গাড়ির যন্ত্র। কিন্তু একজন চালক না আসলে এটা সেখানেই লক্ষ লক্ষ বছর দাঁড়িয়ে থাকবে। কোন লাভ নেই। এই সাধারণ জ্ঞানটা নেই। জড় বস্তু বা নিকৃষ্টা শক্তি ততক্ষণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না, যতক্ষণ না কোন উৎকৃষ্টা শক্তি হাত না লাগাবে। এটাই হচ্ছে সাধারণ জ্ঞান। তাহলে কীভাবে মূর্খ বিজ্ঞানীরা বলে যে জীবন আসছে জড় বস্তু থেকে? না। কীভাবে এই সিদ্ধান্ত করা যায়। এইরকম কোন উদাহরণ নেই। তারা মিথ্যা দাবী করে যে... তাদের যথেষ্ট জ্ঞান নেই।

এইভাবে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডও ভগবানের উপস্থিতির কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই ব্রহ্ম সংহিতায় বলা হচ্ছে, অন্ডান্তরস্থ পরমাণু চয়ান্তরঃ এখন তাঁরা পরমাণু নিয়ে গবেষণা করছে। অনেক কিছু চলছে, ইলেকট্রন, প্রোটন, কেন? কারণ তাতে কৃষ্ণ আছেন। এটাই হচ্ছে প্রকৃত বিজ্ঞান। সুতরাং শ্রীকৃষ্ণের কোন অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নেই। তিনি চিরন্তন কাল। তাঁর কোন আদি নেই, কোন অন্ত নেই। এবং তিনি সকলের প্রতি সমভাবাপন্ন। সমম্‌ চরন্তম্‌ (ভাগবত ১/৮/২৮) আমাদেরকে কেবল কৃষ্ণকে দেখতে প্রস্তুত হতে হবে, তাঁকে বুঝতে তৈরি হতে হবে। সেটাই হচ্ছে কৃষ্ণ ভাবনামৃতের উদ্দেশ্য।

অনেক ধন্যবাদ।

ভক্তবৃন্দঃ জয়। শ্রীল প্রভুপাদের জয়।