BN/Prabhupada 0943 - কোন কিছুই আমার অধিকারে নয়। ঈশাবাস্যমিদং সর্বং, সব কিছুই শ্রীকৃষ্ণের



730427 - Lecture SB 01.08.35 - Los Angeles

কোন কিছুই আমার অধিকারে নয়। ঈশাবাস্যমিদং সর্বং, সব কিছুই শ্রীকৃষ্ণের তাই প্রত্যেকেই, একটার পর একটা, সীমাহীন বাসনার কারণে... একটি বাসনা যখন পূর্ণ হয়ে যায়, তখন আরেকটি বাসনা, এরপর আরেকটি, এরপর আরেকটি বাসনা। এইভাবে আমরা শুধু সমস্যাই সৃষ্টি করছি। আর বাসনা যখন পূরণ হয় না, তখন আমরা হতাশাগ্রস্থ আর বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি। এখানেই হতাশা। এক ধরণের হতাশা, ঠিক যেমন তোমাদের দেশের হিপ্পিরা, এটিও হতাশা। আরেক ধরণের হতাশা রয়েছে আমাদের দেশে, এটি খুব পুরাতন হতাশা, সন্ন্যাসী হওয়া। তো সন্ন্যাসী হওয়া, ব্রহ্ম সত্যম্‌ জগন্মিথ্যা, এই জগত মিথ্যা। এটি কিভাবে মিথ্যা হয়? সে এটিকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে না, তাই এটি মিথ্যা। এটি মিথ্যা নয়। বৈষ্ণব দর্শন হচ্ছে জগত মিথ্যা নয়, এটি সত্য। কিন্তু তখনই মিথ্যা যখন তুমি ভাববে যে, "আমি এই জগতের ভোক্তা।" যদি আমরা স্বীকার করি যে, এটি শ্রীকৃষ্ণের, আর আমাদের উচিত শ্রীকৃষ্ণের সেবায় এটিকে ব্যবহার করা, তখন এটি মিথ্যা নয়। এটি আমাদেরকে দেয়া হয়েছে, একটি উদাহরণ দেয়া যায়, এই ফুলগুলো, এগুলো ফুলের দোকানে ছিল। সেখানে অনেক ফুল রয়েছে, যেগুলো মানুষ কিনছে। আমরা কিনছি, অন্যেরা কিনছে। তারা কিনছে তাদের ইন্দ্রিয় তৃপ্তি সাধনের জন্য, আর আমরা কিনছি শ্রীকৃষ্ণের জন্য। একই ফুল। তো কেউ জিজ্ঞাসা করতে পারে যে "তুমি এগুলো শ্রীকৃষ্ণকে নিবেদন করছ। শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরম আত্মা, তুমি কি করে এই জড় ফুলগুলো তাঁকে নিবেদন করছ?" কিন্তু তারা জানে না যে, প্রকৃতপক্ষে জড় বলে কিছু নেই। যখনই তুমি শ্রীকৃষ্ণকে ভুলে যাবে, সেটাই জড়। এই ফুলগুলো শ্রীকৃষ্ণের জন্য উদ্দিষ্ট। এটি চিন্ময়। কিন্তু যখনি আমি এগুলোকে আমার ইন্দ্রিয় তৃপ্তি সাধনের জন্য গ্রহণ করব, তখনই তা জড়। এটিই অবিদ্যা। অবিদ্যা মানে অজ্ঞানতা। কোন কিছুই আমার নয়। ঈশাবাস্যম্‌ ইদং সর্বং, সবকিছুই শ্রীকৃষ্ণের। কাজেই আমাদের আন্দোলন হচ্ছে এই কৃষ্ণচেতনাকে জাগরিত করার জন্য। আমাদের জানা উচিত যে, সব কিছুর মালিক হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ। শ্রীকৃষ্ণ সত্য, জগত সত্য। শ্রীকৃষ্ণ এই জগত সৃষ্টি করেছেন, তাই এটিও সত্য। সুতরাং সব কিছুই সত্য, যখন তা কৃষ্ণভাবনাময় হয়ে করা হয়। অন্যথায় এটি মিথ্যা, অবিদ্যা।

তো অবিদ্যা বা অজ্ঞানাতার কারণে আমরা ইন্দ্রিয় সুখ উপভোগ করতে চাই, আর এভাবেই আমরা সমস্যার সৃষ্টি করি। আমরা অনেক নকল কাজ তৈরি করি, উগ্রকর্ম। যদিও আমরা অবিদ্যার মধ্যে রয়েছি, কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের কৃপায় সব কিছুই খুব সহজ হয়ে গিয়েছে। ঠিক যেমন যে কোন জায়গায়, পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে আহার রয়েছে। সবকিছুই এখানে পূর্ণরূপে রয়েছে। পূর্ণম ইদম্‌। যেমন ধর, কেউ কেউ গ্রিনল্যান্ড, আলাস্কায় বসবাস করছে, আমাদের জন্য সেখানকার আবহাওয়া খুব একটা অনুকূল নয়। কিন্তু সেখানকার অধিবাসীরা সেখানে বসবাস করছে। সেখানে কিছু বিন্যাস রয়েছে। একইভাবে, যদি তুমি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার কর, সর্বত্রই... যেমন জলের মধ্যে লক্ষ লক্ষ মাছ রয়েছে। তোমাকে যদি একটি নৌকায় উঠিয়ে দিয়ে বলা হয় যে তুমি এখানে একমাস থাকবে, তাহলে তুমি মরে যাবে,সেখানে তোমার জন্য কোন খাদ্য নেই। কিন্তু জলের মধ্যে, লক্ষ লক্ষ মাছ রয়েছে, তাদের জন্য সেখানে যথেষ্ট খাদ্য রয়েছে। পর্যাপ্ত খাদ্য। একটা মাছও খাওয়ার অভাবে মারা যাবে না। কিন্তু তোমাকে যদি জলের মধ্যে রাখা হয়, তুমি মরে যাবে। সুতরাং একইভাবে, ভগবানের সৃষ্টিতে ৮৪০০০০০ প্রজাতির জীবন রয়েছে। আর ভগবান তাদের প্রত্যেকের জন্য খাদ্য দিয়েছেন। ঠিক যেমন তুমি যদি কারাগারেও থাক, সরকার তোমাকে খাদ্য দিবে। একইভাবে এই জড় জগতকেও কারাগার বলে বিবেচনা করা হয় জীবের জন্য, তবুও এখানে কোন কিছুরই অভাব নেই।