BN/Prabhupada 0792 - কৃষ্ণ যদি সবার বন্ধু না হতেন, কেউই এক মুহূর্তও বাঁচতে পারতো না



Lecture on SB 1.2.17 -- Los Angeles, August 20, 1972

প্রদ্যুম্নঃ অনুবাদঃ পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যিনি সকলের হৃদয়ে পরমাত্মা রূপে বিরাজমান এবং তাঁর ভক্তদের সুহৃৎ তিনি তাঁর ভক্তের হৃদয়ের সকল জড় সুখ বাসনা বিধৌত করে দেন সেই সমস্ত ভক্তদের যাদের তাঁর কথা শ্রবণে রুচি লাভ হয়েছে। সেই কথা যথাযথভাবে শ্রবণ এবং কীর্তন অত্যন্ত মঙ্গলদায়ক।

প্রভুপাদঃ শ্রীকৃষ্ণ অত্যন্ত স্বার্থপর। এখানে বলা হচ্ছে, স্বকথা কৃষ্ণ। যে ব্যক্তিই কৃষ্ণ কথা শ্রবণে নিযুক্ত কথা মানে শব্দ। বার্তা ভগবদগীতাতেও ভগবান বলছেন, মামেকম্‌। "কেবল আমার কাছে"। একম্‌। সেটিই চাই। যদিও সবকিছুই শ্রীকৃষ্ণ। কিন্তু সর্বেশ্বরবাদীদের কথামতো আমরা সবকিছুকে পূজা করতে পারি না সবকিছুই শ্রীকৃষ্ণ। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমাদের সবকিছুকেই পূজা করতে হবে। আমাদের শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা করতে হবে মায়াবয়াদী দার্শনিকেরা বলে থাকে, "যদি সবকিছুই কৃষ্ণ হন, তাহলে আমি যাই পূজা করি না কেন, আমি কৃষ্ণ পূজাই করছি"। না, সেটি ভুল।

ঠিক যেমন সেই একই উদাহরণ দেহের ক্ষেত্রে - আমি এই দেহ , সবকিছুই "আমি" অথবা "আমার" কিন্তু যখন আহার দেয়া হয়, তখন তা মুখ দিয়ে দেয়া হয়, মলদ্বার দিয়ে নয় এটিই একমাত্র রাস্তা। তুমি বলতে পার না যে "এই দেহে নয়টি ছিদ্র আছে, দুটো চোখ, দুটো নাসিকা, দুটো কান, একটা মুখ, একটা মলদ্বার, একটা উপস্থ - এই নয়টি। তাহলে যে কোন একটি দিয়ে খাবার দিলেই তো হয়। না , সেটি মায়াবাদ তত্ত্ব। ওরা বলবে, "খাবারটা শরীরে দেয়া নিয়ে কথা, একভাবে গেলেই হল। তাই আমি যে কোন ছিদ্র দিয়েই দিতে পারি, অনেকগুলো ছিদ্র আছে।" কখনও কখনও চিকিৎসা বিজ্ঞানে যখন মুখ দিয়ে আহার প্রবেশ করানো অসম্ভব হয়ে যায় তখন মলদ্বার দিয়ে করানো হয় । সেটি কৃত্রিম। কিন্তু জরুরী অবস্থায় কখনও কখনও তা করা হয়। কিন্তু সেটি পন্থা হয়। আসল পন্থা হচ্ছে দেহে আহার দরকার আর তা মুখ দিয়ে দেয়া হয়, অন্য কোন ছিদ্র দিয়ে নয়।

ঠিক তদ্রূপ, যদি আমরা পরম সত্যের সাথে আমাদের সংস্পর্শ রাখতে চাই তাহলে আমাদের শ্রীকৃষ্ণের মাধ্যমে করতে হবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অনেক রূপ আছে অদ্বৈতম্‌ অচ্যুতম্‌ অনাদিম্‌ অনন্তরূপম্‌ (ব্রহ্মসংহিতা ৫/৩৩) অনন্তরূপম্‌ যেহেতু কৃষ্ণ ছাড়া কিছুই নেই, সবকিছুই তাঁর শক্তি তাই পন্থা হচ্ছে ...। পরম সত্যের সংস্পর্শ মানে কৃষ্ণ। তাই কৃষ্ণ বলছেন, কৃষ্ণ নয়, ব্যাসদেব বলছেন , সুত গোস্বামীর মাধ্যমে যে "শ্রীকৃষ্ণ অত্যন্ত কৃপালু, এবং সকলের সুহৃৎ সতাম্‌" সতাম্‌ মানে ভক্ত তিনি তাঁর ভক্তদের সঙ্গে অত্যন্ত গভীরভাবে যুক্ত ভগবানের আরেকটি গুণ হল তিনি ভক্তবৎসল এখানেও বলা হচ্ছে, সুহৃৎসতাম্‌। সতাম্‌ মানে ভক্ত তিনি সকলের বন্ধু। সুহৃদম্‌ সর্বভূতানাম্‌ (গীতা ৫/২৯) ভগবান যদি সকলের বন্ধু না হতেন কেউ এক মুহূর্তও বাঁচতে পারত না। শ্রীকৃষ্ণ সবাইকে রক্ষা করছেন, সবার আহার্য সরবরাহ করছেন