BN/Prabhupada 1054 - বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক, পণ্ডিত - সবাই নিরীশ্বরবাদী



750522 - Conversation B - Melbourne

প্রভুপাদঃ এই রাষ্ট্রসংঘ ব্যর্থ, এবং যেহেতু এতে ভগবৎচেতনা নেই, তাই এটি ব্যর্থই হবে।

বব বোর্নঃ আমার মনে হয় না যে এটা ব্যর্থ।

প্রভুপাদঃ হুম্‌?

ববঃ আমি মনে করি না যে এটি ব্যর্থই হয়েছে। আমি মনে সারা বিশ্বজুড়ে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে ব্যাপার হচ্ছে তাঁরা কি গ্রহণ করছে।

প্রভুপাদঃ না, কি পরিবর্তন হচ্ছে? ওরা আবারও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে পরিবর্তন কোথায়? একটু সামান্য প্ররোচনাতেই যুদ্ধ লেগে যেতে পারে।

রেমন্ড লোপেজঃ হ্যাঁ, কিন্তু লোকেরা এখন বদলাচ্ছে। এখন আপনি এমন যুবকদের পাচ্ছেন যারা বছরে এই প্রথমবারের মতো তাদের নিজেদের শহরের বাইরের কিছুতে আগ্রহ দেখাচ্ছে এবং সচেতন হচ্ছে তাদের নিজেদের দেশ বা যাই তাদের আছে না কেন। এখন লোক পাওয়া যাচ্ছে যারা দারিদ্র বা এইসব ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে ওরা বাংলাদেশ এবং ইত্যাদি ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে। সেটি ভাল। কিন্তু অবশ্যই একটা বিশাল জনসংখ্যা মনে করছে, "আমি ভাল আছি, আমি কেবল আমার দেখভাল করব"। বাকি সবকিছু উপেক্ষা করে। এবং আমি মনে করি যতদিন আমাদের মধ্যে এই ভিন্ন ধারণা, ভিন্ন বিশ্বাস থাকবে ততদিন আপনি যা বলছেন তা করা বেশ কঠিন হয়ে যাবে

প্রভুপাদঃ সেটাই আগে ঐক্য করতে হবে যে... সবার আগে সবাইকে এই ব্যাপারটা ভাল করে বুঝে নিতে হবে যে সবকিছুর মালিক ভগবান কিন্তু ওদের ভগবান সম্পর্কে কোন ধারণাই নেই। ... সম্পূর্ণ মানব সমাজ , অধিকাংশরাই এখন নিরীশ্বরবাদী, বিশেষ করে কম্যুনিস্টরা। তারা স্বীকার করে না। বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক, পণ্ডিত - সব নিরীশ্বরবাদী। বৈজ্ঞানিকদের বিশেষ কাজ হচ্ছে কীভাবে ভগবানকে অস্বীকার করা যায়। ওরা বলে, "বিজ্ঞানই সবকিছু। আমরা বিজ্ঞান দিয়ে সবকিছুই করতে পারি, কোন ভগবানের দরকার নেই"। হুহ্‌?

ওয়েলী স্ট্রোবস্‌ঃ আমি মনে করি না এরকম লোক অনেক আর আছে। এখন অনেকেই বুঝতে পারছে

প্রভুপাদঃ আর নেই?

ওয়েলী স্ট্রোবস্‌ঃ আসলে, আছে, কিছু জায়গায়। হ্যাঁ। আমার মনে হয়।

প্রভুপাদঃ এমনটা কখনই না। কিন্তু ওরা যদি বুঝতে পারছে তো ভাল কথা

রেমন্ড লোপেজঃ কিন্তু আপনি এই কথা বলতে পারেন না যে বিজ্ঞানীরা ভগবানের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করছে

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ, ওরা তাই করছে। আমি অনেক বিজ্ঞানীদের সাথে সাক্ষাত করেছি। তারা বলে, "আমরা কেবল বৈজ্ঞানিক উপায়েই সব সমস্যার সমাধান করে দেব আমরা ইতিমধ্যে করেছিও"। তারা এভাবেই বলে।

রেমন্ড লোপেজঃ কিন্তু কেবল ওরা বলছে বলে...

প্রভুপাদঃ ঠিক যেমন একটা বিশাল রাসায়নিক তত্ত্ব আছে একজন বড় বিজ্ঞানী ... বড় বা ছোট যাই হোক না কেন , সে নোবেল প্রাইজ পেয়েছে

রেমন্ড লোপেজঃ সে মাঝারি ধরণের। (হাসি)

প্রভুপাদঃ হুহ?

