BN/Prabhupada 0612 - যে কোন ব্যক্তি, যে জিহবাগ্রে হরিনাম জপ করছে, সেই-ই মহিমান্বিত



Lecture on SB 3.28.19 -- Nairobi, October 29, 1975

ষড় গোস্বামীগণ সর্বক্ষণ উচ্চৈঃস্বরে কীর্তন করতেন, কৃষ্ণোৎকীর্তন। ঠিক একই পন্থা আমরাও অনুসরণ করছি, উচ্চৈঃস্বরে সর্বদা কীর্তন করা, অর্চনে নিযুক্ত থাকা। কৃষ্ণভাবনামৃতের সম্ভাবনা সর্বদাই রয়েছে। সমস্ত সুবিধা রয়েছে। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, "কীর্তনীয় সদা হরিঃ (চৈ.চ আদি ১৭.৩১) তাহলেই প্রেক্ষণীয়, "তিনিই দর্শন করার যোগ্য" আমরা অনেক কিছু দেখতে অভ্যস্ত। সেটি আমাদের বন্ধন। অক্ষো ফলম্। এই চোখ দিয়ে যদি আপনি শ্রীবিগ্রহ দর্শন করেন, বৈষ্ণবদের দর্শন করেন... তিলক, কণ্ঠীমালা, জপমালা সহকারে যদি কোন বৈষ্ণব দর্শন হয়, তৎক্ষণাৎ... এবং বাস্তবেই আপনারা তা জানেন। যেই মুহূর্তে আপনারা এই হরেকৃষ্ণ আন্দোলনের লোকেদের দেখবেন, তাঁরাও আপনাকে বলবে, "হরে কৃষ্ণ", অন্যদেরকেও তা বলার সুযোগ দেবে। পোষাকেরও প্রয়োজন রয়েছে। আপনাকে অবশ্যই সবসময় তিলক, কণ্ঠীমালা, শিখা-সূত্র পরিহিত অবস্থায় থাকতে হবে। তাহলে একজন সাধারণ মানুষ দেখেই বলবে, এই যে একজন হরে কৃষ্ণ লোক যাচ্ছে, তখন সেও বলবে, 'হরে কৃষ্ণ'। স্বাভাবিকভাবেই আপনি অন্যদের 'হরে কৃষ্ণ' জপ করার সুযোগ করে দিচ্ছেন।

আর এটিই দরকার। মূর্খ বদমাশরা বলে, "এসবের কি দরকার আছে?" না, এটিই দরকার। তোমাকে অবশ্যই সবসময় একজন বৈষ্ণবের ন্যায় পোষাক পরিধান করে থাকতে হবে। এটিই প্রয়োজন। তাই 'প্রেক্ষণীয়' 'তাঁকে দেখতে অত্যন্ত সুন্দর লাগছে'। তা না হলে, অন্যরা কিভাবে মুগ্ধ হবে? তারা তৎক্ষণাৎ এতোই ধার্মিক হয়ে যায় যে তারা 'হরে কৃষ্ণ' উচ্চারণ করে। হরেকৃষ্ণ জপ করা এতো সহজ নয়। এখানে অনেক লোকেরা আসে, কিন্তু যখনই কীর্তন হয়, তারা গায় না কেন না এটি এতো সহজ নয়। যজ্-জিহবাগ্রে নাম তুভ্যং। শাস্ত্রে বলা হয়েছে, অহো বত শ্বপচতোহগরীয়ান্ যজ্-জিহবাগ্রে নাম তুভ্যম্। যে কোন ব্যক্তি যখন হরে কৃষ্ণ জপ বা কীর্তন করছে, জিহবাগ্রে, জিহবার দ্বারা, তিনি যদি এমন কি কুকুরভোজী চণ্ডাল পরিবারেও জন্মগ্রহণ করে, তবু তিনি মহিমান্বিত হন। তিনি মহিমান্বিত। যজ্-জিহবাগ্রে নাম তুভ্যম্। তাই আমরা এই সুযোগটি করে দিই। যেই মুহূর্তে তিনি হরেকৃষ্ণ উচ্চারণ করলেন, তৎক্ষণাৎ তিনি মহিমান্বিত হয়ে যান। তৎক্ষণাৎ মহিমান্বিত হন। অহো বত শ্বপচতোহগরীয়ান্ যজ্-জিহবাগ্রে... তেপুস তপস্তে (ভাগবত ৩.৩৩.৭) তার মানে তিনি তাঁর ইতিমধ্যেই পূর্বজন্মে অনেক যজ্ঞ সম্পাদন করেছেন। তাই তিনি হরে কৃষ্ণ কীর্তন করার যোগ্যতা লাভ করেছেন। তেপুস্তপস্তে জিহুবুঃ শশ্নুঃ আর্যা (ভাগবত ৩।৩৩।৭) তাঁরা প্রকৃত অর্থেই আর্য। আর্য মানে যে হরে কৃষ্ণ কীর্তন করে। তাই আমাদের উচিত সর্বক্ষণ হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ বা কীর্তন করার অভ্যাস করা। কীর্তনীয় সদা হরিঃ... শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এটি নির্দেশ করেছেন।

তৃণাদপি সুনীচেন
তরোরপি সহিষ্ণুনা,
অমানিনা মানদেন
কীর্তনীয় সদা হরিঃ
(চৈ.চ আদি ১৭.৩১)

হরিনাম, প্রত্যেকের এই হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র নিরন্তর জপের অভ্যাস করা উচিত। হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে, হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।। তাই প্রেক্ষণীয় ইহিতাম্ ধ্যায়েৎ। (SB 3.28.19) এটি হচ্ছে ধ্যান। ধ্যায়েৎ শুদ্ধভাবেন, শুদ্ধভাবেন, কৃত্রিমভাবে নয়। কিন্তু এমন কি আপনি যদি কৃত্রিমভাবেও করেন, কীর্তনের দ্বারা আপনি শুদ্ধ হয়ে উঠবেন। কৃত্রিমভাবেও যদি আমরা তা করি, সেটি শাস্ত্রে রয়েছে। তা সত্ত্বেও, হরিনাম কীর্তন এতোই শক্তিশালী যে এটি আপনাকে তৈরি করবে... কারণ এর অর্থ হল সরাসরিভাবে ভগবানের সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়া। ধ্যায়েৎ। সুতরাং যেই মুহূর্তে কীর্তন করছেন, তৎক্ষণাৎ ধ্যান হবে, শুদ্ধভাবেন চেতসা, চেতনার দ্বারা, মনের দ্বারা, বুদ্ধির দ্বারা। সুতরাং এটি হছে নির্দেশ।