রেমন্ড লোপেজঃ সে মাঝারি ধরণের।

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। সে একটি তত্ত্ব বানিয়েছে জীবন এসেছে রাসায়নিক বস্তু থেকে। রাসায়নিক বিক্রিয়া থেকে। বিবর্তন থেকে। ডারউইনের তত্ত্বও সে রকম। এই হচ্ছে ওদের... বড় বড় বিজ্ঞানী। ওরা এতোটাই মূর্খ যে জীবন এসেছে জড় থেকে, এটাই বলছে। এর প্রমাণ কি? সে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিচ্ছিল। এবং সেখানে একটি ছাত্র ছিল সে আমার শিষ্য। সে তাকে চ্যালেঞ্জ করল যে "যদি আপনাকে রাসায়নিক বস্তু দেয়া হয়, আপনি জীবন বানাতে পারবেন?" তার উত্তর ছিল, "সেটা আমি বলতে পারব না"। কেন? তুমি এই তত্ত্ব দিচ্ছ যে জড় থেকে জীবন এসেছে বিজ্ঞান মানে পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষণ তাহলে এখন পরীক্ষা করে প্রমাণ কর যে রাসায়নিক বস্তু থেকে জীবন এসেছে

রেমন্ড লোপেজঃ তারা চেষ্টা করছে (হাসি)

প্রভুপাদঃ সেটা হল আরেকটা মূর্খতা। যখন আপনি একজন আইনজীবী বা ব্যারিস্টার হওয়ার চেষ্টা করছেন তার মানে এই নয় যে আপনি ব্যারিস্টার। যখন আপনি আইনের ছাত্র, আপনি বলতে পারেন না যে, "আমি ব্যারিস্টার বা উকিল" তা আপনি বলতে পারেন না। আপনি হতে চাইছেন সেটি অন্য কথা। কিন্তু যখন তারা হতে চাইছে, তখন তারা নেতার ভূমিকা নিচ্ছে। সেটি ভ্রান্তপথে পরিচালনা করা। সেটি ভাগবতে বলা আছে, শ্রীমদ্ভাগবতম, অন্ধা যথান্ধৈরূপনীয়মানাঃ (ভাগবত ৭/৫/৩১) "একজন অন্ধ আরো অন্ধদের পরিচালনা করার চেষ্টা করছে" এই নেতৃত্বের কি মানে আছে? যদি নেতাই অন্ধ হয়, তাহলে সে কীভাবে অন্যের ভাল করবে?

বব বোর্নঃ বিটোভেন কানে শুনতেন না।

প্রভুপাদঃ হুম্‌?

ববঃ বিটোভেন কানে শুনতেন না।

প্রভুপাদঃ সেটা কি? মধুদ্বিষঃ বিশাল সঙ্গীতজ্ঞ বিটোভেন কানে শুনতেন না।

বব বোর্নঃ কমপক্ষে জীবনের একটা সময়ে। রেমন্ড লোপেজঃ কিন্তু লোকের ভাল করার জন্য কি লোক থাকতে পারে না?

প্রভুপাদঃ কিন্তু সে জানে না যে ভালটা কি।

রেমন্ড লোপেজঃ কিন্তু কিছু কিছু জিনিস আছে...

প্রভুপাদঃ তাই আমি বললাম অন্ধ। সে জানে না যে ভালটা কি। প্রকৃত ভাল হচ্ছে ভগবানকে জানা। সেটিই আসল ভাল।

রেমন্ড লোপেজঃ কিন্তু কিছু কিছু জিনিস আছে. যেগুলো আপনি... সেগুলো ভাল, সেগুলোকে ভাল বলেই আপনি গ্রহণ করতে পারেন যেমন এখন যদি আপনি একজন বৃদ্ধা মহিলাকে রাস্তায় গাড়িচাপা পড়তে দেখেন আপনি তাকে সাহায্য করতে পারেন এরকম কিছু আছে যা ভাল, আমি মনে করি। এবং লোকেরা তাতে এগিয়ে আসবে এবং ভাল কাজ করবে। এমনকি তাদের যদি ভগবান সম্পর্কে ধারণা নাও থাকে।

প্রভুপাদঃ না, যদি না আপনি সঠিক স্তরে আসছেন, আপনি কীভাবে ভাল করতে পারেন? যেমন আমাদের মধুদ্বিষ মহারাজ আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল, যে তাঁরা (আপনারা) আইনের ব্যাপআরে ভাল কিছু করেছেন কিন্তু আপনি যদি আইনজীবী না হন, তাহলে কীভাবে তা করবেন? আপনার ভাল কিছু করার একটা মন আছে। কিন্তু আপনি যদি আইনজীবী না হতেন, কীভাবে তা করতেন?

ওয়েলী স্ট্রোবস্‌ঃ কিন্তু অনেক আইনজীবী থাকবে...

প্রভুপাদঃ না সেটি অন্য কথা, আমি আপনার কথা বলছি... যদি কেউ নাই জানে ভাল কাকে বলে, তাহলে সে ভাল করবে কীভাবে? প্রথম কাজ হচ্ছে তাকে আগে জানতে হবে, ভালটা কি? তাহলে কেবল সে ভাল করতে পারবে নাহলে বাঁদরের মতো লাফালাফি করার কি অর্থ আছে? তাকে অবশ্যই জানতে হবে। যেহেতু আপনি আইনজীবী তাই আপনি আইনের সাথে চলতে জানেন, আপনি ভাল করতে জানেন। কিন্তু একজন সাধারণ লোক সে কীভাবে ভাল করতে পারে? তাই যে ব্যক্তিই এই সমাজের নেতা হয়ে ভাল করার ভূমিকা নিচ্ছে তাকে সবার প্রথমে জানতে হবে যে আসলে ভাল করা মানে কি।